আপডেট :

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

        বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ বুধবার রাজধানী ঢাকা শীর্ষ ১০ এর বাইরে

        লোহিত সাগরের জিবুতি উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবি

        থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রাজধানী ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

        গোলাপি চাঁদের দেখা মিলবে রাতে

        ২ হাজার ডলার দাম কমলো টেসলা গাড়ির

        যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

শান্তি ও মানবাধিকারের অনন্য আশ্রয়ভূমি ফ্রান্স

শান্তি ও মানবাধিকারের অনন্য আশ্রয়ভূমি ফ্রান্স

প্যারিসের প্লাস দো লা রিপাবলিক স্কয়ারের প্রধান ভাস্কর্য হিসেবে মারিয়ানের যে মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে, তার এক হাতে শান্তির প্রতীক জলপাইয়ের শাখা, অন্য হাতে একটি বই। বইয়ের মলাটে লেখা ‘মানবাধিকার’। এর মাধ্যমে ফরাসি প্রজাতন্ত্র বিশ্বকে এই বার্তা দিয়ে আসছে যে তারা শান্তি ও মানবাধিকারে বিশ্বাসী।

কিন্তু এই শান্তি আর মানবাধিকার নিশ্চিতকরণের পদযাত্রাটি খুব সহজেই অর্জিত হয়নি।সার্বজনিন মানবাধিকার আর শান্তি নিশ্চিতকরনের পিছনে রয়েছে দীর্ঘতম আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই। যাকে অভিহিত করা হয় আলোকায়নের যুগ নামে। আর এটি হলো সপ্তদশ শতাব্দীর ইউরোপের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন, যার প্রধান উপজীব্য বিষয় ছিল ব্যক্তিস্বকীয়তা, মানব স্বাধীনতা, যুক্তিবাদের প্রতিষ্ঠা ও মানব ঐতিহ্য। এই বিপ্লবের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান ও সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান বিকশিত করে প্রথাগত বিশ্বাস ও কুসংস্কারের শাসন থেকে মানুষকে মুক্ত করে সমাজকে মানবিকতার পথে পরিচালিত করা। এই আন্দোলন মানুষকে বিজ্ঞান চিন্তা, সংশয়বাদ ও বুদ্ধিবৃত্তিক দর্শনের চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে। এই আন্দোলনের পূর্বে সমাজে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হত সমাজের ধনিক শ্রেণি ও প্রতিষ্ঠিত ধর্মের প্রদর্শিত সংস্কৃতি ও অভিপ্রায় অনুযায়ী। তবে মানব ইতিহাসের সর্বপ্রথম সংঘটিত এই দার্শনিক বিপ্লব মানুষের সমাজব্যবস্থার জন্য কিছু মূলনীতির জন্ম দেয় যেগুলো হলো কোন বিষয় সম্পর্কে উপসংহারে আসার জন্য সঠিক যুক্তি ব্যবহার করা, যুক্তিগুলো প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিয়ে ঝালিয়ে নেওয়া এবং পুনরায় প্রমাণের আলোকে মূলনীতিগুলো পর্যালোচনা করা।

আলোকিত দার্শনিকরা সমাজের অসহিষ্ণুতা ও কুসংস্কারের বিপক্ষে ছিলেন। তৎকালীন যুগে কিছু স্বৈরশাসক আলোকিত যুগের দর্শন, শিক্ষা ও সমাজব্যবস্থার সমন্বয়ে আলোকিত শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিল যার ফলশ্রুতিতে আলোকিত যুগের মূলনীতিগুলো সমাজে ও সরকার ব্যবস্থায় জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। বলা বাহুল্য শত প্রচেষ্টার পরেও আলোকিত দর্শন নিয়ে এ ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা সফলতার মুখ দেখে নি। তবে এ ধরনের পদক্ষেপগুলো পরবর্তিতে সমাজে পরিবর্তন আনতে সহায়তা করেছে। আলোকিত যুগের চিন্তাগুলো পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞান, সভ্যতা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

আলোকিত যুগের দর্শনের মতে রাজতন্ত্র এবং ক্যাথলিক চার্চের কর্তৃত্ব লোপ পায়, এবং প্রথা বা ঐতিহ্যের পরিবর্তনে যুক্তির উপর ভিত্তি করে একটি নতুন সমাজব্যবস্তার সৃষ্টি হয়।

বাস্তিলের পতনের মধ্যদিয়ে সংগঠিত হয় ফরাসী বিপ্লব। পৃথবীর মানচিত্রে ফ্রান্সই সর্বপ্রথম  নিজেকে পূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। যা বদলে দেয় পুরো ইউরোপের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যাবস্তাকে। এই বিপ্লবের হাওয়া লাগে সারা বিশ্বব্যাপি।

পৃথীবির বিভিন্ন প্রান্তে যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘঠনা সংঘটিত হচ্চে তার বিপক্ষে সোচ্চার ভুমিকা অব্যাহত রেখেছে মানবতার মহান দেশ ফ্রান্স। ইঙ্ঘ মার্কিন বাহিনী কর্তৃক  ইরাকে আক্রমে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে গুরুত্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ফ্রন্স। আর তাই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তরে মুক্তমনা আর বাকস্বাধীনতার জন্যে যারাই সংগ্রাম করে, তাদের পক্ষে অবস্তান এবং আশ্রয় দিয়ে বিড়ল দৃষ্টান্ত স্তাপন করেছে দেশটি।আর তাই ১৯৪৮ সালের ১০ দিসেম্বর Universal Declaration of Human Rights (UDHR) ঘোষণাপত্রটি ফ্রান্সের রাজধানী ‘প্যারিসে স্বাক্ষরিত হওয়াটাও বেশ যথার্থই বলে মনে হয়।


লেখক : সাংবাদিক।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত