আপডেট :

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল

        মানবাধিকারের উল্লেখযোগ্য উন্নতি

        প্রচণ্ড এই গরম থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন জায়গায় নামাজ পড়ে দোয়া

        যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার

        এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো

        মার্কিন বিমান আটকে দিলো ‘যুদ্ধবিরোধী’ কুমির!

        চিতাবাঘের আক্রমণে আহত জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার হুইটাল

        যুক্তরাষ্ট্রে গরুর দুধেও বার্ড ফ্লু শনাক্ত

        পবিত্র হজ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

        গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

        পার্লামেন্টে জুতা চুরি, খালি পায়ে ঘরে ফিরলেন পাকিস্তানের এমপিরা

        অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

        কুড়িগ্রামে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু

        চীন সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

        দেশে একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম আরও কিছুটা কমানো হয়েছে

        ২৮ এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি চলছে

        ইউক্রেনে গোপনে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

        আবহাওয়া বিবেচনায় খোলা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

        ‘ব্ল্যাক’ ফিরে যাচ্ছে পুরনো লাইনআপে!

        অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি কামনায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ

আমেরিকানরা কি মুক্তবাণিজ্য থেকে বেরিয়ে আসতে চায়

আমেরিকানরা কি মুক্তবাণিজ্য থেকে বেরিয়ে আসতে চায়

২০১১ সালে আমেরিকার কান্ট্রি সিঙ্গার রনি ডানের ‘ কস্ট অব লিভিন’ গানটির মধ্য দিয়ে সে সময়ের চাকরি সন্ধানী মানুষের হতাশার সুর ধ্বনিত হয়েছিল। গানের দুটো কলি ছিল : ‘ ব্যাংক হ্যাজ স্টাটের্ড কলিং / এ্যান্ড দি উলভস আর এ্যাট মাই ডোর।’ আমেরিকার শিল্পকেন্দ্রগুলোর সর্বত্র একই রকম সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। কারণ ওই সময়টা ছিল শ্রমিক ও চাকরিজীবীদের জন্য দুঃসময়। ১৯৯৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রায় ৬০ লাখ কারখানা শ্রমিক কর্মচারী চাকরি হারিয়েছিল।
উপরে বর্ণিত ওই সংখ্যাটা এমনিতে এমন বিশাল কিছু নয়। কারণ আমেরিকার ডায়নামিক অর্থনীতিতে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লাখ লোক চাকরি হারায় এবং নতুন চাকরিও সৃষ্টি হয়। তবে সাম্প্রতিক কিছু সমীক্ষায় উদ্বেগজনক চিত্রও পাওয়া গেছে। ১৯৯৯ - ২০১১ সালে কলকারখানায় যত ছাঁটাই হয়েছিল তার এক পঞ্চমাংশের জন্য দায়ী ছিল চীনের প্রতিযোগিতা। যারা চাকরি হারিয়েছিল সাধারণত তারা কাছাকাছি কোথাও নতুন চাকরি পায়নি। আবার তারা অন্য কোথাও চাকরির সন্ধানে যায়নি। আমেরিকায় এখন ২৪ থেকে ৬৪ বছর বয়সী ৫ শতাংশ লোক প্রায়শই অক্ষমতা সুবিধা ভোগ করে থাকে। সোজা কথায় সে দেশের চাকরি বা বেকারত্ব পরিস্থিতি ভাল নয় বরং নৈরাশ্যজনক।
সমীক্ষার ওই উদ্বেগজনক চিত্রের কারণে মার্কিন বাণিজ্যের বিষয়টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একটা স্পর্শকাতর ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। রিপাবলিক মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে যিনি এ পর্যন্ত শীর্ষস্থানে আছেন সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছেন যে , নির্বাচিত হলে তিনি চীন ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানির উপর নিবর্তনমূলক শুল্ক বসাবেন। ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে হিলারির প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্সও বাণিজ্য প্রশ্নে কঠোর বক্তব্য রেখেছেন। ওদিকে প্রেসিডেন্ট ওবামা ট্রান্স প্যাসিফিক পাটনারশিপ (টিপিপি) নামে যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তার প্রতি পূর্ব ঘোষিত সমর্থন থেকে সরে এসেছেন হিলারি ক্লিনটন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কয়েক দশক যাবত আমেরিকা ও অন্যত্র মুক্তবাণিজ্য ছিল সমৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি। এখন মূলধারার রাজনীতিকরা মুক্তবাণিজ্যের সমর্থনে দাঁড়াতে শুধু শঙ্কিত বোধই করছেন না , এর বিরুদ্ধে তারা ঘৃতাহুতিও দিচ্ছেন।
মুক্তবাণিজ্যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠের লাভ হলেও কিছু অংশের ক্ষতিও হয়। আমেরিকা এখন সেই ক্ষতির দলে পড়ে গেছে। সেই ক্ষতিটা যা ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়েও বেশি ঘনীভূত ও দীর্ঘস্থায়ী। এর এক মস্ত কারণ চীনের উত্থান। বিশ্বে কারখানাজাত পণ্যের রফতানিতে চীনের ভাগ ১৯৯১ সালে ছিল ২ শতাংশ। ২০১৩ সালে তা ১৯ শতাংশে দাঁড়ায়। এতে মার্কিন অর্থনীতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকে আমেরিকায় সেসব শিল্প গুটিয়ে নেয়। অনেক কারখানায় খরচ কমাতে লোক ছাঁটাই হয়। এতে বেকারত্ব বাড়ে।
এমন আশঙ্কা মোকাবেলায় সবচেয়ে খারাপ যে পদক্ষেপটা হতে পারে তা হলো সংরক্ষণবাদী নীতি যার পক্ষে ফেরি করে বেড়াচ্ছেন ট্রাম্প। চীনের উৎপাদিত পোশাক , জুতা , আসবাব, খেলনা ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী দামে বেশ সস্তা। আমেরিকায় এগুলোর আমদানি যথেষ্ট পরিমাণে বেড়ে গেছে। তেমনি বেড়েছে নিম্ন আয়ের লোকদের এগুলোর ক্রয় ক্ষমতা। তারা কিনতে পারে এমন পণ্যসামগ্রীর বৈচিত্র্যও গেছে বেড়ে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মার্কিন শিল্প। তাই দাবি উঠেছে এসব পণ্যের আমদানি বন্ধের। কিন্তু এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এসব আমদানি বন্ধ করলে আমেরিকার মধ্যম আয়ের লোকদের ক্রয়ক্ষমতা ২৯ শতাংশ হ্রাস পাবে। আর সবচেয়ে দরিদ্ররা ক্রয়ক্ষমতা হারাবে ৬২ শতাংশ। কারণ এরা আমদানি পণ্যের পেছনে আনুপাতিক হারে বেশি অর্থ ব্যয় করে।
কিন্তু বিদেশী পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতার কারণে যেসব মার্কিন শ্রমিক বেকার হয়ে যাচ্ছে তাদের স্বার্থরক্ষার কি ব্যবস্থা আছে ? বাণিজ্য - সমন্বয় সহায়তা নামে এক ফেডারেল কর্মসূচী আছে যার সুবিধা নিয়ে অনেক মার্কিন শ্রমিক চাকরির বাজার থেকে একেবারেই চলে যায়। কিন্তু সেটা তো আর সমস্যার সমাধান নয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক দর্শনের মূল বৈশিষ্ট্য হলো সংরক্ষণবাদ , আমদানি সীমিত করার জন্য তিনি নানান পদক্ষেপের কথা বলেছেন যার মধ্যে রয়েছে সব ধরনের আমদানি পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ কর বসিয়ে দেয়া। জনমত সমীক্ষায় দেখা যায় ট্রাম্পের প্রস্তাব আমেরিকানদের প্রভাবিত করেছে। ১৭ মার্চ ইউগভ পোলের জরিপে দেখা যায় ৪৮ শতাংশ আমেরিকান আমদানি কর বৃদ্ধির সমর্থক। ২৪ মার্চ ব্লুমবার্গ পোলের সমীক্ষায় জানা গেছে চাকরি রক্ষার জন্য দুই - তৃতীয়াংশ আমেরিকান আমদানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপের পক্ষপাতি।
সূত্র : ইকোনমিস্ট।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত