আপডেট :

        হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার

        সরকারি ব্যাংকের ছয় উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে অন্য ব্যাংকে বদলি করা হয়েছে

        ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৫ দিন পর কবর থেকে এক ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ তুলা হলো

        মেটার রে-ব্যান স্মার্ট রোদচশমা,করা যাবে ভিডিও কল

        পানিসংকটের শঙ্কা ও শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে পূর্বনির্ধারিত গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল

        শেয়ারবাজারের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

        বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা উদ্বেগজনক : টিআইবি

বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা উদ্বেগজনক : টিআইবি


বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) কর্তৃক প্রকাশিত দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০১৯ এ সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী ২০১৮ সালের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থানের এক ধাপ উন্নতি হলেও স্কোর (২৬) অপরিবর্তিত রয়েছে। বৈশ্বিক গড় স্কোরের (৪৩) তুলনায় এবারও বাংলাদেশের স্কোর যেমন অনেক কম তেমনি গতবারের মতই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর ও অবস্থানে থাকায় দেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা এখনো উদ্বেগজনক।

এই প্রেক্ষাপটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুধুই প্রতিশ্রুতি আর স্বল্প পরিসরের অভিযানের বাইরে গিয়ে আরো কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ায় এবছরও সর্বনিম্ন ১৬ স্কোর পেয়ে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান।

বৃহস্পতিবার সকালে সিপিআই ২০১৯ এর বৈশ্বিক প্রকাশ উপলক্ষে ধানমণ্ডিস্থ টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থান প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ‘সূচকে বাংলাদেশের স্কোর কমেনি এটুকুই সুখবর, তবে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। ২০১৯ সালে ০-১০০ স্কেলে গতবারের সমান ২৬ স্কোর পেয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে তালিকার সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম, যা ২০১৮ এর তুলনায় ১ ধাপ উন্নতি এবং সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী ১৪৬তম, যা ২০১৮ এর তুলনায় ৩ ধাপ উন্নতি। এবার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থানের খানিকটা উন্নতি হলেও স্কোর গতবারের তুলনায় অপরিবর্তিত থাকায়, বৈশ্বিক গড় ৪৩ এর চেয়ে অনেক কম এবং দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্থানে অব্যাহত থাকা এখনো বিব্রতকর ও উদ্বেগজনক। আমাদের আরো ভালো করার সামর্থ্য ছিল। যদি রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করা যেতো, অবস্থান ও পরিচয় নির্বিশেষে আইনের কঠোর প্রয়োগ হতো, তাহলে আমাদের স্কোর ও অবস্থানে আরো উন্নতি হতে পারতো।

প্রধানমন্ত্রীর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুন্য সহনশীলতা’ এবং ‘কাউকে ছাড় না দেয়ার’ ঘোষণার বাস্তবায়নের অন্যতম অন্তরায় একদিকে বহুমুখী দুর্নীতি সহায়ক যোগসাজশ ও অন্যদিকে রাজনীতির সাথে অর্থ ও দুর্বৃত্তায়নের নিবিড় সম্পর্ক; যার ফলে রাজনৈতিক ও অন্যভাবে ক্ষমতার অবস্থান ব্যক্তিগত সুবিধা ও সম্পদ বিকাশের জন্য লাইসেন্স হিসেবে বিবেচিত ও ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নের দায়িত্ব ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত মহল ও প্রতিষ্ঠানেই দুর্নীতির যোগসাজশ, সহায়ক ও সুবিধাভোগীদের প্রভাবের কারণে অগ্রগতি অর্জনের সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৯ সালের সিপিআই অনুযায়ী ৮৭ স্কোর পেয়ে যৌথভাবে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে ডেনমার্ক ও নিউজিল্যান্ড। ৮৬ স্কোর পেয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড এবং ৮৫ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে যৌথভাবে রয়েছে সিংগাপুর, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড। আর সর্বনিম্ন ৯ স্কোর পেয়ে গতবারের মত এবারও তালিকার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে সোমালিয়া। ১২ স্কোর নিয়ে নিম্নক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ সুদান এবং ১৩ স্কোর পেয়ে তালিকার তৃতীয় সর্বনিম্নে আছে হিসেবে সিরিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন টিআইবির চেয়ারপার্সন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, উপদেষ্টা, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মন্জুর-ই-আলম।

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রকাশিত তথ্যের সাথে দুর্নীতির ধারণা সূচকে ধারাবাহিকভাবে একই স্কোর বজায় থাকা সাংঘর্ষিক কী না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছে এটা যেমন সত্য ও গৌরবের, তেমনি এই অগ্রগতি আরো তরান্বিত হতো, আরো সুষম ও টেকসইভাবে হতে পারতো যদি আমরা কার্যকরভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম।’

এসময় অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু এই প্রবৃদ্ধির ব্যবহার হচ্ছে কোথায়, কার ভোগে যাচ্ছে, সেটা সঠিকভাবে বণ্টন হচ্ছে কী না তা দেখতে হবে। দুর্নীতি না থাকলে আমাদের আরো উন্নতি হতো।’

সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্কোর আরো ভালো আশা করা স্বাভাবিক ছিলো উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ‘অভিযানকে কেন্দ্র করে প্রত্যাশা বাড়লেও বাস্তবে কথিত ‘গডফাদার’দের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে একধরনের শঙ্কা, রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের ঘাটতি, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষমতাবানদের প্রত্যাশা ও চাহিদার প্রতিফলন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় শুদ্ধাচারের ঘাটতি বিশেষ করে রাজনৈতিক অর্থায়নে শুদ্ধাচার ও স্বচ্ছতার ঘাটতি, অর্থপাচার ও ব্যাংকিংখাতে দুর্নীতির ক্ষেত্রে আলোচিত মূল হোতাদের বিচারের আওতায় আনতে না পারার মত বিষয়গুলোর কারণে এই সূচকে আমাদের অবস্থান আরো ভালো হয়নি বলে মনে করছি। বিদ্যমান আইনী কাঠামো সংস্কারের যথেষ্ট সুযোগ থাকলেও যতটুকু আছে সেগুলো যদি কারো প্রতি ভয়-ভীতি বা করুণা প্রদর্শন না করে কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হতো, সরকারের ওপর জনগণের আস্থা বাড়তো এবং সূচকে আমাদের অবস্থান আরো উন্নতি হতো।’

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর