আপডেট :

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ বুধবার রাজধানী ঢাকা শীর্ষ ১০ এর বাইরে

        লোহিত সাগরের জিবুতি উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবি

        থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রাজধানী ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

        গোলাপি চাঁদের দেখা মিলবে রাতে

        ২ হাজার ডলার দাম কমলো টেসলা গাড়ির

        যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

        মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী দুই দেশ—ইরান ও ইসরায়েলকে নিয়ে মহাবিপত্তিতে আছে জর্ডান

        বিনা ভোটে জিতে বললেন, ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়েছি’

        বিনা ভোটে জিতে বললেন, ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়েছি’

        অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসার সুদ বা মুনাফার ওপর থেকে কর প্রত্যাহার

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার

ছবিঃ দারুস সালাম শাকিল।

 দারুস সালাম শাকিল

১৭৫৭ সালে যখন পলাশীর আম্রকাননে আমাদের স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত যায়। সেই স্বাধীনতার পর থেকে আমরা পরাধীন। তারপরে তিতুমীর, হাজী শরিয়তুল্লা, সূর্যসেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার বিভিন্ন সময়ে আমাদের দেশের স্বাধীনতাকামীরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে। কিন্তু তাদের এই আন্দোলনগুলো অনেকটা সফলতার মুখ দেখে নি।ফলে, তাদের চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও আমরা স্বাধীনতা পাই নি। পরবর্তীতে হোসেন শহীদ সরোয়ারদী ও আরও কিছু লোকজনের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবিভক্ত বাংলা দাবি করে।
পাকিস্তান আলাদা হবে, ভারত আলাদা ও দুই বাংলা একসাথে থাকবে।  সেই আন্দোলন ভেস্তে যাওয়ার পরে। সেই আন্দোলন ফলপ্রসূ হচ্ছিল না। তারপরে আবার পাকিস্তান রাষ্ট্রের পক্ষে আন্দোলন শুরু করে। তখন বঙ্গবন্ধু কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে পড়াশোনা করে। ১৯৩৯ সালে জিন্নার দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত পাকিস্তান বিভক্ত হলে বঙ্গবন্ধু দেখলেন যেই লাউ, সেই কদু। ১৯৪৮ বঙ্গবন্ধুকে ইসলামিয়া কলেজের হোস্টেলে তার ভগ্নিপতি দেখতে যাওয়ার সময় তিনি বলেন। যেই আশা করে আমরা পাকিস্তান করলাম, দেশকে স্বাধীন করলাম। সেই আশা মিথ্যা। আমরা শিয়ালের কাছ থেকে নেকড়ের কাছে এসে পরলাম। পাকিস্তান দিয়ে আমাদের দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব না। ইংরেজদের আমলে আমাদের উপর যেই দুঃশাসন ছিল, পাকিস্তানী আমলে তা কোনভাবেই কমে নি।
১৯৪৮ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে উর্দুকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা করার ঘোষণা দেন। তারা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির উপরও আঘাত করে। অথচ, দুই পাকিস্তান মিলিয়ে ৬০ শতাংশ মানুষ তখন বাংলা ভাষায় কথা বলত। সত্যিকারে পাকিস্তান জন্মের মাধ্যমে দেশ ভাগ হয়েছিল। কিন্তু আমাদের মুক্তি আসে নি। তাই আমার কাছে স্বাধীনতার অর্থ হলো আমরা শোষণ ও বঞ্ছনা থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমরা একটি সার্বভৌম দেশ পেয়েছি।
কেননা পাকিস্তানী আমলে অর্থনৈতিক শোষণ তো ছিলই সেই সাথে সরকারি চাকরিতেও বাঙালিদের নিয়োগের হার ছিল যৎসামান্য। তখনকার বাংলাদেশে ধনী বা কোটিপতি বাঙ্গালির সংখ্যা ছিল না বললেই চলে। যেই কয়েকজন ছিল তারাও বলতে গেলে ছিল পাকিস্তানের দালাল। এমনকি তখনকার পাকিস্তান ক্রিকেট টিমেও বাঙালিদের রাখা হত না। যা ও দুই একজনকে রাখা হত তাদের খেলায় সুযোগ দেওয়া হত না। তাছাড়া, বাঙালি কোন সামরিক কর্মকর্তাকে মেজরের উপর পদোন্নতি দেওয়া হত না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে আমাদের স্বাধীনতা আসে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার। বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে বাংলাদেশকে দাড় করাবার। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু সত্যি করে বলতে গেলে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৬ বছর পরও আমাদের স্বাধীনতা প্রত্যাশা পূরণ হয় নি। এর কারণও আছে কিছু। 
১৯৪৭-১৯৭১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছরের বেশিরভাগ সময় জুড়েই পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সামরিক বাহিনীর প্রভাব ছিল। যার ধারাবাহিকতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পরও থেকে গিয়েছিল ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। ১৯৭৫ সালের পর থেকে বলতে গেলে জিয়াউর রহমান ও এরশাদ ই সামরিক শাসক হিসেবে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতা দখল করে রাখে। এরপরের কয়েকটি বছর বাংলাদেশকে কাটাতে হল বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা নিয়ে।
তাই বলা যায় এক ধরণের ডিক্টেটরশিপ, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে আমাদের স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বা প্রত্যাশা পূরণ হয় নি। তবে ১৯৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত মাত্র চার বছরে বাংলাদেশে অনেক কিছু পেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। বৈদেশিক সম্পর্কের উন্নয়ন, ওআইসি ও ইউএনও’র সদস্য পদ লাভ করা থেকে শুরু করে দ্রুততম সময়ে সংবিধান প্রণয়ন। এমনকি গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় একটি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে নির্বাচনও দিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর ৪ বছরের শাসনামল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সোনালি অর্জন।
আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি আজ যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন। তাহলে বাংলাদেশের সমসাময়িক সময়ে স্বাধীনতা লাভ করা দেশগুলোর চেয়ে ভাল থাকত বাংলাদেশের অবস্থান। বঙ্গবন্ধুই জাগিয়ে তুলেছিলেন শিশু বাংলাদেশকে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পর অনেকটা সময় কেটে যায় জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সামরিক শাসনের মাধ্যমে। আবার ১৯৯১ থেকে শুরু হয় খালেদা জিয়ার লুটতরাজের রাজনীতি। সত্যিকার অর্থে তাদের কেওই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ধারণ করতে পারে নি। তাই, বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রত্যাশা সেইভাবে পূরণ হয় নি।
কিন্তু আশার কথা হল সাম্প্রতিক সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রত্যাশা পূরণে সমর্থ হচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। ২০১৬ সালে ইউনেস্কো বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে স্থান দিয়েছে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায়। দেশে এখন মেগা প্রকল্পগুলোর যাত্রা শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের কাজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে দেশ ও বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশের ঝুলিতে যুক্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক পুরস্কার। সারা বিশ্বের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে। ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলাধুলায়ও বাংলাদেশের অবস্থান এখন অন্য উচ্চতায়।
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সবাই যে স্বাধীনতার পক্ষে ছিল বা আছে ব্যাপারটা কিন্তু এই রকম না। আগে ইংরেজ, বর্গী, পাকিস্তানী ইত্যাদি ছিল। এখন কিন্তু সেটা না। তবুও এখনো অনেকে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করুক তা চায় না। এখনো পাকিস্তানী দালাল দোসররা বাংলাদেশের অগ্রগতিকে দমিয়ে রাখতে চায়, এবং তারা এ জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নতিকে ব্যাহত করতে জ্বালাও পোড়াও, হরতাল দিয়ে এখনো একটা শক্তি কাজ করে যাচ্ছে।বর্তমান সরকারের অগ্রগতি যদি অব্যাহত থাকে তবে অচিরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রত্যাশা পূর্ণ হবে। তাই স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর আমার প্রত্যাশা হল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। যেই বাংলাদেশ নিয়ে আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব। 
       
লেখকঃ সাংগঠনিক সম্পাদক,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।   

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত