আপডেট :

        সিলেট নগরীতে ২১ এপ্রিল থেকে কোভিডের ৩য় ও ৪র্থ ডোজ প্রদান করা হবে

        বৃহস্পতিবার কুশিয়ারা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়

        প্রথম পতাকার নকশাকারদের অন্যতম শিব নারায়ণ দাশের মৃত্যু

        নদী পেরিয়ে টেকনাফে আশ্রয় নিলেন বিজিপির আরও ১৩ সদস্য

        ইসরায়েলের রাতভর হামলায় তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি

        বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ফরিদপুর জেলা সড়ক নিরাপত্তার কমিটির সভা

        মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে: ওবায়দুল কাদের

        দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামলো

        নিখোঁজ হওয়ার পরদিন নদীর তীরে স্কুলপড়ুয়া শিশুর লাশ পাওয়া গেলো

        খোলা তেলের দাম কমলেও, দাম বাড়লো বোতলজাত সয়াবিন তেলের

        দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে অসংখ্য শিশুরা

        শিশুখাদ্য সেরেলাকে বাড়তি চিনি পাওয়া গেছে বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়

        ফ্রান্সে শুটিং সেটে আহত অভিনেতা প্রিয়াঙ্কা

        জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত পাওয়া এমভি আবদুল্লাহর ২১ নাবিক ফিরছেন দেশে

        জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত পাওয়া এমভি আবদুল্লাহর ২১ নাবিক ফিরছেন দেশে

        দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহযোগিতায় সমঝোতা সইয়ের প্রস্তাব

        আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের ১৮তম লোকসভার নির্বাচন

        আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মধ্যরাত ১ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকবে

        ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির ঘটনা প্রবাহের নজর রাখার নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

        প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

হযরত আবু বক্কর (রাঃ) এর ক্ষুধার কাহিনী

হযরত আবু বক্কর (রাঃ) এর ক্ষুধার কাহিনী

প্রচন্ড রোদের মধ্যে হযরত আবু বকর (রাঃ) তাঁর ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন। মসজিদ-ই-নববীর দিকে হাঁটতে শুরু করলেন আবু বকর (রাঃ)। পথেই দেখা হয়ে গেল উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এর সাথে।


আবু বকরকে জিজ্ঞেস করলেনঃ
– “এই গরমের মধ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসলেন যে!”
– “কি করবো? দুঃসহ ক্ষুধা তাড়িয়ে নিয়ে এসেছে আমাকে বাড়ি থেকে।”
– “হে আবু বকর, আমি নিজেও যে একই কারণে ঘর থেকে বের হয়ে এসেছি।”


দুজনে কথা বলতে বলতে এগিয়ে গেলেন। হঠাৎ দেখলেন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগিয়ে আসছেন তাঁদের দিকে। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই কথা তুললেন,


– “কি ব্যাপার? এই অসময়ে কোথায় যাচ্ছ তোমরা?”
– “ইয়া রাসুলুল্লাহ! ক্ষুধার কষ্টই আমাদের বাড়ি থেকে বের করে এনেছে।’
– “সেই পবিত্র স্বত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমিও যে একই কারণে বের হয়ে এসেছি ঘর থেকে। চলো সামনে এগিয়ে যাই।


তিনজন মিলে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছলেন আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রাঃ) এর বাড়িতে। আবু আইয়ুব (রাঃ) এর স্বভাব ছিল প্রতিদিন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য খাবার তৈরী করে অপেক্ষা করা। তিনি সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না এলে বাড়ির সবার সাথে সেই খাবার ভাগাভাগি করে খেতেন আবু আইয়ুব।


সেদিনও অপেক্ষা করছিলেন তিনি। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবারের সময় না আসায় তিনি সবাইকে নিয়ে খাওয়া শেষ করে ফেলে বাহিরে গিয়েছিলেন। খাবার শেষ হয়ে গেছে। আর রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর দুই সঙ্গীকে নিয়ে এলেন। তিনি হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) এর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন,


“আবু আইয়ুব কোথায় গিয়েছে?”
– স্ত্রী জবাব দিলেন, “বাহিরে গিয়েছে। এখুনি এসে পড়বে।”


এই অবস্থায় আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রাঃ) এসে একছড়া কাঁচা-পাকা-আধাকাঁচা খেজুর নিয়ে এলেন। রসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ


 “এতো খেঁজুর আনলে কেন? শুধু পাঁকা খেঁজুর আনলেই পারতে।”

-তিনি বললেনঃ “সব ধরণের খেঁজুর পেশ করেছি যেটা ভালো লাগে গ্রহন করবেন। অনেক সময় পাঁকা খেজুরের থেকে আধাপাঁকা খেঁজুর মজা লাগে।”


তিনি তাড়াতাড়ি একটি বকরী জবাই করে তা কিছু গোশত আগুনে ঝলসালেন আর বাকিটুকু ভুনা করার ব্যবস্থা করলেন। তাঁর স্ত্রী রুটি বানিয়ে ফেললেন ইতিমধ্যে। মেহমানদের সামনে খাবার পরিবেশন করা হলো এক সময়ে। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেতে নিয়ে থেমে গেলেন হঠাৎ। তারপর একটি রুটির উপরে কিছু ভুনা গোশত রেখে সেটি আবু আইয়ুব আনসারী’র হাতে দিয়ে বললেন, “একটু আমার মেয়ে ফাতিমার কাছে দিয়ে এসো এই খাবার। অনেক দিন হয় আমার মেয়ে এমন খাবার খেয়েছে।”


আবু আইয়ুব আনসারী ফাতিমা (রাঃ) খাবার দিয়ে ফিরে এলেন। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দুই প্রিয় সাথীকে নিয়ে খাবার খেলেন। খাবার শেষে খাবারের দিকে তাকিয়ে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “রুটি, গোশত, খুরমা, পাকা ও আধ-পাকা খেজুর!” এইটুকু বলতেই গলা ধরে এলো তাঁর। দু’চোখ ভর্তি পানি নিয়ে আবার কথা বললেন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম,


“মহিমান্বিত আল্লাহ পাকের শপথ, এইসবই হচ্ছে সেই নিয়ামত – যার বিষয়ে তোমাদেরকে কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে।” অতঃপর তিনি পড়লেনঃ

ثُمَّ لَتُسـَٔلُنَّ يَومَئِذٍ عَنِ النَّعيمِ★
“এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।” [সুরা তাকাসুরঃ ৮]


এত কষ্টের পর খাবার খেয়ে হিসেবের কথা শুনে সাহাবীগণ অবাক হয়ে বললেনঃ “এই খাবারেরও হিসেব দেয়া লাগবে?” রসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “তোমরা যখন কোন নিয়ামত গ্রহণ করার জন্য হাত বাড়াবে, তখন ‘বিসমিল্লাহ’ ( ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ) বলবে। তারপর তৃপ্তি নিয়ে খাবার শেষ করার পরে
বলবে – আল’হামদুলিল্লাহিল্লাযি হুয়া আশবা’আনা ওয়া আন’আমা ‘আলাইনা ওয়া আফদ্বালা’
( ﺍﻟﺤﻤﺪ ﻟﻠﻪ ﺍﻟﺬﻱ ﻫﻮ ﺃﺷﺒﻌﻨﺎ ﻭﺃﻧﻌﻢﻋﻠﻴﻨﺎﻭﺃﻓﻀﻞ )

অর্থঃ “সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাকের যিনি আমাদেরকে পরিতৃপ্ত করেছেন এবং আমাদেরকে নিয়ামত দান করেছেন যা অনেক উত্তম।”


তাহলে এই দুয়া আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য যতেষ্ট হবে।

— আল্লাহ রহম করুন — আমিন–আলহামদুলিল্লাহ


[#সুত্রঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীস থেকে। হায়াতুস সাহাবাঃ খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৫১৫ – ৫১৮ আত তারগীব ওয়াত তারহীব, জাকিউদ্দিন আব্দুল আযীম আল-মুনযিরি (রহিমাহুল্লাহ) সুওয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবাঃ খন্ড ১, পৃষ্ঠা ১২৪ – ১৩০]

 

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর