আপডেট :

        ক্যাসিনোকাণ্ডের প্রধানের মনোনয়নপত্র বাতিল

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন

        যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিপরিষদে টিকটক নিষিদ্ধের বিল পাস

        ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, পুলিশের ধরপাকড়

        দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত চালাচ্ছে

        রুমা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ কেএনএফের আরও ৭ সহযোগী গ্রেপ্তার হলেন

        স্বর্ণের দাম কমলো

        ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প এবং সেটি দেখতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষন

        হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যা করনীয়ঃ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

        অপহরণ ও নির্যাতনের শিকারদেলোয়ারকে সিংড়ার চেয়ারম্যান ঘোষণা

        আওয়ামী লীগের সমাবেশ স্থগিত করা হলো

        বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি; যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা

        বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি; যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা

        বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি; যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা

        আমিরাতের বন্দরে ভিড়ল এমভি আবদুল্লাহ

        আমিরাতের বন্দরে ভিড়ল এমভি আবদুল্লাহ

        মালয়েশিয়ায় মহড়া চলাকালীন হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত

        প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির

        ইরানে ব্যাপক হামলা করতে চেয়েছিল ইসরায়েল

        ঢাকার ফুটপাত দখল ও বিক্রি বন্ধে পদক্ষেপের অগ্রগতির নির্দেশ

আমেরিকা থেকে এ্যাথলেটে বাংলাদেশি তরুণী

আমেরিকা থেকে এ্যাথলেটে বাংলাদেশি তরুণী

বাংলাদেশে এ্যাথলেটিকস এমন একটি খেলা যার মান বছরের পর বছর ধরে ক্রমান্বয়ে শুধু নেমেছে।  কথাটা নির্মম শোনালেও প্রায় দুই যুগ ক্রীড়া সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতার আলোকে এটা আমার ব্যাক্তিগত মুল্যায়ন। যে বাংলাদেশের এ্যাথলেটরা এক সময় অলিম্পিকে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখতো, তাদের এখন প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য বাড়ীর পাশে পশ্চিমবঙ্গের এ্যাথলেটদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে ইন্দো বাংলা বাংলাদেশ গেমসে পদক জেতা। বলাবাহুল্য সেখানেও তারা পিছিয়ে একটি রাজ্য দলের কাছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত সাফ গেমসে একসময় দ্রুততম মানব হত শাহআলম-বিমল চন্দ্র তরফদাররা, সেখানে এখানে এই ইভেন্ট থেকে খালি হাতে ফেরে বাংলাদেশ। কর্মকর্তাদের অর্থ কেলেংকারি, নারী কেলেংকারি, এ্যাথলেটদের মানের অবনমন, স্পন্সর ও মিডিয়ার অবহেলা- এসবই এতদিন পত্রিকার শিরোনাম হত এ্যাথলেটিকসকে ঘিরে। হতাশার এই মিছিলে বেশ চটকদার এক ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ এ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক। বাংলাদেশী বংশোৎভূত আমেরিকান এ্যাথলেটদের খেলার সুযোগ দেয়া হবে লাল-সবুজ পতাকার পদতলে। খোদ নিউইয়র্কে বসেই এমন ঘোষণা ফেডারেশনের নতুন সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টুর।

ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে একটি নাম। সে হল- আলিদা সিকদার। বয়স উনিশ বছর। বাবা মোমেন সিকদার পুরো পরিবার নিয়ে লসএ্যাঞ্জেলসের সান্তিয়াগোতে থাকেন বহু বছর। আলিদার মায়ের নাম নাসরিন আহমেদ। ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যালিফোর্নিয়ায় লং জাম্প ও হাইজাম্পে চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় হলেন আলিদা।

মাস খানেক আগে আলোচ্য খেলোয়াড় ও তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য লসএ্যাঞ্জেলসে গিয়েছিলেন আব্দুর রকিব মন্টু। তারা সম্মতি দিয়েছে ১৩ মে থেকে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে শুরু হওয়া ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশের এ্যাথলেটিকস দলের হয়ে খেলবেন আলিদা। রবিবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব নর্থ আমেরিকা আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় এই তথ্য দেন বাংলাদেশ এ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক। তিনি আরো জানান, শুধু আলিদা নন, এভাবে ভালো খেলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরো এ্যাথলেট নেবার ইচ্ছা আছে তাঁর।

আব্দুর রকিব মিন্টু আমেরিকান গ্রিনকার্ডধারী। ওনার বাবা, বড় ভাই ও বোনেরা সবাই খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে পরিবারের বেশীরভাগ সদস্য নিউইয়র্কে থাকেন। আব্দুর রকিব ঢাকা ও নিউইয়র্ক আসা যাওয়ার মধ্যে থাকেন বলে জানালেন। বর্তমানে উনি বাংলাদেশে সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করছেন। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ এ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের এডহক কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তির পরে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছেন, পিছিয়ে পড়া এ্যাথলেটিকসকে নতুন করে সাজানোর। উপজেলা, জেলা, বিভাগ পর্যায় থেকে শুরু করে এ্যাথলেটিকসের একটি অবকাঠামো নির্মাণ, আন্ত:স্কুল প্রতিযোগিতা, খেলোয়াড় উন্নত প্রশিক্ষণ, প্রকৃত কোচদের মূল্যায়ন, বর্ষপঞ্জী তৈরীসহ ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডের গৌরবোজ্জ্বল অতীত ফিরিয়ে আনার আকাঙ্খা আব্দুর রকিব মন্টুর।

তবে সময়ই বলে দেবে নতুন সাধারণ সম্পাদকের কথা ও কাজের মিল কতখানি? আসন্ন ইসলামিক সলিডারিটি গেমস হতে যাচ্ছে তাঁর নেতৃত্বে ফেডারেশনের নতুন চ্যালেঞ্জ! এই গেমসে খেলছে আলিদা। এভাবে আরো খেলোয়াড়দের সুযোগ দেবার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু যে আমেরিকায় এসে এ্যাথলেটরা গেমস ভিলেজ থেকে পালিয়ে যায়, সেই দেশ থেকে যাবে বাংলাদেশে খেলতে? প্রশ্নবিদ্ধ হবে নাতো তাদের দেশপ্রেম? এই প্রশ্ন উপস্থিত অনেকের মুখে।

শুনলে অবাক লাগে যে বাংলাদেশের চারজন দ্রুততম মানব এই নিউইয়র্কে থাকেন। চারজনের মধ্যে সাইদুর রহমান ডন ও শাহানউদ্দিন ব্যাক্তিগত ব্যস্ততার কারনে স্পোর্টস কাউন্সিলের সর্বশেষ এই অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। তবে ছিলেন দুইজন, তারা হলেন-শাহজালাল মোবিন ও বিমল চন্দ্র তরফদার।

শাহজালাল মোবিন বর্তমানে এক হাইস্কুলের ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডের কোচ। ব্রংকসের রিভারডেইলে ফিল্ডস্টোন স্কুলে এই দায়িত্বে আছেন তিনি। ১৯৮৫, ৮৬ ও ৯০ সালে বাংলাদেশের দ্রুততম মানব মোবিন বলেন, আমেরিকায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা খেলোয়াড়দের সুযোগ দেবার বিষয়টি আমি স্বাগত জানাই। এখানকার কোচিং অনেক উন্নত। কারন প্রতিদ্বন্দ্বীতা অনেক বেশী। সেই তুলনায় সাফ কিংবা এশিয়ান পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা কম হওয়াতে, সেখানে আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশী এ্যাথলেটদের ভালো করার সুযোগ অনেক বেশী।’

শাহজালাল মোবিনের দুই ছেলেও এ্যাথলেট। ‘মবিন ভাইয়ের ছেলেরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারে!’ এই অভিমত বিমলের। বিমল চন্দ্র তরফদার। সে অনেকদিন আগের কথা। বিকেএসপির এক অসম্ভব প্রতিভাবান এ্যাথলেটের পায়ের মাংসপেশী দেখে একসময় সবাই তার মাঝে কার্ল লুইসের ছায়া খুঁজে পেতো। বহুদিন আগে  প্রচন্ড আক্ষেপ নিয়ে সেই কথা বলেছিলেন  বিকেএসপির তৎকালীন পরিচালক ফারুকুল ইসলাম। কিন্তু, বাস্তবে কার্ল লুইসের দেশে এসে বিমল হয়ে গেলেন ফেরারী।

১৯৯৬ সালে আটলান্টা অলিম্পিক গেমসে খেলতে এসে মূল কন্টিনজেন্টের সঙ্গে আর দেশে ফিরে যাননি বিমল। থেকে গেছেন এখানে। সম্মানের জীবন ছেড়ে বেছে নিলেন অজ্ঞাতবাস। ওই ঘটনার ২১ বছর পরে কোন খেদ নেই বিমলের। বলেন, ‘দ্রুততম মানব হিসেবে আমার রেকর্ড এখনও ভাঙ্গতে পারেনি কেউ। ১৯৯৩ সালে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব হয়েছি। কিন্তু তাতে কি হয়েছে? কোন আর্থিক প্রাপ্তি মেলেনি। পরিবারের কাছে হাত পেতে চলতে হয়েছে। কোন আর্থিক নিশ্চয়তা ছিল না। কিসের টানে তবে পড়ে থাকবো দেশে? যে কারনে মনে হয় না আটলান্টা অলিম্পিক গেমস থেকে এখানে থেকে গিয়ে কোন ভুল করেছি!’


এলএবাংলাটাইমস/সি/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত