আপডেট :

        হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার

        সরকারি ব্যাংকের ছয় উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে অন্য ব্যাংকে বদলি করা হয়েছে

        ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৫ দিন পর কবর থেকে এক ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ তুলা হলো

        মেটার রে-ব্যান স্মার্ট রোদচশমা,করা যাবে ভিডিও কল

        পানিসংকটের শঙ্কা ও শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে পূর্বনির্ধারিত গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল

        শেয়ারবাজারের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

        বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী মেলায় ৮০ কেজি ওজনের মাছ, ১০ কেজি ওজনের মিষ্টি

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী মেলায় ৮০ কেজি ওজনের মাছ, ১০ কেজি ওজনের মিষ্টি

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় একটি ৮০ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছের দাম ১ লাখ টাকা হাঁকা হয়েছে। তবে মাছটি কেউ এককভাবে কিনতে পারেননি। পরে তা কেটে বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়াও মেলায় ২০ থেকে ৭০ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছ, দুই থেকে ৪ কেজি ওজনের মিষ্টি পর্যন্ত বেচাকেনা হয়েছে।

বুধবার বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় এসব বিক্রি হয়েছে। মাছ ও মিষ্টির জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠা এই মেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। বেলা গড়াতে থাকার সাথে সাথে মেলায় ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেলের দিকে মেলা পরিণত হয় জনারণ্যে। মেলার পাশের সড়কগুলো কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট দেখা দেয়।

গাবতলীর চকমড়িয়া গ্রামের ভোলা মিয়া, আবুল কাশেম, লাল মিয়া, আবদুল জলিল, মোস্তাক হোসেনসহ পাঁচ ছয় জন মাছ ব্যবসায়ী জানান, যমুনা নদীর ৭০ কেজি ওজনের বাঘাইড় কেটে বিক্রি করছেন ১২শ টাকা কেজি দরে। আর ৮০ কেজি ওজনের বিশাল আকৃতির মাছটি বিক্রির জন্য  দাম হাঁকা হয়েছে ১২শ ৫০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও এই মেলায় ১৭ কেজি ওজনের বোয়াল মাছের দাম হাঁকা হয়েছে প্রতি কেজি ১৬শ টাকা, ১৫ থেকে ১৮ কেজি ওজনের কাতলা মাছ ২২শ টাকা কেজি, ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের কাতলা মাছ ১২শ টাকা, ১০ কেজির উপরে আইড় মাছ ১২শ থেকে ১৫শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রুই, পাঙ্গাসসহ অন্যান্য জাতের মাছ উঠেছে মেলায়।

গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ইছামতির নদীর তীরে পোড়াদহ এলাকায় বুধবার দিনব্যাপী বসেছিল প্রায় চারশ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা।

পাশাপাশি খেলনা, কসমেটিক সামগ্রীসহ বরই ও নানান পসরা নিয়ে বসেছে দোকানিরা। সেই সঙ্গে ছিল নাগরদোলাসহ গ্রামীণ নানা ধরনের খেলার আয়োজন।

মেলার উদ্যাক্তাদের একজন মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের মাঘ মাসের শেষ বুধবার প্রথমদিকে সন্নাসী মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এই মেলা। কালের বিবর্তনে মেলা হয়ে ওঠে পূর্ব বগুড়াবাসীর মিলনমেলা। পোড়াদহে এ মেলা বসে বলে নাম হয়ে যায় পোড়াদহ মেলা। আবার অনেকেই এটাকে জামাই মেলা বলেও অভিহিত করেন। মেলাকে ঘিরে আশপাশে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে। এ কারণে স্থানীয়রা আবার এ মেলাকে জামাই মেয়ে বলে থাকে।

মেলার জন্য ১০ কেজি ওজনের মাছ আকৃতির মিষ্টি তৈরি করেছেন ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ। মহিষাবান এলাকার ব্যবসায়ী লতিফের দোকানে এ মিষ্টির দাম হাঁকানো হয়েছে ৪ হাজার টাকা। এছাড়া এক কেজি, দুই কেজি, ৩ কেজি, ৪ কেজি ওজনের মিষ্টিও মেলায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। ২শ মণ মিষ্টি রয়েছে এ দোকানে।

এ মেলায় মাছ, মিষ্টি, ফার্নিচার, বড়ই, পান-সুপারি, তৈজসপত্র, খেলনা থাকলেও কালক্রমে মাছের জন্য বিখ্যাত হয়ে আসছে। মেলায় নাগরদোলা, চরকি, সার্কাসসহ শিশুদের জন্য অন্যান্য খেলা চলছে।

মেলায় মাছ ক্রয় করতে আসা বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী রাশেদুল আলম জানান, তিনি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ৮ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ প্রতি কেজি ১২শ টাকা দরে কিনেছেন।

স্থানীয় লুৎফর রহমান সরকার স্বপন জানান, হাজার হাজার মানুষের পদচারণা হয়ে থাকে এ মেলায়। জামাই মেয়েসহ আত্মীয় স্বজনদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।

এলাকার অন্যতম প্রবীণ মোখলেছুর রহমান জানান, মেলাস্থল পোড়াদহের ইছামতি নদীর তীরে ছিল একটি বিশাল বটগাছ। বটগাছটি এক সময় মরে যায়। সেখানে একদিন হঠাৎ এক সন্ন্যাসীর আবির্ভাব ঘটে। পরে সেখানে আশ্রম তৈরি করেন সন্ন্যাসীরা। কথিত আছে সেখানে সন্ন্যাসীদের সাধনার ফলে মৃত বটগাছটি জীবিত হয়। পরে স্থানটি পূণ্যস্থানে পরিণত হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে। সেই থেকে প্রতি বছর মাঘের শেষ বুধবার সেখানে মেলা বসে।

স্থানীয়দের সঙ্গে বখা বলে আরও জানা যায়, প্রতিবছর মাঘের শেষ বুধবার ওখানে সন্ন্যাসী পূজার আয়োজন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। সমাগত হন দূর-দূরান্তের ভক্তরা। কালের আবর্তে স্থানটিতে লোকজনের উপস্থিতি বাড়তেই থাকে। এভাবে গোড়াপত্তন ঘটে পোড়াদহ মেলার। ধীরে ধীরে ধর্মের গণ্ডি পেরিয়ে সব ধর্মের মানুষের মেলবন্ধনে পরিণত হয়েছে এই মেলা।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর