আপডেট :

        আবহাওয়া বিবেচনায় খোলা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

        ‘ব্ল্যাক’ ফিরে যাচ্ছে পুরনো লাইনআপে!

        অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি কামনায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ

        রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনায় আগুন

        উপজেলা ভোটে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হতে পারে

        বাস দুর্ঘটনায় বাবা নিহত, মা-ছেলে মুমূর্ষু

        ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট বাড়বে শারীরিক অস্বস্তি

        মোবাইল ইন্টারনেট গতির সূচকে আরও ৬ ধাপ পিছিয়ে ১১২তম অবস্থানে

        মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বর্ডার গার্ড পুলিশের

        বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ৫৭ জন কর্মকর্তা

        সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন

        রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-ইরান-প্যালেস্টাইনের যুদ্ধ বন্ধ করতে উদাত্ত আহ্বান

        হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার

        সরকারি ব্যাংকের ছয় উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে অন্য ব্যাংকে বদলি করা হয়েছে

        ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৫ দিন পর কবর থেকে এক ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ তুলা হলো

        মেটার রে-ব্যান স্মার্ট রোদচশমা,করা যাবে ভিডিও কল

        পানিসংকটের শঙ্কা ও শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে পূর্বনির্ধারিত গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল

        শেয়ারবাজারের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

বাংলাদেশে এক বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৫ হাজার ৮৩৪ জন

বাংলাদেশে এক বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৫ হাজার ৮৩৪ জন

এক বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৫ হাজার ৮৩৪ জন। বর্তমানে মোট কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮৭২ জন। এক বছর আগেও এ সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের তথ্য নিয়ে তৈরি করা এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এক বছরে পাঁচ হাজার ৮৩৪ জন কোটিপতি আমানতকারী বাড়লেও তিন মাসের ব্যবধানে (২০১৭ সালের জুন-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) কোটিপতি কমেছে এক হাজার ১৯ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৬২ হাজার ৩৮ জন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৭ হাজার ৮৭২ জন। তবে ২০১৭ সালের জুনের শেষে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজার ৮৯১ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বরে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ৭০২ জন। ২০১৭ সালের একই সময়ে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫২ জন। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক কোটি টাকা আমানত রাখা ব্যক্তি ছিলেন ৫৩ হাজার ৩৪৪ জন। ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ৪৮ হাজার ৮৯৭ জন। এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এক কোটি টাকার আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৪৪৭ জন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘টাকাওয়ালাদের কাছে ব্যাংকিং খাত যে জিম্মি হয়ে পড়ছে, তার বড় প্রমাণ হলো ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী বেড়ে যাওয়া। এভাবে ব্যাংকে কোটিপতি বেড়ে যাওয়া কোনও ভালো লক্ষণ নয়। এটা হয়েছে কল্যাণ অর্থনীতির নীতি থেকে সরে যাওয়ার কারণে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি আমেরিকার তথা ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিকে অনুসরণ করছে। এই নীতিতে জোর-জুলুমের মাধ্যমে টাকা বানানোর সুযোগ থাকে। বাংলাদেশেও এখন তাই হচ্ছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ব্যাংকে ৬৭ হাজার ৮৭২ জন কোটিপতির মধ্যে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ৮৫২ জন। তিন মাস আগে (জুনে) ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তি ছিলেন ৮৫৩ জন।

বর্তমানে এক কোটি টাকার ওপরে আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ৫৩ হাজার ৩৪৪ জন। তিন মাস আগে এই সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ৩১৭ জনে।

সেপ্টেম্বরের শেষে ৪০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন, এমন ব্যক্তি রয়েছেন ৪১৫ জন। ৩৫ কোটি টাকারও বেশি আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ১৯৬ জন। ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ২৭২ জন। ২৫ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৪৬৯ জন। ২০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৭৯৯ জন। ১৫ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন এক হাজার ২৯৬ জন। ১০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন দুই হাজার ৫২৪ জন। পাঁচ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন সাত হাজার ৭০৫ জন।

দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো না থাকার কারণে ব্যাংকে কোটিপতিদের আমানত বাড়ছে বলে মনে করছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী বাড়ার ফলে সমাজে একটি বিশেষ শ্রেণি ক্রমেই ধনী হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজে বৈষম্যও বাড়ছে।’ তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের পরিবেশ না পেয়ে অনেকেই ব্যাংকে টাকা জমা রাখছেন। এছাড়া, যারা ডাবল স্কিমে ৬ বা ৭ বছর আগে ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছেন, এখন তাদের টাকা দ্বিগুণ হয়েছে। এভাবে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে।’

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচ জন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ জনে। জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে (ডিসেম্বর ১৯৮০) এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। তখন তাদের আমানতের পরিমাণ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ১০ শতাংশ। এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪৩ জন ও আমানতের পরিমাণ ১২ শতাংশ। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন ও আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় সাড়ে ২০ শতাংশ। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জন। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ২ বছরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে (২০০৭-০৮) এ সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার ১১৪। এরও আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের আমলে (অক্টোবর ২০০১-ডিসেম্বর ২০০৬) কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার ওপরে আমানতকারী হিসাব সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর শেষে এই সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ১৩০টি। ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ হাজার ৫৩৭টি।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি 

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর