আপডেট :

        উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল

        মানবাধিকারের উল্লেখযোগ্য উন্নতি

        প্রচণ্ড এই গরম থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন জায়গায় নামাজ পড়ে দোয়া

        যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার

        এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো

        মার্কিন বিমান আটকে দিলো ‘যুদ্ধবিরোধী’ কুমির!

        চিতাবাঘের আক্রমণে আহত জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার হুইটাল

        যুক্তরাষ্ট্রে গরুর দুধেও বার্ড ফ্লু শনাক্ত

        পবিত্র হজ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

        গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

        পার্লামেন্টে জুতা চুরি, খালি পায়ে ঘরে ফিরলেন পাকিস্তানের এমপিরা

        অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

        কুড়িগ্রামে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু

        চীন সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

        দেশে একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম আরও কিছুটা কমানো হয়েছে

        ২৮ এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি চলছে

        ইউক্রেনে গোপনে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

        আবহাওয়া বিবেচনায় খোলা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

        ‘ব্ল্যাক’ ফিরে যাচ্ছে পুরনো লাইনআপে!

        অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি কামনায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ

নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ও অ্যাসেম্বলি হাউসে ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন

নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ও অ্যাসেম্বলি হাউসে  ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ও এ্যাসেম্বলী হাউসে আন্তর্জাতিক আবহে ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপিত হয়েছে। স্থানীয় সময় ২৭ মার্চ মঙ্গলবার সপ্তমবারের মতো নিউইয়র্ক স্টেটের রাজধানী আলবেনীতে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হল “বাংলাদেশ ডে” হিসেবে। আলবেনীর ক্যাপিটাল হিলে এদিন আবারো উড়লো বাংলাদেশের পতাকা। নিউইয়র্ক অ্যাসেম্বলি ও স্টেট সিনেটে বাংলাদেশের ৪৭ তম স্বাধীনতা দিবসের ওপর পৃথকভাবে রেজুলেশন গ্রহণ করা হয়। স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান লুইস সেপুলভেদা ও স্টেট সিনেটর জামাল টি. বেইলী স্টেট অ্যাসেম্বলি ও সিনেট হাউজে এসংক্রান্ত প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন। স্টেট সিনেট ও এসেম্বলী অধিবেশনের রেজুলেশন দু’টিতে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। সিনেট এবং এসেম্বলি গ্যালারি এদিন পুরোটাই সংরক্ষিত ছিল শুধু বাংলাদেশীদের জন্য। উভয় হাউজে শোভা পেল বাংলাদেশের পতাকা। বর্ণাঢ্য এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন ১২০ জন বাংলাদেশী।
          
এ্যাসেম্বলী হাউজের অধিবেশন চলাকালে ‘বাংলাদেশ ডে’র প্রস্তাবনাটি প্রথমে গৃহীত হয়। এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠের পর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে এ্যাসেম্বলী অধিবেশন শুরু হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা মাসহুদ ইকবাল। এর পর এ্যাসেম্বলী হাউজে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে ‘লুইস ভাই’ হিসেবে খ্যাত এ্যাসেম্বলীম্যান লুইস সিপুলভেদা উত্থাপিত বাংলাদেশ ডে প্রস্তাবনাটি পাঠ করে শুনানো হয়। এতে বলা হয়, তৎকালীন পাকিস্তান সামরিক সরকার বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে গণহত্যা চালিয়েছিল। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয় ৩০ লাখ মানুষ। সম্ভ্রমহানি হয় ২ লাখ মা-বোনের। রেজুলেশনে স্বাধীন
 
বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রহমানের নাম উল্লেখ করে তাঁকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। এর সমর্থনে বেশ ক’জন এ্যাসেম্বলীম্যান সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ ডে রেজুলেশন গ্রহণকালে এ্যাসেম্বলী ফ্লোরে উপস্থিত থাকেন ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বাদশা, লেখক-বিজ্ঞানী ও সিটি কাউন্সিল মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরান নবী, কমিউনিটি লীডার এডভোকেট নাসির উদ্দিন, নজরুল হক, আবদুল মুসাব্বির,  শামীম মিয়া, এ ইসলাম মামুন, আহবাব হোসেন চৌধুরী, জামাল হোসেন ও কামাল উদ্দিন। এসময় অন্যান্য প্রবাসী বাংলাদেশীরা হাউজ কক্ষের গ্যালারীতে উপবিষ্ট ছিলেন।
         
এদিন দুপুর ৪টায় স্টেট সিনেটের অধিবেশনে ‘বাংলাদেশ ডে’র রেজুলেশন গ্রহণ অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা মাসহুদ ইকবাল। এরপর সিনেটর জামাল টি বেইলি উত্থাপিত বাংলাদেশ ডে প্রস্তাবনাটি পাঠ করে শুনানোর পর ৫ জন সিনেটর এর সমর্থনে জোরালে বক্তব্য রাখেন। এখানেও বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস স্থান পায়। পরে সিনেট হাইজে রেজুলেশনটি
 
সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। বাংলাদেশ ডে রেজুলেশন উপস্থাপনকালে সিনেট ফ্লোরে উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন কমিটির মুখপাত্র আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজুমদার, লেখক-বিজ্ঞানী ও সিটি কাউন্সিল মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরান নবী, কমিউনিটি লীডার সোলেমান আলী ও মাহবুব আলম। হাউজ কক্ষের গ্যালারীতে উপবিষ্ট ছিলেন অন্যান্য প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
          
স্টেট এ্যাসেম্বলী হাউজ ও সিনেট হাউজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্টেট সিনেটর জামাল টি বেইলি ও এ্যাসেম্বলীম্যান লুইস সিপুলভেদা আলবেনী হলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্মানে এক অভ্যর্থনা পার্টির আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডে কমিটির কাছে এ্যাসেম্বলীম্যান লুইস সিপুলভেদা ও সিনেটর জামাল টি বেইলি হাউজ দু’টিতে পাসকৃত রেজুলেশনের কপি হস্তান্তর করেন। এছাড়া এসময় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশ ডে কমিটিকে প্রক্লেমেশন প্রদান করা হয়।
 
‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন কমিউনিটি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বাদশার সভাপতিত্বে এবং কমিটির মুখপাত্র আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজুমদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্টেট সিনেটর জামাল টি বেইলি ও এসেম্বেলীম্যান লুইস সিপুলভেদা ছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অন্যান্য স্টেট সিনেটর ও এসেম্বেলীম্যানগণ। তারা ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশী কমিউনিটির ভূয়শী প্রশংসা করেন। তুলে ধরেন নানা ক্ষেত্রে তাদের অবদানের কথাও।
 
এসময় এ ঐতিহাসিক আয়োজনের জন্য বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে অ্যাসেম্বলিমেন লুইস সেপুলভেদা ও স্টেট সিনেটর জামাল টি বেইলিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
এদিকে, আলবেনী হলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্মানে এ অভ্যর্থনা পার্টির ব্যানারে ‘বাংলাদেশ ডে’র স্থলে ‘বেঙ্গলী ডে’ হওয়ায় এসেম্বেলীম্যান লুইস সিপুলভেদা দু:খ প্রকাশ করেন।
 
প্রক্লেমেশন প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন : ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন কমিউনিটি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বাদশা, বাফা প্রেসিডেন্ট ফরিদা ইয়াসমিন, কমিউনিটি লীডার আবদুস সহীদ, ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন কমিউনিটি মেম্বার সেক্রেটারী শাহেদ আহমদ, মামুন’স টিউটরিয়ালের প্রিন্সিপাল শেখ আল মামুন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন, কমিউনিটি লীডার মোহাম্মদ দলা মিয়া, আল আকসা গ্রুপের কর্ণধার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হক শাহীন (আল আকসা গ্রুপের পক্ষে প্রক্লেমেশন গ্রহণ করেন ম্যানেজার মো. আলী, খলিল বিরিয়ানী হাউজের স্বত্ত্বাধিকারী রন্ধন শিল্পী,খলিলুর রহমান এবং কমিউনিটি লীডার রেক্সোনা মজুমদার।
 
এছাড়া আয়োজক সংগঠন গুলোকেও প্রক্লেমেশন প্রদান করা হয়। সংগঠন গুলোকে হচ্ছে : বাংলাদেশ-আমেরিকান কমিউনিটি কাউন্সিল, বাংলাদেশ সোসাইটি অব বঙ্কস, বঙ্কস বাংলাদেশ সোসাইটি, বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন, বাংলাদেশী-আমেরিকান ডেমোক্রেটিক সোসাইটি, আমেরিকান-বাংলাদেশী ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন, বঙ্কস বাংলাদেশ এসোসিয়েশন, নর্থ বঙ্কস বাংলাদেশ
              
এসোসিয়েশন, বাঙালী চেতনা মঞ্চ, বঙ্কস বাংলাদেশ উইম্যান’স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ আমেরিকান উইম্যান’স এসোসিয়েশন, ফেঞ্চুগঞ্জ অর্গেনাইজেশন অব আমেরিকা , গ্রেটার লাকসাম ফাউন্ডেশন অব ইউএসএ , বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব নর্থ আমেরিকা,
 
কংগ্রেস অব বাংলাদেশ আমেরিকান , বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন অব নর্থ আমেরিকা, নজাবত আলী ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব নিউজার্সী।
 
এর আগে ২৭ মার্চ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় ব্রঙ্কস থেকে দু’টি বাসযোগে প্রায় ১২০ জন বাংলাদেশী বাংলাদেশ ডে অনুষ্ঠানমালায় যোগ দিতে আলবেনিতে সমবেত হন। বিকেল সাড়ে ৫টায় বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠান শেষ হয়। । অংশগ্রহণকারীদের জন্য দুপুরের খাবার পরিবেশন করে ব্রঙ্কসের স্বনামখ্যাত খলিল বিরিয়ানী হাউজ।
 
এদিকে, ‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগদানকারী প্রবাসী বাঙালীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, নিউইয়র্ক অ্যাসেম্বলি ও স্টেট সেনেট হাউজে বাংলাদেশকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা অসাধারণ। অনন্য। ভাষায় ব্যক্ত করার মত
 
নয়। যা অংশগ্রহনকারী সকলে গর্বের সাথে উপভোগ করেন। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট সিনেট ও এ্যাসেম্বলীতে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উদযানের এ আনন্দ, এ গর্ব শুধু প্রবাসীদের নয়, এ আনন্দ গোটা বাংলাদেশের।
 
এর আগে দিবসটি যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য গত ১২ মার্চ গঠন করা হয় ১৫ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি। কমিটির সদস্যরা হলেন : চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বাদশা, মেম্বার সেক্রেটারী শাহেদ আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মনজুর চৌধুরী জগলুল, সহ কোষাধ্যক্ষ শামীম আহমেদ, সদস্য
 
মোহাম্মদ এন মজুমদার, আবদুস শহীদ, মাহবুবুল আলম, শামীম মিয়া, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী, আহবাব চৌধুরী, তৌফিকুর রহমান ফারুক, এ ইসলাম মামুন, ফরিদা ইয়াসমিন, রেক্সোনা মজুমদার এবং বুরহান উদ্দিন। অন্যতম সদস্য আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজুমদার এ কমিটির মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
 
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক বাংলাদেশ ডে বিলটি পাশ হয় ২০১২ সালের ২৪ মার্চ। এই ঐতিহাসিক উদ্যোগটির প্রধান রূপকার ছিলেন ব্রঙ্কস থেকে নির্বাচিত সাবেক সিনেটর বর্তমান কাউন্সিলম্যান রুবিন ডিয়াজ। তাকে রেজুলেশন তৈরিতে সহযোগীতা করেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে
 
‘লুইস ভাই’ হিসেবে পরিচিত এটর্নী লুইস সিপুলভেদা (বর্তমান এসেম্বলিম্যান)। তাদের সহযোগীতা করেন ব্রঙ্কস প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির নের্তৃবৃন্দ।
 
ওই সময় বিলটি সিনেটে উত্থাপিত হলে সিনেটর রুবিন ডিয়াজ সিনেটে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি ১৯৭১ সালের মার্চে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে গণহত্যা, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে বাংলাদেশীদের আত্মত্যাগ এবং পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে বাংলাদেশী মা-বোনদের সম্ভ্রমহানির কথা সবিস্তারে তুলে ধরেন। সেদিন মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে এই ঐতিহাসিক বিলটি সর্বসম্মতভাবে সিনেটে পাশ হয়।
 
‘বাংলাদেশ ডে’ উদযাপনের প্রথম আহ্বায়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মোহাম্মদ এন মজুমদার এবং মেম্বার সেক্রেটারী ছিলেন মরহুম জাকির খান। ।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর