আপডেট :

        নির্বাচনের পর প্রথম রাজধানী ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল এশিয়াবিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চ

        জীবন বাঁচাতে মিয়ানমারের সৈন্য বাংলাদেশে, সংখ্যা বাড়ছে

        ভারতে মেট্রো পরিষেবায় চালু হলো চালকবিহীন মেট্রো পরিষেবা

        জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদ ভোট হতে যাচ্ছে

        সংসদ এলাকায় ড্রোন, মুচলেকায় ছাড়া পেলেন সাবেক এমপির পুত্র

        এ নিবাসেই যাতে মৃত্যু হয়, এটাই ছিল তাঁর শেষ ইচ্ছা

        ‘আই হেট পলিটিকস’

        একই দিন একই স্থানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমাবেশ

        মুহূর্তেই আনন্দ পরিণত হলো বিষাদে

        পরিচালক মাজিদ মাজিদির জন্মদিনআজ

        আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক নির্বাচন

        বিভিন্ন রঙের সামুদ্রিক প্রবাল সাদা হয়ে যাচ্ছে

        ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের আরব আল–আরামাশি এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে হিজবুল্লাহর ছোড়া ড্রোন হামলায় আহত ১৮ জন

        আলফালাহর বাংলাদেশের কার্যক্রম কিনে নিচ্ছে ব্যাংক এশিয়া

        মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে

        কলকাতায় মুজিবনগর দিবস পালন

        কিশোর গ্যাং নেতার ‘টর্চার সেল’, কথার হেরফের হলেই নির্যাতন

        আসন্ন নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে

        সংসদ এলাকায় ড্রোন, মুচলেকায় ছাড়া পেলেন সাবেক এমপির পুত্র

        পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদ মুশতাক আহমেদ এখন টাইগারদের স্পিন বোলিং কোচ

ইউএনএইচসিআর ছাড়াই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্বেগের : জাতিসঙ্ঘ

ইউএনএইচসিআর ছাড়াই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্বেগের : জাতিসঙ্ঘ

সময়সীমার চেয়ে নিরাপত্তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ : যুক্তরাষ্ট্র

শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে বাইরে রেখে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি সইতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাপরিচালক এন্তোনিও গুতেরেজ।

বুধবার নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তির বিষয়ে ইউএনএইচসিআরের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। তবে চুক্তিতে সংস্থাটিকে অংশীদার করা হয়নি। অথচ এ ধরনের শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআর জড়িত থাকে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হতে হবে স্বেচ্ছায়। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই তাদের আদি বাড়িতে ফিরে যেতে দিতে হবে। তাদেরকে কোনো আশ্রয় শিবিরে রাখা যাবে না। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশের আশ্রয় শিবির থেকে এসব মানুষকে মিয়ানমারের শিবিরে পাঠানো হলে তা হবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম যাতে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে চলে তা নিশ্চিত করার জন্য এ প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআরকে যুক্ত রাখা হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পাস হওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের একজন বিশেষ দূত শিগগির নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানান গুতেরেজ।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা ও মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ ওয়াশিংটনে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যাবাসন বিষয়ক বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নে জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার ন্যুয়েট বলেছেন, দুই বছরের মধ্যে প্রত্যাবাসন শেষ করা সম্ভব না হলে প্রয়োজনে সময় পিছিয়ে দিতে হবে। আমাদের কাছে মানুষের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন সময়সীমার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ নিরাপদ মনে না করলে তাকে জোর করে ফেরত পাঠানোকে আমরা সমর্থন করি না। এতে হিতে বিপরীত হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি শরণার্থীরা চায় না, আমরা চাই না এবং কোনো জাতিও তা চাইবে না।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য রাখাইন যথেষ্ট নিরাপদ কি না - জানতে চাওয়া হলে ন্যুয়েট বলেন, মাঠ পর্যায়ের হালনাগাদ পর্যবেক্ষণ আমার কাছে নেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক মানুষ দেশ ছেড়েছে। তাই আমি ভাবতে পারছি না এই মুহূর্তে তারা বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য নিরাপদবোধ করবে। বার্মা ও বাংলাদেশে আমার সংক্ষিপ্ত সফরে শরণার্থীদের সাথে আলাপের ভিত্তিতে বলতে পারি, তারা বাড়ি ফেরার মত পরিস্থিতিতে নেই। তাদের অনেককে আমি অত্যন্ত নাজুক ও ভীতির মধ্যে থাকতে দেখেছি।

সেফ দ্য চিলড্রেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী পল রোনার্ল্ডস বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার জন্য নিরাপত্তাবোধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দশকের পর দশক ধরে তারা যে দমন-পীড়ন ও নৃশংসতার মধ্য দিয়ে জীবন কাটিয়েছে, সেটা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিকত্ব, অবাধ চলাফেরার স্বাধীনতা ও জীবিকার সুযোগের মত মৌলিক অধিকারগুলো যে কোনো চুক্তির ন্যুনতম শর্ত হওয়া উচিত।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনাকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ‘ভয়াবহ অপরিপক্ক’ হিসাবে আখ্যয়িত করেছে। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমজ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফেরার ও বসবাসের অধিকার রয়েছে। তবে জাতিবিদ্বেষ চলছে এমন পরিস্থিতিতে তাদের তড়িঘড়ি করে ঠেলে দেয়া উচিত না। শরণার্থীদের জোর করে ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী।

২৩ জানুয়ারি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু
পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে মিয়ানমার এক হাজার ২৫৮ জন রোহিঙ্গাকে নিতে চায় মিয়ানমার। রোহিঙ্গা হিসাবে যাচাইকৃত ৫০৮ জন হিন্দু ও ৭৫০ জন মুসলিম রোহিঙ্গার তালিকা বাংলাদেশকে দিয়েছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় এসব কথা জানিয়েছে।

এদিকে গত সোমবার ও মঙ্গলবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নেইপিডোতে অনুষ্ঠিত যৌথ কার্যকরী গ্রুপের (জেডাব্লিউজি) প্রথম বৈঠকে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) এক হাজার ৩০০ সদস্যের একটি তালিকা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে দিয়েছে মিয়ানমার। ১৯৮০ সালের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সহযোগিতা চুক্তির আওতায় আরসার এসব সদস্যকে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করার জন্য বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট আরসা সদস্যরা মিয়ানমারের পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে হামলা করেছে - এই অজুহাতে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচার দমন-পীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর সীমান্ত চৌকিতে হামলার অজুহাতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের নামে চালানো নৃশংসতার কারণে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত জেডাব্লিউজির প্রথম বৈঠক শেষে সই হওয়া ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্টে বলা হয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হবে। রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাবাসন হবে পরিবারভিত্তিক। এতিম ও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিতে জন্ম নেয়া শিশুদের ক্ষেত্রে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হবে।

জেডাব্লিউজি বৈঠকে প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। আর মিয়ানমার তাদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবার ও রোববার ছাড়া প্রতিদিন ৩০০ করে সপ্তাহে সর্বোচ্চ দেড় হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ তিন মাস পর অনুষ্ঠেয় জেডাব্লিউজির দ্বিতীয় বৈঠকে এ সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক।

মিয়ানমারের সাথে ইতোপূর্বে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও জেডাব্লিউজির টামর্স অব রেফারেন্স (কার্যপরিধি) অনুযায়ী ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুযায়ী, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ পাঁচটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপন করবে। রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করার জন্য মিয়ানমার প্রাথমিকভাবে দুটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র নির্মাণ করবে। উত্তর রাখাইনে হ্লা পো খাউং এলাকায় রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী শিবির গড়ে তোলা হচ্ছে। মিয়ানমার দ্রুততার সাথে এই শিবির নির্মাণ কাজ শেষ করবে। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। পরিচয় যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাবাসনের জন্য দু’টি পৃথক করিগরী কমিটি গঠন করা হবে।


এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত