আপডেট :

        প্রকাশ পেল তুফান সিনেমার ফার্স্টলুক

        নিউইয়র্কে রাস্তায় আচমকা নারীদের ঘুষি মারছে অজ্ঞাতরা

        যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

        পাপারাজ্জিকে ঘুষি: টেলর সুইফটের বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

        দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, সাগরেই ৩৬ হাজার

        বাল্টিমোরে সেতুধসে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের সব ক্রু ভারতীয়

        কে হচ্ছেন নতুন বন্ড

        জাহাজের ধাক্কায় বাল্টিমোরে সেতু ধসের সর্বশেষ

        শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের ভালো করা উচিত: সাকিব

        রিকশাওয়ালাদের গেম শো

        আর্জেন্টিনায় ৭০ হাজার সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত

        সর্বজনীন পেনশন স্কীম কার্যক্রমের উদ্বোধন

        ভুটানের রাজাকে গার্ড অব অনার ও বিদায়ী সংবর্ধনা

        গাজায় মানবিক বিপর্যয় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে পরিণত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান

        ভুয়া পিতৃপরিচয় দিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে প্রতারণা

        বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভূয়সী প্রশংসায় ডোনাল্ড লু

        মস্কোতে আইএসের হামলা চালানো, বিশ্বাস হচ্ছে না মারিয়া জাখারোভার

        নগরীর অচল ১১০টি সিসি ক্যামেরা হল সচল

        একনেকে ১১ প্রকল্পের অনুমোদন

        স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে সিকৃবিতে আলোচনা সভা

নিউ ইয়র্কে ট্রাক উঠিয়ে দিয়ে ৮ জনকে হত্যা

নিউ ইয়র্কে ট্রাক উঠিয়ে দিয়ে ৮ জনকে হত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের লোয়ার ম্যানহাটানে একটি সাইকেল চালানোর রাস্তায় পথচারী ও সাইকেল চালকদের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দিয়ে আট জনকে হত্যা করেছে সন্দেহভাজন এক সন্ত্রাসী।

কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। সাদা রঙের একটি পিক-আপ ট্রাক নিয়ে হাডসন নদীর পাশ দিয়ে সাইকেল চালানোর রাস্তায় হামলা চালায় ২৯ বছর বয়সি ওই সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১১ জন।

পুলিশ জানিয়েছে, মানুষের ওপর দিয়ে ট্রাক উঠিয়ে দেওয়ার পর সন্ত্রাসী ট্রাক-চালককে গুলি করেন পুলিশের একজন কর্মকর্তা। পরে আহত অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গণমাধ্যমে তার নাম সাইফুলো সাইপোভ বলা হয়েছে। তিনি একজন অভিবাসী এবং ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তিনি।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রাকের মধ্যে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যাতে তথাকথিত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কথা বলা রয়েছে।

সন্দেহভাজন হামলাকারী যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যে বসবাস করছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। হামলার সময় তাকে গুলি করার পর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও বলেছেন, ‘এটি নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো একটি কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী কাজ।’ তিনি আরো বলেন, আমরা জানি, আমাদের শক্তি ভেঙে দেওয়ার জন্য এ কাজ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এ-ও জানি, নিউ ইয়র্কবাসী দুর্বল নয়, নিউ ইয়র্কবাসী সংহত এবং সহিংস কাজ ও ভয় দেখিয়ে আমাদের শক্তি কখনোই বিনষ্ট করা যাবে না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে বলেছেন, ‘নিউ ইয়র্ক সিটিতে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত ও তাদের পরিবারের প্রতি আমার চিন্তা, সমবেদনা ও প্রার্থনা রইল। ঈশ্বর ও আপনাদের দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে।’


নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) কমিশনার জেমস ও’নিল বলেছেন, ‘এই সন্ত্রাসী হামলায় আহতদের অবস্থা গুরুতর কিন্তু তা জীবনের জন্য হুমকি নয়।’

তার হাতে আসা সবশেষ তথ্য দিয়ে ও’নিল বলেছেন, তখন কী হয়েছিল :

* স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। হোম ডিপোট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া সাদা রঙের পিক-আপ ট্রাক নিয়ে ওয়েস্ট সেন্ট থেকে হিউস্টন সেন্ট পর্যন্ত রাস্তার কয়েকটি ব্লকে সাইকেল চালক ও পথচারীদের ওপর দিয়ে উঠিয়ে দেন ওই সন্ত্রাসী।

* এরপর সন্ত্রাসী তার ট্রাক দিয়ে একটি স্কুলবাসে ধাক্কা দেয়। এ সময় দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ও দুই স্কুল-শিক্ষার্থী আহত হয়। স্কুলবাসে ধাক্কা দেওয়ার পর ট্রাকটি থেমে যায়।

* হামলাকারীর হাতে দুটি হ্যান্ডগান পাওয়া যায় এবং বিবৃতির মতো একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যা সন্ত্রাসী হামলার নমুনা বহন করে।

* ঘটনাস্থলের পাশের একটি পুলিশ স্টেশনের এক কর্মকর্তা হামলাকারীর উদরে গুলি করেন। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

* ঘটনাস্থল থেকে একটি পেইন্টবল বন্দুক ও পেলেট বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।

কমিশনার বলেন, ‘হামলায় হতাহত হওয়ার আগে লোকজন অন্য আর দশটা দিনের মতোই স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছিলেন। কেউ কাজ থেকে কেউবা স্কুল থেকে ফিরছিলেন আবার কেউবা সাইকেল চালিয়ে বিকেলের সূর্যালোক উপভোগ করছিলেন।’ তিনি  আরো বলেন, এই ট্র্যাজেডি নিউ ইয়র্কের বহু মানুষ ও পরিবারের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে এবং এর প্রভাব আজকের পরেও থাকবে।

হামলার পর দুমড়ে-মুষড়ে যাওয়া সাইকেলগুলো রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এমন সময় এ হামলা হলো, যখন নিউ ইয়র্কবাসী হ্যালোইনের আচার পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

ইউজেন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী এবিসি চ্যালেন ৭-কে বলেছেন, তিনি দেখেন স্টুইভিস্যান্ট হাইস্কুলের পাশে ওয়েস্টসাইড হাইওয়-সংলগ্ন সাইকেল চালানোর রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতিতে একটি সাদা পিক-আপ ট্রাক আসছে এবং পুরো গতি নিয়ে লোকজনের ওপর আঘাত করে সেটি। তিনি নয় অথবা ১০ বার গুলি চালানো শব্দও শুনেছেন।

ফ্রাঙ্ক নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী টিভি নেটওয়ার্ক এনওয়াই১-কে বলেন, তিনি একজন লোককে ছুটে আসতে দেখেন এবং পাঁচ-ছয়টি গুলির শব্দ শুনতে পান। তিনি বলেন, ‘আমি তার হাতে কিছু একটা দেখেছিলাম কিন্তু আমি বলতে পারব না কী ছিল সেটি। কিন্তু অন্যরা বলেছে, সেটি ছিল একটি বন্দুক।’

ফ্রাঙ্ক ঘটনার বর্ণনায় বলেন, যখন পুলিশ তাকে গুলি করল, তখন সবাই এলোপাতাড়ি ছোটাছুটি শুরু করল। তখন সেখানে গোলমালপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি হয়। এরপর আবার যখন আমি তাকে দেখার চেষ্টা করলাম, ততক্ষণে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এ ঘটনা নিয়ে ব্রিফ করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আরেক টুইটে তিনি বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য স্থানে আইএস পরাজিত হওয়ার পর আমরা তাদের প্রত্যাবর্তন করতে বা আমাদের দেশে তাদের ঢুকতে দিতে পারি না। যথেষ্ট হয়েছে!’

নিউ ইয়র্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বপ্রণোদিত সন্ত্রাসী এ হামলা চালায় চালিয়েছে। এর নেপথ্যে বৃহৎ কোনো সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্র বা পরিকল্পনা নেই।

ঘটনাস্থল দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। পুলিশ ও তদন্তকারীরা আলামত সংগ্রহ করছে এবং নির্ধারণ করতে চাইছে, আসলেই তখন কী ঘটেছিল।

এ ঘটনার পর অনেকে ২০০১ সালের টুইন টাওয়ারে হামলার কথা স্মরণ করে ভীত হয়ে পড়ে। তবে নিউ ইয়র্কের কর্তৃপক্ষ নগরবাসীকে অভয় দিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর