আপডেট :

        প্রকাশ পেল তুফান সিনেমার ফার্স্টলুক

        নিউইয়র্কে রাস্তায় আচমকা নারীদের ঘুষি মারছে অজ্ঞাতরা

        যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

        পাপারাজ্জিকে ঘুষি: টেলর সুইফটের বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

        দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, সাগরেই ৩৬ হাজার

        বাল্টিমোরে সেতুধসে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের সব ক্রু ভারতীয়

        কে হচ্ছেন নতুন বন্ড

        জাহাজের ধাক্কায় বাল্টিমোরে সেতু ধসের সর্বশেষ

        শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের ভালো করা উচিত: সাকিব

        রিকশাওয়ালাদের গেম শো

        আর্জেন্টিনায় ৭০ হাজার সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত

        সর্বজনীন পেনশন স্কীম কার্যক্রমের উদ্বোধন

        ভুটানের রাজাকে গার্ড অব অনার ও বিদায়ী সংবর্ধনা

        গাজায় মানবিক বিপর্যয় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে পরিণত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান

        ভুয়া পিতৃপরিচয় দিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে প্রতারণা

        বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভূয়সী প্রশংসায় ডোনাল্ড লু

        মস্কোতে আইএসের হামলা চালানো, বিশ্বাস হচ্ছে না মারিয়া জাখারোভার

        নগরীর অচল ১১০টি সিসি ক্যামেরা হল সচল

        একনেকে ১১ প্রকল্পের অনুমোদন

        স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে সিকৃবিতে আলোচনা সভা

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মহানবী (সা.)-এর বংশধর!

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মহানবী (সা.)-এর বংশধর!

ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ৪৩তম বংশধর বলে দাবি করেছেন ইউরোপিয় ঐতিহাসিকগণ। ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম ব্রিটেনের রাজপরিবারের পূর্বপুরুষদের অস্তিত্ব ও জিন নিয়ে কাজ করা প্রকাশনা সংস্থা ‘বুর্খে পেরেজ’ এই দাবি উত্থাপিত করে।

এরপর বিষয়টি নিয়ে অনেক ইতিহাসবিদদের মধ্যে বির্তক সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি মরক্কোর একটি গণমাধ্যম রাণীর সঙ্গে মুহম্মদ (সা.)-এর উত্তরসূরীতার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করে। তারা জানায়, মধ্যযুগীয় ম্পেনে মুর যুগের জিনতত্ত্ব বুর্খে প্রকাশনার দাবিকেই সমর্থন করে।

মরক্কোর গণমাধ্যমের সূত্র ধরে ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, রাণী এলিজাবেথ তৎকালীন স্পেনের সেভেলির মুসলিম শাসকের বংশধর। এতে দেখা যায়, উমাইয়া শাসনামলে স্পেনে মুরদের আক্রমণের পর রাজা আবু আল কাসিম মোহাম্মদ ইবন আবাদ স্পেনের শহর সেভেলিতে শাসক (১০২৩ খ্রিষ্টাব্দ) হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। আবু আল কাসিম ছিলেন মুহম্মদ (স) এর নাতি ইমাম হাসান বিন আলির ১১তম বংশধর।

১৩৭৫ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা রির্চাড অব কেনিসবুর্গ (আর্ল অব কেমব্রিজ ‘তৃতীয়’) ছিলেন আবু আল কাসিমের ১২তম বংশধর। তার নাতি চতুর্থ এডওয়ার্ড ছিলেন ইংল্যান্ডের রাজা। এডওয়ার্ডের অষ্টম বংশধর ছিলেন গ্রেট ব্রিটেনের রাজা প্রথম জর্জ। আর প্রথম জর্জের দশম উত্তরসূরীই রাণী এলিজাবেথ। মূলত ইমাম হাসানের রক্ত পর্তুগাল ও কাস্তিল ইউরোপীয় রাজাদের সূত্র ধরে ব্রিটিশ রাণীর কাছে এসেছে।

মিশরের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি আলি গোমাও রাণীর সঙ্গে মুহম্মদ (সা.) এর সংশ্লিষ্টতার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এর আগে বুর্খে পেরেজ-এর নির্বাহী প্রকাশকের একটি তথ্যের ভিত্তিতে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ১৯৮৬ সালে রাজপরিবারের নিরাপত্তা বৃদ্ধি জোরদার করেন।

থ্যাচারের কাছে তিনি লিখেছিলেন, ‘নবী মুহম্মদ এর সঙ্গে রাজপরিবারের সরাসরি সম্পৃক্ততা তাদের মুসলিম সন্ত্রাসীদের থেকে নিরাপদে রাখবে না।’ ওই লেখায় তিনি আরো বলেন, ‘এই সংযোগ অত্যন্ত আশ্চর্যজনক একটি বিষয়। মুহাম্মদ (সা.) এর রক্ত রাণীর মধ্যে প্রবাহিত এটি খুব কম ব্রিটিশ নাগরিকই জানেন। যদিও সব মুসলিম ধর্মীয় নেতারা এই বিষয়ে গর্ব বোধ করবেন।’

বুর্খে পেরেজের দাবি অনূসারে, রাণীর রক্ত আসলে মুসলিম রাজকন্যা জাইদার থেকে এসেছে। জাইদা ১১শ শতকে নিজের শহর সেভেল থেকে পালিয়ে ক্রিশ্চিয়ান ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। জাইদা ছিলেন সেনকোর পূর্বসূরী। এই সেনেকোর উত্তরসূরীই আর্ল অব কেমব্রিজকে বিয়ে করেছিলেন।

কিন্তু ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটর বলছে, জাইদার বংশানুক্রম সন্দেহপূর্ণ। কোন ইতিহাসবিদের মতে তিনি মদ্যপানে আসক্ত রাজা আল মুতাবিদ ইবন আবাদ-এর মেয়ে ছিলেন। মুতাবিদ, মোহাম্মদ- ইবন আবাদের নাতি ছিলেন। আবার কারো মতে, জাইদা ওই পরিবারে বিয়ে করেছিলেন।

মরক্কোর আলেম আবদুল হামদ আল-আউউনি সেদেশের একটি পত্রিকায় এ খবরটিকে স্বাগত জানিয়ে লিখেছেন, এটা আমাদের দুই ধর্ম ও রাজ্যের মধ্যে একটি সেতু বন্ধন তৈরি করে। তবে সৌদির কয়েকজন ব্যক্তি এ বিষয়ে বলেন যে, এটা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য খ্রিষ্টানদের একটি প্রচারণা ছাড়া আর কিছুই না।

বাংলাদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট আলেমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে, শোলাকিয়া ইদগাহ-এর গ্র্যান্ড ইমাম, ইকরা বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, বংশগতভাবে তিনি নবী কারিম সা. এর বংশের হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

তবে আমরা এ বিষয়ে গবেষকদের আলোচিত বংশধারা যাচাই করে বুঝতে পারবো বিষয়ের সত্যতা কতটুকু। রানীর বংশ জার্মান থেকে এসেছে। রাসুলের বংশের সঙ্গে মিললে আশ্চর্যের কিছু না। আর যায়দা বিবির কথা বলা হয়েছে তিনি কী আসলেই ইসলাম ধর্মের থেকে খ্রিষ্টধর্মে গিয়েছেন কী না আমরা ইতিহাস থেকে যাচাই করেই বলতে পারবো।

রাজধানী ঢাকার জামিয়া শায়খ জাকারিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল, বিশিষ্ট বক্তা, লেখক গবেষক, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, ইউরোপিয় গবেষকরা ইতিহাস ঘেটে বের করেছে রানী এলিজাবেথ রাসুল সা. এর বংশের। হ্যাঁ এমন হতে পারে অস্বাভাবিক কিছুই না। তবে আমরা বিষয়টা পর্যলোচনা না করে কিছু বলতে পারছি না। ইতিহাস অনেক বড় বিষয় এটা নিয়ে পাঠ প্রয়োজন।

ইউরোপিয়ান গবেষকদের লেখা বংশধারা: হযরত মুহাম্মদ সা. এর মেয়ে ফাতেমা রা. এর সন্তান হাসান ইবনে আলী, হাসান ইবনে হাসান ইবনে আলী, জহরা বিনতে হুসেনের পুত্র নউম আল-লখমী, তার পুত্র তায়ফ ইবনে নাঈম, ইত্তফ ইবনে নায়িমের পুত্র আসলান ইবনে আওয়ামী।

আমির ইবনে আসলানের পুত্র ইশতিয়াক ইবনে আমর, তারপুত্র আব্বাস ইবনে আমর তার পুত্র কোরেস ইবনে আব্বাস ইবনে আবু আল কাসিম মোহাম্মদ ইবনে আব্বাস সেভিলের রাজা।

আব্বাস দ্বিতীয় আল মুত্তাদ্দিদ, তার ছেলে আল মুয়াতামিদ ইবনে আব্বাস আল-মু’তামীদ এর কন্যা যায়দা। যায়দার পুত্র সানচো অ্যালফোন্সজ, এখান থেকে খ্রিষ্ট বংশ ধারা শুরু হয়ে মিলিত হয়েছে ইংল্যান্ডের রাজা হ্যানওভার আয়ারল্যান্ডের মেয়ে স্কট মেরি রানী (১৫৪২-১৫৮৭) জেমস ভি, স্কট অফ দ্য স্কট এর মেয়ে, জর্জ গ্রেট ব্রিটেনের রাজা সোফিয়ার ইলেক্ট্রেস হ্যানোভার ও জর্জ দ্বিতীয় ব্রিটেনের জর্জ আই কিং ও ফ্রেডেরিক এর বংশ হয়ে প্রিন্স অফ ওয়েলসের পুত্র জর্জ দ্বিতীয় ফ্রেডরিকের পুত্র হয়ে মিলিত হয় ব্রিটেনের সপ্তম রাজা এডওয়ার্ড এর সঙ্গে। এর পর তার বংশধর ভিক্টোরিয়া জর্জ ভি এর বংশ ঘুরে যুক্তরাজ্যের রানীর বংশের সঙ্গে মিলিত হয়।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত