আপডেট :

        অপরাধ সাম্রাজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা

        চাঁদপুরে সেই পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপর পদক্ষেপ

        বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিলেও গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদ

        তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরো বাড়ার শঙ্কায় সারা দেশে হিট অ্যালার্ট

        কোয়াডকপ্টার উড়িয়ে শত্রুরা ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে যা তাদের নিজেদের জন্যই অপমানজনক

        কোয়াডকপ্টার উড়িয়ে শত্রুরা ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে যা তাদের নিজেদের জন্যই অপমানজনক

        বিয়ে করতে গেলেন হেলিকপ্টার নিয়ে গেলেণ বর

        ইরানের ইস্পাহান শহরের জারদানজান এলাকায় একটি পারমাণবিক স্থাপনায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা

        যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দের মানববন্ধন ও সমাবেশে

        সারাদেশে অভিযান চালিয়ে ১৫টি গাড়িকে ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে

        সারাদেশে অভিযান চালিয়ে ১৫টি গাড়িকে ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে

        নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তুলে ধরতে হবে বললেন রাষ্ট্রপতি

        নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তুলে ধরতে হবে বললেন রাষ্ট্রপতি

        শাহজালালের থার্ড টার্মিনালে ঢুকে গেল রাইদা বাস, প্রকৌশলীর মৃত্যু

        ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট গ্রহন

        রাসেল মাহমুদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়েও পায়নি মোহামেডান

        তূর্ণা ও কক্সবাজার এক্সপ্রেসে কাটা পড়লো ২ জন

        প্রতারিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা

        সিলেটের শাহপরাণে পুলিশের জালে দুই কারবারি

        সিলেট নগরীতে ২১ এপ্রিল থেকে কোভিডের ৩য় ও ৪র্থ ডোজ প্রদান করা হবে

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করল আইক্যান

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করল আইক্যান

জেনেভাভিত্তিক বহুপক্ষীয় সংগঠন ‘পরমাণু অস্ত্র বিলুপ্তিসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রচারাভিযান’ রোববার অসলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তিতে পাওয়া নোবেল পুরস্কার ও সনদ গ্রহণ করেছে।

পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণসংক্রান্ত জাতিসংঘের চুক্তির মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার আদায়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০১৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করে আইক্যান। এ-সংক্রান্ত চুক্তিতে ব্রাজিল, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ এখন পর্যন্ত ৫০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে।

৬ অক্টোরব নরওয়ের অসলোতে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে আইক্যানের নাম ঘোষণায় নোবেল কমিটি বলে, পরমাণু অস্ত্রের যেকোনো ধরনের ব্যবহারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং চুক্তির মাধ্যমে এ ধরনের অস্ত্র নিষিদ্ধ করতে তাদের অদম্য প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হলো।

আইক্যানের নির্বাহী পরিচালক বিট্রিস ফিন সাংবাদিকদের বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধের ডাক দেওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই চুক্তির ফলে পরমাণু অস্ত্রের বৈধতা অর্জন কঠিনতর হয়ে পড়েছে, গোপনে পরমাণু অস্ত্র বানানোর অস্বস্তিদায়ক হয়ে উঠেছে এবং তাদের ওপর চাপ বেড়েছে।

বিট্রিস ফিন বলেন, নোবেল পুরস্কার অর্জন পরমাণু ইস্যুতে কাজ করা তার সংগঠন ও অন্যদের জন্য বিশাল উৎসাহের বিষয়। কিন্তু এমন সময় তিনি এ পুরস্কার গ্রহণ করলেন এবং এর প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বললেন, যখন বিশ্বজুড়ে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার ও পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমায় আনবিক বোমার বিস্ফোরণে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরা সেতসুকো থুরলো (মধ্যে) ও বিট্রিস ফিন (ডানে) আইক্যানের পক্ষে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেনের কাছ থেকে পুরস্কার ও সনদ গ্রহণ করেন। ১৯৪৫ সালে থুরলোর বয়স ছিল ১৩ বছর।

অন্যদিকে, ৬ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণার ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরানের সঙ্গে বিশ্বশক্তির পরমাণু চুক্তি মানবেন না এবং নতুন করে তা সত্যয়নও করবেন না। তিনি বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্রের ধারক হিসেবে আমরা ইরানকে মানব না।’ ইরানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও সহিংসতা, রক্তপাত ও সংঘর্ষ রপ্তানির অভিযোগ এনে ট্রাম্প বলেন, তাদের এই অভিলাস পূরণ হতে দিতে পারি না আমরা। তারা এই চুক্তির শর্ত মেনে চলছে না।

ট্রাম্পের সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পুরমাণু চুক্তি মেনে চলার দাবি করে ইরান বলে, তাদের পরমাণু কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উন্নয়নের জন্য তা ব্যবহার করা হবে। জাতিসংঘের পরমাণু কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ টিমও বলে, চুক্তি মেনে চলছে ইরান।

ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব জিইয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি দাবি করেছে, তাদের উদ্ভাবিত পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত করতে সক্ষম। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, প্রয়োজনে উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

রোববার পুরস্কার গ্রহণের আগে বিট্রিস ফিন বলেন, উত্তর কোরিয়ায় ‘চরমতম ভয়াবহ পরিস্থিতি’ বিরাজ করছে। পরমাণু অস্ত্র থাকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বা কিম জং-উনকে ভয় না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিট্রিস ফিন বলেন, অন্যান্যের মতো ট্রাম্প ও উনও মানুষ, যাদের হাতে দুনিয়াটা ধ্বংস করার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই প্রথম পরমাণু বিস্ফোরণের পর এ পর্যন্ত স্বীকৃত আটটি পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ ২ হাজার ৫৬ বার পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। পরিসংখ্যানটি এমন-

আইক্যান কী ও তাদের অবদান
পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণে ‘বাধ্যগত আইনি ভিত্তি’ তৈরিতে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফার্স্ট কমিটেতে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শুরুর পক্ষে ১২৩টি দেশ প্রস্তাব অনুমোদন করে ভোট দেয়। এ বছরের জুলাই মাসে অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি অনুমোদন করে জাতিসংঘ।

এরপর এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলে, ‘গত ২০ বছরের সমঝোতায় পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকারণে এই প্রথম বহুপক্ষীয় বাধ্যবাধকতার আইনভিত্তি রচিত হলো।’ গত মাসে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে চুক্তিটি স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

২০ সেপ্টেম্বর নাগাদ ৫০টি দেশ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। যেকোনো অবস্থায় পরমাণু অস্ত্র তৈরি, ব্যবহার, মজুত ও পরীক্ষা না করার অঙ্গীকার করে স্বাক্ষর করেছে তারা। তবে প্রকৃত পক্ষে যারা পরমাণু অস্ত্রের মালিক, তারা-ই এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টার জন্য দূষছেন, সেই ইরান-ই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এ সাফল্যের জন্য আইক্যানকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে।

৬ অক্টোবরের আগে খুবই সামান্য পরিচিত এক সংগঠন ছিল সুইজারল্যান্ডের জেনেভাভিত্তিক আইক্যান। তাদের কাজ সম্পর্কে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই জানে না।

২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে জেনেভায় এর প্রধান কার্যালয়। বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশের ৪৬৮টি বেসরকারি সংগঠন নিয়ে একটি বৃহৎ বৈশ্বিক জোটে পরিণত হয়েছে আইক্যান। তারা একযোগে পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধে ও নিরস্ত্রীকরণে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এ জোটের সদস্য সংগঠনগুলো সাধারণত মানুষের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে থাকে।

আইক্যানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের ‘ফিজিশিয়ানস ফর সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি ইন বাংলাদেশ’ নামে বেসরকারি সংস্থা।

‘ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ানস ফর দি প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়ার’ নামে সংগঠনটি ১৯৮৫ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে। ফিলল্যান্ডের হেলসিংকিতে এই সংগঠনের ২০০৬ সালের বিশ্ব কংগ্রেসে আইক্যানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এর এক বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় আত্মপ্রকাশ করে আইক্যান এবং ওই বছর অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পেইন শুরু করা হয়।

বিট্রিস ফিন বলেছেন, ১৯৯৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু ব্যান ল্যান্ডমাইনস’ এর কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আইক্যান প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয় সদস্য সংগঠনগুলো।


এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত