আপডেট :

        স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে সিকৃবিতে আলোচনা সভা

        বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্বাস করে না: ওবায়দুল কাদের

        বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্বাস করে না: ওবায়দুল কাদের

        বিচারকবিহীন আদালত

        বাংলাদেশের গণতন্ত্র এগিয়ে নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার

        সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনের মৃত্যু

        জাতীয় ছাত্র সমাজের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

        দ্বিতীয় টেস্টে নেই হাথুরু

        ‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা ২০২৪’

        গাজায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

        আত্মনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করতে হবে: সিসিক মেয়র

        রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

        মস্কো কনসার্ট হামলায় পশ্চিমা বিশ্ব ও ইউক্রেনের ইন্ধনের অভিযোগ রাশিয়ার

        র‍্যাবের পৃথক অভিযান, ১২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

        পদ্মা সেতুতে ভুটানের রাজা

        মার্কিন কূটনীতিককে তলব

        স্বাধীনতা দিবস বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের ফসল: প্রতিমন্ত্রী

        সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে: সংসদ স্পিকার

        বাল্টিমোর সেতু দুর্ঘটনা ভয়াবহ: বাইডেন

        মুক্তিযোদ্ধাদের ‘মুজিব কোট’ উপহার দিলো প্রশাসন

সরকারের হুমকিতে দেশ ছেড়েছি: বই লিখে মুখ খুললেন এসকে সিনহা

সরকারের হুমকিতে দেশ ছেড়েছি: বই লিখে মুখ খুললেন এসকে সিনহা

বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটি আত্মজীবনীমূলক বই প্রকাশ করেছেন যেখানে তিনি দাবি করছেন তাকে সরকারের চাপ এবং হুমকির মুখে দেশত্যাগ করতে হয়েছে।

বিচারপতি সিনহার বই 'এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেমোক্রেসি" মাত্রই প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি এখন আমাজনে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।

এই বইতে বিচারপতি সিনহা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন কোন পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়েছিল, এবং কিভাবে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়, এবং তারপর কেন তিনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন।

তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের মুখে তিনি দেশে ছেড়েছেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এ নিয়ে বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাতকারও দিয়েছেন। গত বছরের নানা নাটকীয় ঘটনাবলীর পর কোন গণমাধ্যমে এটিই ছিল তার প্রথম সাক্ষাৎকার।

বিচারপতি সিনহা দাবী করছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়টি যেন সরকারের পক্ষ যায়, সেজন্যে তার ওপর 'সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে চাপ তৈরি করা হয়েছিল।'

বিচারপতি সিনহার বই-এর একটি মুখবন্ধ রয়েছে যাতে তিনি সংক্ষেপে "বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের দ্বন্দ্ব" বর্ণনা করেছেন এবং তার ভাষায় কী পরিস্থিতিতে তিনি প্রধান বিচারপতির পদ ত্যাগ করে বিদেশে গিয়েছিলেন তা লিখেছেন।

২০১৭ সালে মি. সিনহার পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল সংবিধানের ১৬শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত একটি মামলার আপীলের রায়কে কেন্দ্র করে। রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে বিচারপতি সিনহা দেশ ছেড়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।

আমাজনে প্রকাশ করা বইটিতে "বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের দ্বন্দ্বের বিস্তারিত বর্ণনা এবং আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার" পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আছে বলে বিচারপতি সিনহা ভুমিকায় উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের পার্লামেন্টে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের ইমপিচ করার ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে পার্লামেন্টের সদস্যদের দেবার পর ২০১৬ সালের ৫ই মে হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি বিশেষ বেঞ্চ ওই সংশোধনীকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়। সরকার এর বিরুদ্ধে আপীল করে, এবং সাত সদস্যের একটি বেঞ্চে আপীলের শুনানী হয়।

বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার বইতে লেখেন, "জুলাইয়ের ৩ তারিখ প্রধানবিচারপতি হিসেবে তার সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ আপীল খারিজ করে হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় বহাল রাখে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের ১ তারিখ সর্বসম্মত রায়ের পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়।"

সেখানে তিনি লেখেন, "ওই সিদ্ধান্তের পর সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাব পাস করে - যাতে সেই রায়কে বাতিল করার জন্য আইনী পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়।" এখানে বইটির মুখবন্ধের কিছু অংশের অনুবাদ দেয়া হলো।

মি. সিনহা লেখেন, "প্রধানমন্ত্রী এবং তার দলের অন্যান্য সদস্য ও মন্ত্রীরা পার্লামেন্টের বিরুদ্ধে যাবার জন্য আমার কঠোর নিন্দা করেন। প্রধানমন্ত্রী সহ ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা আমার বিরুদ্ধে অসদাচরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ এনে বদনাম করতে শুরু করেন।"

"আমি যখন আমার সরকারি বাসভবনে আবদ্ধ, আইনজীবী এবং বিচারকদের আমার সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছিল না, তখন সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় - আমি অসুস্থ. আমি চিকিৎসার জন্য ছুটি চেয়েছি।"

"একাধিক মন্ত্রী বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবো।"

"অক্টোবরের ১৪ তারিখ, যখন আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হই - তখন একটি প্রকাশ্য বিবৃতিতে আমি পরিস্থিতি স্পষ্ট করার চেষ্টায় একটি বিবৃতি দেই যে আমি অসুস্থ নই এবং আমি চিরকালের জন্য দেশ ছেড়ে যাচ্ছি না।"

"আমি আশা করছিলাম যে আমার প্রত্যক্ষ অনুপস্থিতি এবং আদালতের নিয়মিত ছুটি - এ দুটো মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সহায়ক হবে, এবং শুভবুদ্ধির উদয় হবে, সরকার ওই রায়ের যে মর্মবস্তু - অর্থাৎ বিচারবিভাগের স্বাধীনতা যে জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর - তা বুঝতে পারবে।"

"শেষ পর্যন্ত দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা - যার নাম ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স - তাদের ভীতি প্রদর্শন এবং আমার পরিবারের প্রতি হুমকির সম্মুখীন হয়ে আমি বিদেশ থেকে আমার পদত্যাগপত্র জমা দেই।"

মি. সিনহা লেখেন, তার এ বইতে তার ব্যক্তিগত ও বিচার বিভাগে কর্মজীবনের কথা, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি চ্যালেঞ্জসমূহ, বিচারবিভাগ ও রাজনীতিবিদদের মূল্যবোধের অবক্ষয়, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, পুলিশে বাড়াবাড়ি, জরুরি অবস্থার প্রভাব, এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডিজিএফআইয়ের অর্থ আদায়ের বিবরণ আছে।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর