আপডেট :

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

        বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ বুধবার রাজধানী ঢাকা শীর্ষ ১০ এর বাইরে

        লোহিত সাগরের জিবুতি উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবি

        থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রাজধানী ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

        গোলাপি চাঁদের দেখা মিলবে রাতে

        ২ হাজার ডলার দাম কমলো টেসলা গাড়ির

        যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

শাজাহান খানকে নিয়ে সংসদে প্রশ্ন, জবাব দিলেন ওবায়দুল কাদের

শাজাহান খানকে নিয়ে সংসদে প্রশ্ন, জবাব দিলেন ওবায়দুল কাদের

সড়কে দুর্ঘটনা রোধ ও সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সুপারিশমালা প্রণয়নে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে প্রধান করে রোববার গঠিত কমিটি নিয়ে জাতীয় সংসদে প্রশ্ন ওঠে। এ নিয়ে সংসদে পাল্টা জবাব, প্রতিবাদ ও কৈফিয়ত প্রদানের ঘটনা ঘটে। শাজাহান খান প্রশ্নকর্তার বক্তব্য এক্সপাক্স ও প্রত্যাহার দাবি করেন।

সোমবার প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম এই প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, ‘বদিকে দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ, শাজাহান খানকে দিয়ে সড়ক নিয়ন্ত্রণ। গতবার শাজাহান খানের একটা হাসি নিয়ে কতকিছু ঘটলো।সেই শাজাহান খানকে প্রধান করে গঠিত কমিটি সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কতটা সক্ষম হবে?’

জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যক্তি অতীতে তার কোন স্মিত হাসীর জন্য কোন সদস্যার উদ্ভব হয়েছে সেটা আমি দেখতে চাইনা।আমি দেখবো এই কমিটি সুপারিশমালা এবং রিপোর্টটি কিভাবে পেশ করে সেটা।

এদিকে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালে শাজাহান খান সম্পর্কে প্রশ্নের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারি দলের অপর সদস্য শামীম ওসমান বলেন, ‘শাজাহান খান একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। উনার হাসির জন্য ঘটেছে নাকি এদেশে কেই কিছু ঘটিযেছে সে বিষয়ে আলোচনার কিছু আছে।

প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে ব্যক্তিগত কৈফিয়তের বিধিতে ফ্লোর নিয়ে শাজাহান খান ইয়াবা ব্যবসার সাথে সড়ক দুর্ঘটাকে মিলিযে তার সম্পর্কে প্রশ্ন তোলাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিত আখ্যায়িত করে বক্তব্যের প্রতিবাদ ও এক্সপাঞ্জের দাবি জানান। পরে শাজাহান খান মাইক ছাড়াই বক্তব্যটি এক্সপাঞ্জের বিষয়ে স্পিকারে দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করলে স্পিকার বলেন, আপনি বসেন, বিষয়টি আমি দেখবো।

বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল ইমমের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোববার রাজধানীর বনানীতে নবনির্মিত বিআরটিএ ভবনে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়।সেখানে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও কয়েকজ মন্ত্রীও ছিলেন।

তারা নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে এসেছেন। পরিবহন সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দও ছিলেন। সড়ক বিশেষজ্ঞরাও যেমন ইলিয়াছ কাঞ্চন, সৈয়দ আবুল মকসুদ এবং রিলেটেড মিনিষ্ট্রির সচিব কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা, ডিআইজি হাইওয়ে সকলের উপস্থিতিতে আমরা নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা করেছি সেখানে আমরা সাম্প্রতিককালে বিগত শেখ হাসিনার সময়ে যে সড়ক পরিবহন আইন পাস হয়েছিল এই আইন বাস্তবায়নের কিছু বিধি প্রবিধি প্রণয়নের বিষয়ে ফেডারেশন নেতৃবৃন্দের এবং শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা স্বরাষ্ট্র, আইন ও রেলপথ মন্ত্রীকে দিয়ে আমরা একটি কমিটি করেছি। সেখানে আরেকটা কমিটি আমরা করেছি সেটা হলো সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপারে একটি সুপারিশমলা/ রিপোর্ট তৈরী করার জন্য ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটা আমরা গঠন করেছে।

সেখানে জনাব শাজাহান খানের নামটি প্রস্তাব করা হয়েছিল। তার বিরোধীতা আমি যাদের কথা বললাম ওখানে কেউই প্রস্তাবের বিরোধীতা করেননি। তার নেতৃত্বে আরও ১৫ জন কমিটিতে আছেন। আমি এখানে ব্যকিত দেখবনা। ব্যক্তি অতীতে তার কোন স্মিত হাসীর জন্য কোন সদস্যার উদ্ভব হয়েছে সেটা আমি দেখতে চাইনা। আমি দেখবো এই কমিটি যে সড়ক দুর্ঘটনা নিযন্ত্রনে সড়কের পরিবহনে শৃংখলা আনয়নে তারা সবাই মিলে সুপারিশমালা এবং রিপোর্টটি কিভাবে পেশ করে, কিভাবে তৈরী করে সেটার ভিত্তিতেই আমরা পরবতী কার্যক্রম গ্রহন করবো। এখানে ব্যক্তি কোন বিষয় না। একজনইতো রিপোর্টটি প্রণয়ন করবেন না। এখানে যেহেতু তিনি অভিজ্ঞ মানুষ সেজন্য তার নামটি এখানে প্রস্তাব করা হয়েছে। দেখুন না মাননীয় সংসদ সদস্য এখান থেকেআপনি যতটানা আশা করছেন তার থেকেও ভালো রিপোর্ট ও প্রস্তাবওতো আসতে পারে।

পরে সম্পূরক প্রশ্ন করতে গিয়ে সরকার দলীয় এমপি শামীম ওসমান এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘শাজাহান খান একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। উনার হাসির জন্য ঘটেছে নাকি এদেশে কেই কিছু ঘটিযেছে সে বিষয়ে আলোচনার কিছু আছে। সুতরাং এই বিষয়টার প্রতিবাদ জানাই।

প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ শাজাহান খান কার্যপ্রনালী বিধির ২৭৪ বিধিতে ব্যক্তিগত কৈফিয়ত দিতে ফ্লোর নিয়ে ফখরুল ইমামের প্রশ্ন তোলাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিত আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, তিনি মাদক ব্যবসাও দুর্ঘটনাকে এক সাথে দাড় করিয়ে আমার সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত দু:খজনক নিন্দনীয় এবং আমি তার এই বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা জানাই।

তিনি বলেন, আমি মনে ফখরুল ইমাম সাহেব আজকে যে কথাটা বললেন, আবার একদিন তাকে এখানে দাড়িয়ে বলতে হবে-তার এই মন্তব্য কত বড় ভুল এবং ভ্রান্ত উদ্দেশ্য প্রনোদিত তা তকে বলতে হবে। উনারাওতা ক্ষমতায় ছিলেন, সড়ক পরিবহন সেক্টরটাই অত্যন্ত সেনসেটিভ এবং বিশৃংখল অবস্থা বহু আগ থেকেই। চেয়ে এখন শৃংখলা ফিরে এসেছে। আমি ১৯৭২সাল থেকে পরিবহন সেক্টর নয়, আমি শ্রমিক রাজনীতি করি, ট্রেড ইউনিয়ন রাজনীতি করি। তিনি গার্মেন্টস সেক্টরে জ্বালাও পোড়াও বন্ধে তাকে দায়িত্ব দেয়ার কথা উল্লেক করে বলেন, এরপর গার্মেন্টেসে জ্বালাও পেড়াও হয়নি।

তিনি তার আন্দোলন সংগ্রাম ও দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করে বলেন, দুর্ঘটনা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে যদি কেউ বলেন, তাহলে এটা ভুল ধারণা। দুনিয়ার কোন দেশ নেই যে দেশে কমবেশি দুর্ঘটনা না ঘটে। আমাদের এখানে দুর্ঘটনা অনেক কমে গেছে। দুর্ঘটনা কমাতে কাউন্সিলের সভা সেখানে শতাধিক যারা উপস্থিত ছিলেন কেউতো প্রতিবাদ করলেন না আমাকে সভাপতি করার জন্য। আমি মনে করি ফখরুল ইমাম সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা এক্সপাঞ্জ করা হোক অথবা তাকে তার বক্তব্য প্রতাহারের আহবান জানাচ্ছি।

পরে শাজাহান খান আবারো মাইক ছাড়াই বক্তব্যটি এক্সপাঞ্জ করার ব্যাপারে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করলে স্পিকার বলেন, আপনি বসেন, বিষয়টি আমি দেখবো।

প্রসঙ্গত, সারাদেশের সড়ক দুর্ঘনা রোধ ও সড়কে শৃংখলা রক্ষায় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খানের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। রোববার রাজধানীর বনানীতে নবনির্মিত বিআরটিএ ভবনে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ফ্লাইওভারেও হামাগুড়ি দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে : সরকারি দলের সদস্য সাইফুজ্জামানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ডিভাইডারই একমাত্র সমাধান নয়। এখানে চালক, পথচারী ও যাত্রীদের সচেতনতাও জরুরি। কারণ রাস্তায় দেখা যায় ফুটওভার ব্রীজ থাকার পরেও ডিভাইডার দিয়ে লাফ দিয়ে মানুষ রাস্তা পার হচ্ছেন। মহিলারা বাচ্চা কোলে নিয়ে রাস্তা পার হয়। এমনকি ফ্লাইওভারের এপাশ থেকে ওপাশে হামাগুড়ি দিয়ে মানুষ পার হচ্ছে। মানুষ সড়কে শৃঙ্খলা মানছে না। মানুষের বিবেকটা এখানে খুব জরুরি। সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটি কমিটিও করা হয়েছে।

একই প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্য যারা ঢাকার রাস্তায় চলাচল করেন তারা দেখবেন মানুষ মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছেন। এরমধ্যে গাড়ি এসে চাকায় পিষ্ট করে দিচ্ছে। এখানে কী শুধু চালককে দায়ী করবেন? অনেক গাড়িচালক ট্রাফিক সিগনাল মানেন না। ভিআইপি হয়ে অনেকে রং সাইডে গাড়ি নিয়ে যান। এটা ঠিক নয়। ভিআইপিরা তো অসাধারণ, তারা যদি রং সাইডে চলেন তাহলে সাধারণ মানুষ কেন রং সাইডে যাবে না! মন্ত্রী জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে তার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, সকল মহাসড়কে ফোরলেনের পাশাপাশি বাইলেন ও ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে। সড়ক মন্ত্রণালয় সেইভাবেই কাজ করছে।

শহিদ ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের সংসদকে জানান, প্রধানমনত্রীর নির্দেশনায় বিশেষ উদ্যোগে চলমান ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রান্সজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের উত্তরা ৩য় পর্ব থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত সম্পূর্ণ অংশ ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের নিমিত্ত সংশোধিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সংশোধিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে চলছে।

একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে উত্তরা ৩য় পর্ব থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৬ স্টেশন বিশিষ্ট উভয়দিকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম আধুনিক, সময় সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ চালিত এলিভেটেড ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট নির্মাণের লক্ষ্যে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) বা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২-২০২৪ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করা হয়। এটা একটি ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্প। তিনি আরও জানান, প্রাক্কলিত মোট প্রকল্প ব্যয় ২১ লাখ ৯৮ হাজার ৫০৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। যার মধ্যে জিওবি ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ও প্রকল্প সাহায্য (পিএ) ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর