আপডেট :

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

        বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ বুধবার রাজধানী ঢাকা শীর্ষ ১০ এর বাইরে

        লোহিত সাগরের জিবুতি উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবি

        থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রাজধানী ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

        গোলাপি চাঁদের দেখা মিলবে রাতে

        ২ হাজার ডলার দাম কমলো টেসলা গাড়ির

        যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সিরিয়া-ইরান ইস্যুতে চরমে আরবের ‘বিভক্তি’

সিরিয়া-ইরান ইস্যুতে চরমে আরবের ‘বিভক্তি’

লেবাননে অনুষ্ঠিতব্য আঞ্চলিক অর্থনীতিবিষয়ক সম্মেলনের বৈঠকের প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরব লিগের দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ আরও প্রকট হয়ে উঠছে।

সিরিয়ার ভবিষ্যত এবং ইরানকে ঠেকানোর কৌশল নিয়ে আরব দেশগুলোর বিরোধ সম্মেলনকে প্রভাবিত করছে।

কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদক জিনা খোদর বলেন, বৈরুতে আরব ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সম্মেলনে যোগদানে সম্মতি দিয়েছিলেন অনেক রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু, তাদের অনেকেই এখন সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।

কাতার ও কুয়েতের আমির সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন না। মিশর তাদের প্রেসিডেন্টের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীকে পাঠাচ্ছে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জানিয়েছেন, তিনি ওই সময়ে নিউইয়র্কে থাকবেন।

লেবাননের সম্মেলনে না গিয়ে এসব দেশ সম্ভবত ইরানকে বার্তা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান আলজাজিরার সাংবাদিক।

হিজবুল্লাহসহ ইরানের বিভিন্ন সহযোগী লেবাননে ক্ষমতায় রয়েছে এবং সিরিয়ার সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ইরানের সহযোগীরা এই সম্মেলনের মাধ্যমে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে আরব বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।

সংস্থাটির আঞ্চলিক সদস্য হিসেবে সিরিয়াকে পুনরায় অন্তর্ভূক্ত করার জন্য সম্মেলনের আগে আগে আরব লিগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এজন্য ভোটাভুটির সম্ভাবনা দেখা দেয়।

তবে, সম্মেলনে সিরিয়ার ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হয়।

‘সিরিয়াকে তিউনিসিয়ার সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণের বিষয়ে লেবাননের বৈঠকে আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই লিগের, দামেস্ককে সেখানে আমন্ত্রণ করাও হয়নি,’ বলেন আরব লিগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হোসাম জাকি।

‘আমরা এখনও ওই অবস্থায় পৌঁছতে পারিনি। সব আরব দেশ এখনই সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ইচ্ছুক নয়,’ বলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক রামি খুরি।

সিরিয়ার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর ভয়াবহ দমন-নিপীড়ন চালানোয় ২০১১ সালে দেশটির সদস্যপদ বাতিল করে এর ওপর অবরোধ আরোপ করে আরব লিগ।

কয়েকটি দেশ তাদের রাষ্ট্রদূতও প্রত্যাহার করে নেয়। গত বছরের শেষদিকে সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বাশির এই সঙ্কট শুরুর পর প্রথম আরব লিগ নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে যান। এর পরের সপ্তাহগুলোতে আরব আমিরাত, বাহরাইন সেখানে তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করে। কিন্তু, পুরো আরব জোট এখনও সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি।

বৈরুত সম্মেলনের আগে কয়েকটি আরব রাষ্ট্র সিরিয়া সম্পর্কে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। ইরাক আগেও দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি এবং এখনও তারা আরব লিগে সিরিয়ার সদস্যপদ ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছুক।

সিরিয়ার বিরোধিতা করে আসা কাতার বলছে, যে কারণে দেশটির সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে, সেগুলোর এখনও সুরাহা হয়নি।

সৌদি আরব তার মিত্র আরব আমিরাত ও বাহরাইনের পদক্ষেপ অনুসরণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

‘মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এসব দেশকে বলেছেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সময় এখনও আসেনি এবং রাজনৈতিক মীমাংসার বিভিন্ন বিষয়ে একমত না হলে দেশটি পুনর্গঠনের বিষয়ে আলোচনা শুরু করা যাবে না,’ আলজাজিরাকে বলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক স্বামী আল নাদির।

সাত বছর ধরে বিদ্রোহ দমন করে ক্ষমতায় থাকা বাশার আল আসাদ চাইছেন, তার ক্ষমতা দৃঢ় করতে, একঘরে অবস্থা থেকে বের হতে এবং ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশটিকে পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন জোগাড় করতে।

কিন্তু, অনেকে সিরিয়ার সরকারকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টাকে রাশিয়ার কূটনৈতিক তৎপরতা বলে মনে করায় এসব উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এ মাসের শুরুতে দামেস্ককে লিগে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা সম্ভাবনা দেখা দিলেও ওই বৈঠক পরে বাতিল করা হয়।

মিশর আসাদের সিরিয়াকে আরব লিগে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু, এখন তারা বলছে, জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক সঙ্কটের সামধান না করলে সিরিয়াকে আরব লিগে ফিরিয়ে আনা যাবে না।

তা ছাড়া আসাদকে আগেভাগেই স্বীকৃতি দিয়ে ফেললে, তার সঙ্গে দর কষাকষিতে সুবিধা করা যাবে না বলেও মনে করেন অনেকে।

যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলকে ইরানের প্রভাবমুক্ত করতে বিশেষ আগ্রহী। তারা মনে করে, আসাদকে শক্তিশালী করা মানেই ইরানকে শক্তিশালী করা।

আসাদের বিরোধীরা চায়, তিনি যেন জাতিসংঘে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ করে তার ক্ষমতা কিছুটা ছেড়ে দেন। তবে মার্চে তিউনিসিয়ায় আরব লিগের বৈঠকের আগে আসাদের সমর্থকরা আবারও তৎপর হয়ে উঠবে নাকি তা স্পষ্ট হচ্ছে না।

তবে, ইরান ইতোমধ্যে সিরিয়া সম্পর্কে আরব দেশগুলোর মনোভাবের পরিবর্তনকে প্রকাশ্যে স্বাগত জানিয়েছে।

‘সিরিয়ায় আরব দেশগুলোর ফেরাটা একটা ইতিবাচক পরিবর্তন। এতে বোঝা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সিরিয়ার অখণ্ডতা এবং বৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দিচ্ছে,’ মন্তব্য করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তবে, আরব লিগ দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলে, তারা সেখানে নতুন আঞ্চলিক ক্ষমতা এমনভাবে বিন্যস্ত করবে যেন তা থেকে ইরান লাভবান না হয়। সিরিয়ার অর্থনীতি চাঙ্গা করতে আরব দেশগুলো বিশাল অঙ্কের অনুদান দিলেও, তার বদলে তারা দেশটিতে আরও বেশি প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে।

‘শত্রু আরব দেশগুলো দামেস্কে ফিরে যাওয়ায় ইরানের লোকসানই হবে। সেখানে তারা অনেক কিছু বিসর্জন দিয়েছে,’ বলেন মোহানাদ হাজি আলি।

কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টারের এই বিশ্লেষক আলজাজিরাকে বলেন, ‘আরব বিশ্বে সিরিয়ার ফেরার মানে হচ্ছে, ইরানের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও কৌশল পরিবর্তন করা।’

বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সিরিয়ার দেশটির সরকারকে অবিচল সমর্থন দিয়ে গেছে ইরান। আসাদ এই সম্পর্ক ছিন্ন করবেন এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব সীমিত করতে যুক্তরাষ্ট্র যে তৎপরতা শুরু করেছে, তার প্রথম ফল হচ্ছে বৈরুতের বৈঠক ঘিরে আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ। ফেব্রুয়ারি মাসে ওয়ারশতে তেহরানবিরোধী বৈঠকে এই তৎপরতা বেগবান হয়ে উঠবে।

এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত