আপডেট :

        প্রকাশ পেল তুফান সিনেমার ফার্স্টলুক

        নিউইয়র্কে রাস্তায় আচমকা নারীদের ঘুষি মারছে অজ্ঞাতরা

        যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

        পাপারাজ্জিকে ঘুষি: টেলর সুইফটের বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

        দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, সাগরেই ৩৬ হাজার

        বাল্টিমোরে সেতুধসে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের সব ক্রু ভারতীয়

        কে হচ্ছেন নতুন বন্ড

        জাহাজের ধাক্কায় বাল্টিমোরে সেতু ধসের সর্বশেষ

        শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের ভালো করা উচিত: সাকিব

        রিকশাওয়ালাদের গেম শো

        আর্জেন্টিনায় ৭০ হাজার সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত

        সর্বজনীন পেনশন স্কীম কার্যক্রমের উদ্বোধন

        ভুটানের রাজাকে গার্ড অব অনার ও বিদায়ী সংবর্ধনা

        গাজায় মানবিক বিপর্যয় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে পরিণত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান

        ভুয়া পিতৃপরিচয় দিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে প্রতারণা

        বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভূয়সী প্রশংসায় ডোনাল্ড লু

        মস্কোতে আইএসের হামলা চালানো, বিশ্বাস হচ্ছে না মারিয়া জাখারোভার

        নগরীর অচল ১১০টি সিসি ক্যামেরা হল সচল

        একনেকে ১১ প্রকল্পের অনুমোদন

        স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে সিকৃবিতে আলোচনা সভা

দুই শতাধিক মামলায় অর্ধ লক্ষাধিক আসামি, গ্রেফতার ৬০০০

দুই শতাধিক মামলায় অর্ধ লক্ষাধিক আসামি, গ্রেফতার ৬০০০

নতুন নতুন মামলা, নতুন নতুন গ্রেফতার। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন ২০ দলীয় জোটের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায়কে ঘিরে সারা দেশে দুই শতাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কমপক্ষে ৫০ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত জোটের প্রায় ছয় হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে। নতুন যে মামলাগুলো হচ্ছে তার অধিকাংশেরই বাদি হচ্ছে পুলিশ।

গত ৩০ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালত থেকে ফেরার পথে হাইকোর্টের সামনে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সেখানে পুলিশ ভ্যান থেকে তিন বিএনপি কর্মীকে মুক্ত করে নেন দলীয় নেতাকর্মীরা। ওই দিন থেকেই শুরু হয় গ্রেফতার অভিযান যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। শুধু বিএনপি নেতাকর্মীই নয়, ২০ দলীয় জোটের অন্যান্য শরিক দলের নেতাকর্মীও গ্রেফতার হচ্ছেন। ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

এই রায়কে ঘিরে বিএনপিসহ জোটের পক্ষ থেকে সারা দেশে লাগাতার কর্মসূচি চলছে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে প্রতিদিনই দেশের কোথাও-না-কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সঙ্ঘাত হচ্ছে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই বিভিন্ন থানায় মামলা হচ্ছে। এসব মামলার আসামি গ্রেফতারের নামে পুলিশ বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের এক নেতা জানিয়েছেন, ওই জেলায় ১১টি মামলা হয়েছে নতুন করে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পর নির্যাতন ও রিমান্ডে নেয়ার ভয় দেখিয়ে কোথাও কোথাও কিছু পুলিশ বাণিজ্য শুরু করেছে বলেও অভিযোগ মিলেছে। ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে সোনারগাঁও থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও আইনজীবী নেতা সাখাওয়াত হোসেন খানসহ বেশ কয়েকজন গ্রেফতাার হয়ে কারাবন্দী আছেন। জেলার ছয়টি থানায় নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে পুলিশ বাদি হয়ে ১১টি মামলা করেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এর মধ্যে রূপগঞ্জে এসআই সাব্বির বাদি হয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৭৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা করে। সোনারগাঁও থানার দুটি মামলার বাদি এসআই মজিবুর রহমান ও এএসআই এনামুল হক। এসআই মজিবুরের মামলায় ৮৯ জন এবং এএসআই এনামুল হকের মামলায় আসামি ৯৪ জন। দুটি মামলায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল মান্নান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফরসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে বিএনপি সমর্থিত দুই কাউন্সিলরসহ ১০ জনের নাম উল্লে করে অজ্ঞাত আরো ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করে। বন্দর থানার দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদি এসআই সালাউদ্দিন। তিনি বিএনপির ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০-৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। অপর মামলাটি করেন বন্দর ফাঁড়ির উপপুলিশ পরিদর্শক অজয় পাল। তিনি বাদি হয়ে বিএনপি সমর্থিত নাসিকের ছয় কাউন্সিলরসহ বিএনপির ৪৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) এস এম জয়নাল আবেদীন বাদি হয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীবসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০-১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

আড়াইহাজার থানার এসআই আরিফ বাদি হয়ে ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০০ থেকে ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ফতুল্লা মডেল থানায় দায়ের হওয়া দুুটি মামলার বাদি এসআই শাফিউল আলম ও এসআই কাজী এনামুল হক। এর মধ্যে এসআই শাফিউল আলম মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক ও নাসিক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে প্রধান আসামি করে ৪০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তা ছাড়া এসআই কাজী এনামুল হক ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

১০ জানুয়ারি বিকেলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে রূপগঞ্জ থানায় এএসআই সেলিম মিয়া বাদি হয়ে বিএনপির ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। একই দিন রাতে সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল হাসান বাদি হয়ে নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে প্রধান আসামি করে ৫৮ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করে।

এভাবেই দেশজুড়ে একের পর এক মামলা হচ্ছে। নিত্যনতুন মামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। বিএনপি সূত্র বলেছে, সারা দেশে নতুন করে দুই শতাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি হচ্ছে অন্তত ৫০ হাজার। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো। বিএনপির সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন মেজবাহ গতরাতে নয়া দিগন্তকে বলেছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরাও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পুলিশি হয়রানি থেকে বাঁচতে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে অভিযান চালাচ্ছে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর