বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ফরিদপুর জেলা সড়ক নিরাপত্তার কমিটির সভা
নির্বাচনী ইশতেহার লঙ্ঘন করে লস এঞ্জেলেসে প্রেসক্লাব নির্বাচন
ভোটার ৪ জন, ভোট দিয়েছেন ১২ জন!
লস এঞ্জেলেসে লিটল বাংলাদেশ প্রেসক্লাব নির্বাচন নিয়ে প্রবাসী কমিউনিটিতে অসন্তোষ ও বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গত রবিবার বিকেলে স্থানীয় আপন বাজার মিলনায়তনে নবগঠিত লিটল বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিয়ে মিটিংয়ে হঠাৎ করে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তৎক্ষণাৎ ভোট গ্রহণ শেষে কমিটিও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই কমিটি গঠন নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ব্যক্তি বিশেষের স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে এই কমিটি গঠিত হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, লস এঞ্জেলেসে দীর্ঘদিন ধরে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করে আসছেন। এখানে অনেক বাংলা ভাষাভাষি মিডিয়া এবং দেশের বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাংবাদিক রয়েছেন। কিন্তু এতদিন কমিউনিটিতে কেনো প্রেসক্লাব গড়ে উঠেনি। প্রবাসীরা প্রয়োজনে কোনো সংবাদ সম্মেলন করতে চাইলে কোনো প্লাটফর্ম ছিলো না। তাই একটি প্রেসক্লাবের খুবই প্রয়োজন ছিলো কমিউনিটির। সম্প্রতি প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে একটি প্রেসক্লাব গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ উদ্দেশ্যে একটি আহ্বায়ক কমিটিও গঠিত হয়। তাদের মাধ্যমে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
উক্ত কমিশন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে। এতে বলা হয়- ১৭ ডিসেম্বর-৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত ভোট সংক্রান্ত কারণে সদস্য পদ গ্রহণ করা হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৭ জানুয়ারি ২০১৮। মনোনয়নপত্র বিতরণ ৭ জানুয়ারি-১৪ জানুয়ারি ২০১৮। মনোনয়নপত্র দাখিল ২১ জানুয়ারি। মনোনয়ন প্রত্যাহার ২৮ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করা হবে ৩১ জানুয়ারি ২০১৮। এবং ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুর ১২টা-বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচনে ভোট গ্রহণের কথা ছিলো।
কিন্তু গত রবিবার অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে এই ইশতেহারের কিছুই মানা হয়নি। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের কথা থাকলেও হঠাৎ মিটিং ডেকে উপস্থিতিদের নিয়ে ভোট গ্রহণ করা হয়। মিটিং সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে মাত্র ৪ জন সাংবাদিক সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভোট প্রদান করেন ১২ জন। নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী সদস্য ফরম নিয়ে সদস্য হওয়ার কথা থাকলেও ৪ জনের বেশি তা করেননি। এছাড়া উপস্থিত অন্যদের মধ্যে অনেকেই ভিজিটর ছিলেন। তারাও ভোট দেন। এজন্য কমিউনিটিতে এই নির্বাচন নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসীরা বলছেন, যেখানে সৃজশীলতার চর্চা হওয়ার কথা, প্রেসক্লাবের মতো সংগঠনে এরকম একটি নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলছেন, ব্যক্তি বিশেষের স্বার্থে একরকম একটি ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে সুষ্ঠু একটি নির্বাচনের লক্ষ্যে পূর্ণ ইশতেহার শিডিউল করা ছিলো সেখানে হঠাৎ করে এরকম কমিটি গঠন কোনোভাবেই কাম্য নয়। এটি নিছক লোক দেখানো নির্বাচন। এরকম হলে তারা নির্বাচন না দিলেও পারতেন।
কমিটি গঠনের পর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদকে বানোয়াট বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসক্লাব সংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, মানুষকে মিটিংয়ের কথা বলে ডেকে এনে হঠাৎ করে ভোট আয়োজন কোনো নির্বাচন হতে পারে না। উপস্থিত অনেকে কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা এই কাজ সম্পন্ন করে।
অনেক খ্যাতনামা মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এই ঘটনার পর লিটল বাংলাদেশ প্রেসক্লাব থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন।
এলএবাংলাটাইমস/এলএ/এলআরটি
শেয়ার করুন