প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে: মওদুদ
ষোড়শ সংশোধনীর রায় সরকারের বিপক্ষে যাওয়ায় সরকার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
মওদুদ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নাকি পদত্যাগ করেছেন! বিচার বিভাগ ও আদালতের স্বাধীনতার জন্য আজ একটি কলঙ্কের দিন। তাকে জোর করে পদত্যাগ করানো হয়েছে। বিচার বিভাগের যে সামান্য স্বাধীনতা ছিল, এই সরকার তা নস্যাৎ করে দিয়েছে।’
ষোড়শ সংশোধনীর রায় সরকারের বিপক্ষে গেছে বলেই প্রধান বিচারপতি সিনহার পদত্যাগের ঘটনা ঘটল দাবি করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তারা (সরকার) এটা করল। অথচ সরকার রিভিউ আবেদন করতে পারত। সরকার সমন্বিতভাবে সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষতি করল।’
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদত্যাগে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন দেশের মওদুদ আহমদ। এই বিশিষ্ট আইনজ্ঞ বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ঐতিহ্য নিয়ে আমরা যে গর্ব করতাম, তা আর থাকল না। সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সরকারের কোনো লাভ হলো কি না জানি না, তবে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হলো। বিচার বিভাগের মান আমরা উদ্ধার করতে পারব কি না সন্দেহ আছে।’
আদালত সরকারের নিয়ন্তণে চলছে বলে এ সময় অভিযোগ করেন ব্যারিস্টর মওদুদ। এ প্রসঙ্গে তিনি খালেদা জিয়ার মামলার উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেন, কিন্তু তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো। আবার দেশে ফিরে তিনি আদালতে হাজিরা দিয়ে সাপ্তাহিক জামিন পেলেন। বিষয়টি কেমন হলো!’
মওদুদ বলেন, ‘আমার ৫০ বছরের আইন পেশায় আমি এ ধরনের ঘটনা শুনিনি। এটা করে নেত্রীকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলছে। সাপ্তাহিক জামিন দেওয়ার বিষয়টি অশোভনীয় আচরণ। আসলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই বলেই এমনটি হচ্ছে।’
বিএনপির সমাবেশের অনুমতি প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ বলেন, ‘অনুমতি নিয়ে বিরোধী দলকে সমাবেশ করতে হয় এতেই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে ঘরোয়া একটা সমাবেশে করতেও যদি সরকারের অনুমতি নিতে হয় তাহলে আর কী করবে সাধারণ মানুষ।’ আগামীকালে বিএনপির সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলেও মন্তব্য করেন মওদুদ।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন