আপডেট :

        রিশাদের ব্যাটে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

        কণ্ঠশিল্পী খালিদ মারা গেছেন

        বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

        গুণী প্রধান শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান

        বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃ‌তিতে আইরিশ মন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

        ইসলামবিদ্বেষ ঠেকাতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

        বাংলাদেশ-বৃটেন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫১ বছর: বৃটিশ হাইকমিশনার

        ঢাকায় সুইডিশ রাজকন্যা

        ইরাকের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তা করবে আইএইএ

        বিস্ফোরক মামলায় যুবদল-ছাত্রদলের ৪ নেতা কারাগারে

        জিএসপি সুবিধার মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাড়াতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

        ট্রাম্প মানসিকভাবে অসুস্থ: জো বাইডেন

        জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬

        বিএনপি ইফতার পার্টিতে আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গীবত গায়: প্রধানমন্ত্রী

        মার্কিন গণতন্ত্রকে কটাক্ষ পুতিনের

        শাল্লায় বিল শুকিয়ে মৎস্য আহরণ

        দেশে যুক্তরাষ্ট্রের পাপেট সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত সব নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ: সজীব ওয়াজেদ জয়

        সিএনজি-লেগুনা’র দখলে রাস্তা

        তিন বিভাগে ৩ দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা

        এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম

শান্তি ও মানবাধিকারের অনন্য আশ্রয়ভূমি ফ্রান্স

শান্তি ও মানবাধিকারের অনন্য আশ্রয়ভূমি ফ্রান্স

প্যারিসের প্লাস দো লা রিপাবলিক স্কয়ারের প্রধান ভাস্কর্য হিসেবে মারিয়ানের যে মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে, তার এক হাতে শান্তির প্রতীক জলপাইয়ের শাখা, অন্য হাতে একটি বই। বইয়ের মলাটে লেখা ‘মানবাধিকার’। এর মাধ্যমে ফরাসি প্রজাতন্ত্র বিশ্বকে এই বার্তা দিয়ে আসছে যে তারা শান্তি ও মানবাধিকারে বিশ্বাসী।

কিন্তু এই শান্তি আর মানবাধিকার নিশ্চিতকরণের পদযাত্রাটি খুব সহজেই অর্জিত হয়নি।সার্বজনিন মানবাধিকার আর শান্তি নিশ্চিতকরনের পিছনে রয়েছে দীর্ঘতম আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই। যাকে অভিহিত করা হয় আলোকায়নের যুগ নামে। আর এটি হলো সপ্তদশ শতাব্দীর ইউরোপের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন, যার প্রধান উপজীব্য বিষয় ছিল ব্যক্তিস্বকীয়তা, মানব স্বাধীনতা, যুক্তিবাদের প্রতিষ্ঠা ও মানব ঐতিহ্য। এই বিপ্লবের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান ও সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান বিকশিত করে প্রথাগত বিশ্বাস ও কুসংস্কারের শাসন থেকে মানুষকে মুক্ত করে সমাজকে মানবিকতার পথে পরিচালিত করা। এই আন্দোলন মানুষকে বিজ্ঞান চিন্তা, সংশয়বাদ ও বুদ্ধিবৃত্তিক দর্শনের চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে। এই আন্দোলনের পূর্বে সমাজে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হত সমাজের ধনিক শ্রেণি ও প্রতিষ্ঠিত ধর্মের প্রদর্শিত সংস্কৃতি ও অভিপ্রায় অনুযায়ী। তবে মানব ইতিহাসের সর্বপ্রথম সংঘটিত এই দার্শনিক বিপ্লব মানুষের সমাজব্যবস্থার জন্য কিছু মূলনীতির জন্ম দেয় যেগুলো হলো কোন বিষয় সম্পর্কে উপসংহারে আসার জন্য সঠিক যুক্তি ব্যবহার করা, যুক্তিগুলো প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিয়ে ঝালিয়ে নেওয়া এবং পুনরায় প্রমাণের আলোকে মূলনীতিগুলো পর্যালোচনা করা।

আলোকিত দার্শনিকরা সমাজের অসহিষ্ণুতা ও কুসংস্কারের বিপক্ষে ছিলেন। তৎকালীন যুগে কিছু স্বৈরশাসক আলোকিত যুগের দর্শন, শিক্ষা ও সমাজব্যবস্থার সমন্বয়ে আলোকিত শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিল যার ফলশ্রুতিতে আলোকিত যুগের মূলনীতিগুলো সমাজে ও সরকার ব্যবস্থায় জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। বলা বাহুল্য শত প্রচেষ্টার পরেও আলোকিত দর্শন নিয়ে এ ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা সফলতার মুখ দেখে নি। তবে এ ধরনের পদক্ষেপগুলো পরবর্তিতে সমাজে পরিবর্তন আনতে সহায়তা করেছে। আলোকিত যুগের চিন্তাগুলো পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞান, সভ্যতা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

আলোকিত যুগের দর্শনের মতে রাজতন্ত্র এবং ক্যাথলিক চার্চের কর্তৃত্ব লোপ পায়, এবং প্রথা বা ঐতিহ্যের পরিবর্তনে যুক্তির উপর ভিত্তি করে একটি নতুন সমাজব্যবস্তার সৃষ্টি হয়।

বাস্তিলের পতনের মধ্যদিয়ে সংগঠিত হয় ফরাসী বিপ্লব। পৃথবীর মানচিত্রে ফ্রান্সই সর্বপ্রথম  নিজেকে পূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। যা বদলে দেয় পুরো ইউরোপের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যাবস্তাকে। এই বিপ্লবের হাওয়া লাগে সারা বিশ্বব্যাপি।

পৃথীবির বিভিন্ন প্রান্তে যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘঠনা সংঘটিত হচ্চে তার বিপক্ষে সোচ্চার ভুমিকা অব্যাহত রেখেছে মানবতার মহান দেশ ফ্রান্স। ইঙ্ঘ মার্কিন বাহিনী কর্তৃক  ইরাকে আক্রমে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে গুরুত্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ফ্রন্স। আর তাই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তরে মুক্তমনা আর বাকস্বাধীনতার জন্যে যারাই সংগ্রাম করে, তাদের পক্ষে অবস্তান এবং আশ্রয় দিয়ে বিড়ল দৃষ্টান্ত স্তাপন করেছে দেশটি।আর তাই ১৯৪৮ সালের ১০ দিসেম্বর Universal Declaration of Human Rights (UDHR) ঘোষণাপত্রটি ফ্রান্সের রাজধানী ‘প্যারিসে স্বাক্ষরিত হওয়াটাও বেশ যথার্থই বলে মনে হয়।


লেখক : সাংবাদিক।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত