আপডেট :

        ভারতের গ্যাংস্টার রাজনীতিবিদ মুখতারের মৃত্যু

        প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আলোচনা ও ইফতার

        ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

        রাফাহ অভিযানের প্রস্তুতি ইসরায়েলিদের

        চারুপাঠের চিত্রাঙ্কন কর্মশালা অনুষ্ঠিত

        চীনা উদ্যোক্তাদের বস্ত্র-পাট খাতে বিনিয়োগের আহ্বান পাটমন্ত্রীর

        এফটিএক্স প্রতিষ্ঠাতার ২৫ বছরের কারাদণ্ড

        পুলিশের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

        বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা চান ওবায়দুল কাদের

        ওসমানীনগরে বদর দিবস পালিত

        বাংলাদেশের কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান

        ট্রেনের টিকেটসহ কালোবাজারি গ্রেপ্তার

        ৪ বিভাগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা

        প্রকাশ পেল তুফান সিনেমার ফার্স্টলুক

        নিউইয়র্কে রাস্তায় আচমকা নারীদের ঘুষি মারছে অজ্ঞাতরা

        যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

        পাপারাজ্জিকে ঘুষি: টেলর সুইফটের বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

        দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, সাগরেই ৩৬ হাজার

        বাল্টিমোরে সেতুধসে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের সব ক্রু ভারতীয়

        কে হচ্ছেন নতুন বন্ড

ব্রেক্সিট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বৃটেনের ভবিষ্যৎ কি?

ব্রেক্সিট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বৃটেনের ভবিষ্যৎ কি?

আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বৃটেনের থাকা বা না থাকা নিয়ে গণভোট। কেবল বৃটেনের জন্যই নয়, গোটা ইউরোপের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে এ গণভোট। বৃটেন, তথা গোটা যুক্তরাজ্যের নিজস্ব অর্থনীতি, রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থাতেও নতুন মোড় নিয়ে আসতে পারে এ গণভোটের কোনো সিদ্ধান্ত। ব্রেক্সিট ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোই তুলে ধরা হলো এ লেখায়।ব্রেক্সিট কী?ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে আসা বা না আসার প্রসঙ্গেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকালের গণভোট। বৃটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা বা ‘এক্সিট’- এ শব্দ দুইটি নিয়েই তৈরি করা হয়েছে ‘ব্রেক্সিট’ শব্দটি। সহজ কথায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের এক্সিটকেই সংক্ষেপে বলা হচ্ছে ব্রেক্সিট। এর অন্যতম মূল লক্ষ্য হলো যুক্তরাজ্যের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর ব্রাসেলসের কর্তৃত্বের অবসান ঘটিয়ে বৃটেনের নিজস্বতা বা স্বাতন্ত্র্যকে ধরে রাখা।ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী?দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে ইউরোপের ছয়টি দেশ ১৯৫৭ সালে গঠন করে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটি। এই দেশগুলো হলো- বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস ও তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি। পরবর্তী সময়ে এ জোটের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৯৯৩ সালে ২৮ সদস্য নিয়ে এই জোটই রূপান্তরিত হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ)। আয়ারল্যান্ড থেকে শুরু করে এজিয়ান সাগরের মধ্যবর্তী ২৮টি দেশের ৫০ কোটিরও বেশি মানুষের সম্মিলিত এ ব্লকের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি, সমাজনীতি ও আইনে বড় ধরনের প্রভাব রেখে থাকে। এর নিজস্ব সংসদ রয়েছে, রয়েছে পৃথক কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইইউয়ের ১৯টি সদস্য দেশ ব্যবহার করে থাকে সাধারণ মুদ্রা ইউরো।ইইউ ছাড়তে চাওয়ার কারণ কী?ইউরোপীয় ইউনিয়নের জোটে বৃটেন যোগ দেয় ১৯৭৩ সালে। একসময় বিশ্ব শাসন করা এ দেশটির সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো ছিল। বৃটেনের অনেক অধিবাসীই মনে করেন, তারা ইউরোপের অন্য দেশগুলোর চেয়ে আলাদা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর ব্রাসেলস থেকে নেয়া সিদ্ধান্ত তাদের মানতে হবে- তাতে আপত্তি অনেকেরই। এ জন্যই তারা ইইউ থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের মতো করেই থাকতে চায়।ইইউতে থাকতে চাওয়ার কারণ কী?বৃটিশদের একাংশ আবার মনে করেন, তাদের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির পেছনে ইইউয়ের ভূমিকা রয়েছে। তাদের যুক্তি, ইইউয়ের আইন-কানুনের কারণেই বৃটেনের ছোট-বড় কোম্পানিগুলো সহজে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে থাকে। ইইউয়ের সদস্য দেশগুলোতে কাজের সুবিধার কারণেও তারা ইইউয়ে থাকতে চান।ইইউ নিয়ে গণভোট কবে, কখন?আগামীকাল ২৩শে জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইইউয়ে বৃটেনের থাকা বা না থাকার প্রশ্ন নিয়ে গণভোট। সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এ তারিখ নির্ধারণ করেন।গণভোটে ভোট দেবেন কারা?বৃটিশ, আইরিশ ও কমনওয়েলথভুক্ত নাগরিকদের যারা যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন তারা সবাই ভোট দিতে পারবেন আগামীকালের গণভোটে। এছাড়া যেসব বৃটিশ ১৫ বছরের কম সময় ধরে প্রবাসী তারাও ভোট দিতে পারবেন। আর বৃটেনের অন্য নির্বাচনের মতো ভোট দিতে পারবেন ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীরা। আবার হাউজ অব লর্ডস ও জিব্রালটারের কমনওয়েলথ নাগরিকরাও এতে ভোট দিতে পারবেন।ব্রেক্সিটের অর্থনৈতিক প্রভাব কী?ইইউ থেকে বৃটেনের বেরিয়ে আসা বা ইইউয়ে বৃটেনের থাকা- দুই ধরনের মতের পেছনেই অর্থনৈতিক প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতির কারণে এ জোটভুক্ত সব দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে যুক্তরাজ্যের। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাজ্যকে প্রতিটি দেশের সঙ্গে পৃথকভাবে বাণিজ্য চুক্তিতে উপনীত হতে হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের বর্তমান যে বাজার রয়েছে তা কমে যেতে পারে। ফলে যেসব কোম্পানি এখন যুক্তরাজ্য থেকে পরিচালিত হচ্ছে, তারা সেখান থেকে সদর দপ্তর সরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন বলেও আশঙ্কা রয়েছে। অনেকেই আবার এমন আশঙ্কায় ভীত হতে রাজি নন। তাদের মত, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি এখন যে গতিতে চলছে ভবিষ্যতেও তা একই গতিতেই চলবে। তারা মনে করেন, ইইউ ত্যাগ করাই যুক্তরাজ্যের জন্য ভালো হবে। ইইউ থেকে বেরিয়ে এলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাৎসরিক বাজেটে প্রতি বছর যুক্তরাজ্যকে শত শত কোটি পাউন্ড দিতে হবে না। ইইউ ত্যাগ করলে বৃটিশ পাউন্ড দুর্বল হওয়ার মাধ্যমে তা জীবনযাত্রার খরচ বাড়িয়ে দেবে- এমন আশঙ্কা রয়েছে। ইইউ ছাড়ার পক্ষের ব্যক্তিরা অবশ্য এমন দাবিকে পাত্তা দিচ্ছেন না। ইইউ ছাড়ার পক্ষের মানুষরা মনে করেন, এটা বৃটেনের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ নিজেদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য ফিরে পাওয়ার। এর মাধ্যমে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে শরণার্থী সমস্যাও বৃটেন কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে পারবে বলেই মনে করেন তারা।কী রায় আসবে গণভোটে?ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করা বা এর সঙ্গে থেকে যাওয়া প্রসঙ্গে গণভোটের ফলাফল নিয়ে আগাম কিছুই মন্তব্য করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন জনমত জরিপে উঠে আসছে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র। কোনো কোনো জনমত জরিপে ইইউ ছাড়ার পক্ষে অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে বেশি মানুষের, কোনো কোনোটিতে থাকার পক্ষে। ফলে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করার আগে এর ফলাফল অনুমান করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত