আপডেট :

        সিকৃবিতে পাঠ্যক্রম অভিযোজন প্রশিক্ষণ

        জাতির পিতার আদর্শে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে: গণপূর্তমন্ত্রী

        ভারতের গ্যাংস্টার রাজনীতিবিদ মুখতারের মৃত্যু

        প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আলোচনা ও ইফতার

        ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

        রাফাহ অভিযানের প্রস্তুতি ইসরায়েলিদের

        চারুপাঠের চিত্রাঙ্কন কর্মশালা অনুষ্ঠিত

        চীনা উদ্যোক্তাদের বস্ত্র-পাট খাতে বিনিয়োগের আহ্বান পাটমন্ত্রীর

        এফটিএক্স প্রতিষ্ঠাতার ২৫ বছরের কারাদণ্ড

        পুলিশের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

        বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা চান ওবায়দুল কাদের

        ওসমানীনগরে বদর দিবস পালিত

        বাংলাদেশের কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান

        ট্রেনের টিকেটসহ কালোবাজারি গ্রেপ্তার

        ৪ বিভাগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা

        প্রকাশ পেল তুফান সিনেমার ফার্স্টলুক

        নিউইয়র্কে রাস্তায় আচমকা নারীদের ঘুষি মারছে অজ্ঞাতরা

        যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

        পাপারাজ্জিকে ঘুষি: টেলর সুইফটের বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

        দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, সাগরেই ৩৬ হাজার

বিশ্ব শান্তি ও নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করার আহ্বান শেখ হাসিনার

বিশ্ব শান্তি ও নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করার আহ্বান শেখ হাসিনার

দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সংঘাতমুক্ত সমাজ গঠনের ভিত্তি হিসেবে বৈশ্বিক শান্তি ও নারীর ক্ষমতায়নের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা চালাতে কমনওয়েলথ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সমাজে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাদের যথাযথ শিক্ষাদানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যথাযথ শিক্ষা ছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি বিশ্ব দেখতে চাই, যেখানে মানবিক উন্নয়ন অজর্নে নারী ও পুরুষ হাতে হাত রেখে কাজ করে যাবে।’

মঙ্গলবার লন্ডনে ওয়েস্টমিনস্টারে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সম্মেলন কেন্দ্রে ‘নারীর ক্ষমতায়ন : কমনওয়েলথ সদস্য দেশসমূহের মেয়েদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা’ শীর্ষক কমনওয়েলথ নারী ফোরামের  অধিবেশনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, একটি জাতি হিসাবে পথ চলায় নারীদেরকে আমাদের সমান অংশীদার ভাবতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসাবে লিঙ্গসমতা ও অবৈষম্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সংবিধানে নারীর অগ্রগতির জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা রাখারও বিধান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নারীর আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর লিঙ্গসমতার জন্য বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে। লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে সফলতার ক্ষেত্রে ১৪৪টি দেশের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৭তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে ১৫৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।

প্রধানমন্ত্রী নারী শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের গৃহীত কর্মসূচির উল্লেখ করে বলেন, নারী শিক্ষার প্রসারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের লেখাপড়া বিনা বেতনে করা হয়েছে। ২৮ লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য মিড ডে মিল কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০১০ সালে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কর্মসূচি বিনামূল্যে বই বিতরণ চালু করেছে এবং শিক্ষা বছরের প্রথম দিনে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২০ হাজারের বেশি বই বিতরণ করা হয়েছে। ২ কোটি ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে। এদের বেশির ভাগই মেয়ে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য পৃথক ওয়াশ ব্লকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই নীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদে নারীর সংরক্ষিত আসন ৩০টি থেকে বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে। বর্তমান সংসদের ২২টির বেশি আসনে নারী এমপি সরাসরি নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশ পার্লামেন্ট, বিশ্বের একমাত্র পার্লামেন্ট, যেখানে স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা এবং সংসদে বিরোধি দলীয় নেতা সকলেই নারী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক রূপান্তর সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে, গ্রামাঞ্চলে প্রায় ২ কোটি নারী কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতে নিয়োজিত রয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। এই খাতের ৮০ শতাংশ প্রায় ৪৫ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক নারী।

শেখ হাসিনা বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। মাত্র ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জে জামানত ফ্রি ব্যাংক ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী প্রায় ৬ হাজার ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে জনগণকে অনলাইন সেবা পৌঁছে দিতে একটি কেন্দ্রে একজন পুরুষ অংশীদারের অন্তত একজন নারী অংশীদারকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গ্রামীণ নারীদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে আমাদের সরকার ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের শিক্ষানীতি ২০১০-এ শিক্ষায় অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা এবং সামাজিক ও মানবিক গুণাবলীকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার প্রথমবারের মতো এক বছর প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। কারিকুলাম বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মূল ধারার শিক্ষায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে শিক্ষা মেয়ে শিশুদের বিভিন্ন সামাজিক বাধা অপসারণ এবং গ্রামীণ এলাকায় নারীদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ২০১৫ সালের ৬২ শতাংশ থেকে ২০১৭ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৪৭ শতাংশ। ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ২০১৫ সালের ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ২০১৭ সালে ১০ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের উজ্জ্বল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

‘চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। দারিদ্র্য হার ২০০৬ সালের ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ২০১৭ সালে দাঁড়িয়েছে ২২ শতাংশ। জাতিসংঘ গত মাসে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশের সক্ষমতার ঘোষণা দিয়েছে,’ বলেন শেখ হাসিনা।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ জাতীয় পরিকল্পনা ও নীতি সেই লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ ছেলে ও মেয়েদের জন্য ১২ বছরের গুণগত শিক্ষা আমাদের অগ্রাধিকার ও অঙ্গীকার।


এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত