আপডেট :

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ বুধবার রাজধানী ঢাকা শীর্ষ ১০ এর বাইরে

        লোহিত সাগরের জিবুতি উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবি

        থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রাজধানী ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

        গোলাপি চাঁদের দেখা মিলবে রাতে

        ২ হাজার ডলার দাম কমলো টেসলা গাড়ির

        যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

        মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী দুই দেশ—ইরান ও ইসরায়েলকে নিয়ে মহাবিপত্তিতে আছে জর্ডান

        বিনা ভোটে জিতে বললেন, ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়েছি’

        বিনা ভোটে জিতে বললেন, ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়েছি’

        অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসার সুদ বা মুনাফার ওপর থেকে কর প্রত্যাহার

        পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান

        ভারতের লাদাখের রাজধানী লেহতে আমরণ অনশনে সোনম ওয়াংচুক

        ভারতের লাদাখের রাজধানী লেহতে আমরণ অনশনে সোনম ওয়াংচুক

        শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার

        কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আলী আকবরকে জিজ্ঞাসাবাদ

        ক্যাসিনোকাণ্ডের প্রধানের মনোনয়নপত্র বাতিল

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন

        যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিপরিষদে টিকটক নিষিদ্ধের বিল পাস

        ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, পুলিশের ধরপাকড়

নির্যাতন করেও পার পাচ্ছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী : মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

নির্যাতন করেও পার পাচ্ছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী : মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে ব্যাপক নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জড়িতরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনাগুলো তদন্ত ও জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে লক্ষ্যণীয় কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রমবিষয়ক ব্যুরোর বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে।

২০১৭ সালের এই প্রতিবেদনটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের সারাংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের সংসদীয় নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে মানোত্তীর্ণ হয়নি। দেশটির বেসামরিক কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।

মানবাধিকার-সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, বেআইনি আটক, সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর গুম; বাক স্বাধীনতা হরণ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কার্যক্রমসহ নাগরিক স্বাধীনতার উপর নিষেধাজ্ঞা; রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে অংশগ্রহণের স্বাধীনতার অভাব, দুর্নীতি, লৈঙ্গিক, ধর্মীয় ও গোষ্ঠীগত সহিংসতার মতো বিষয়গুলো।  

নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানায়।  ক্ষমতাসীন দল তাতে অস্বীকৃতি জানালে বিএনপি ২০১৪ সালের সংসদীয় নির্বাচন বর্জন করে। এ কারণে মোট আসনের অর্ধেকের বেশি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি। ৩০০ আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২৩৫টি আসন রয়েছে।

নির্বাচন বর্জনের কারণে সংসদে বিএনপির কোনো আসন নেই। বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ৩৬টি আসনে নির্বাচিত হয়, যেটি জোট সরকারের পরিকল্পনার অংশ ছিল। শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা তার জোটের অন্য দলগুলোর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই নির্বাচনকে ভুল বলে মনে করেন।

বিচার-বহির্ভূত হত্যা
সংবিধান জীবনের সুরক্ষা ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিলেও অনেক প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে, সরকার ও তার প্রতিনিধিরা নির্বিচারে বা বেআইনিভাবে হত্যা করেছে। সরকার এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ নাম দেওয়ায় গণমাধ্যমও এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করে আসছে। যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ হত্যাকাণ্ডগুলোকে বিচার-বহির্ভূত হত্যকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

গুম

মানবাধিকার সংগঠন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গুম ও অপহরণ অব্যাহত রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই বিষয়গুলো প্রতিরোধ বা তদন্তের জন্য সরকার তেমন কিছুই করে না। গুম হওয়ার পর কয়েকজনকে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। আবার কিছু ক্ষেত্রে গ্রেফতার দেখানো হয়। কাউকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং কখনো কখনো খুঁজে না পাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বলা হয় যে, প্রতি বছর ৬০টির মতো গুমের ঘটনা ঘটছে।

অমানবিক নির্যাতন

যদিও সংবিধান নির্যাতন ও অমানবিক শাস্তিকে বৈধতা দেয় না, তারপরও র‍্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ দিয়ে হরহামেশাই এ ধরনের নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে দাবি করে আসছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। সাধারণত জঙ্গি ও রাজনৈতিক বিরোধী দলগুলোর সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এ ধরনের নির্যাতন চালায়।

নিরাপত্তা বাহিনী হুমকি, মারধর, বৈদ্যুতিক শক, কখনো কখনো ধর্ষণ ও যৌন হেনস্তা করে থাকে বলে দাবি করে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনী নিষ্ঠুর নির্যাতন করে ১২ জনকে হত্যা করেছে।

গ্রেফতার বা আটক
সংবিধানে নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটক রাখা নিষিদ্ধ। কিন্তু ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিচারকের আদেশ বা পরোয়ানা ছাড়াই একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও আটক করার অনুমতি দেয়। গ্রেফতারের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করতে এই আইনের ব্যবহার হয়ে থাকে। সংবিধান আদালতকে তার গ্রেফতার বা আটকাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার অধিকার দেয়। তবে সরকার সাধারণত এগুলো মানে না।

রাজনৈতিক বন্দী
রাজনৈতিক কারণে প্রায়ই বিরোধী দলের সদস্যদের গ্রেফতার ও আটক করা হচ্ছে। সাধারণত জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিকে কারণ দেখিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিরোধী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বলেছে যে, তাদের সদস্যদেরকে ইচ্ছামতো গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট উদাহরণ দিতে পারেনি দলটি।

গোপনীয়তা লঙ্ঘন
আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত নথির ওপর হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ নয়। গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে কারো ব্যক্তিগত যোগাযোগ যাচাই-বাছাই করে পারে। খুব কম ক্ষেত্রে পুলিশ আদালতের কাছ থেকে ব্যক্তিগত নথিপত্রের নজরদারি করার অনুমতি নিয়ে থাকে। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলো পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সকে (ডিজিএফআই) অবহিত করেছিল যে, নাগরিকদের নজরদারির জন্য তাদের নিযুক্ত করেছে সরকার।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব

সংবিধান মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু সরকার কখনো কখনো এই অধিকারকে সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতা ছিল।

সরকার বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ওপর সম্পাদকীয় নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। বেসরকারি চ্যানেলগুলো বিনা মূল্যে সরকারি বিষয় সম্প্রচার করে।

দুর্নীতি ও স্বচ্ছতার অভাব
দুর্নীতি ছিল একটি গুরুতর সমস্যা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম আট মাসে ২ হাজার ৭০৪ টি মামলার মধ্যে ১৬৪টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ও ৫৪ জন নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা এবং রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ৩৬০টি মামলা হাইকোর্টে স্থগিত রাখা হয়েছিল, যার অগ্রগতি হয়নি।

এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত