করোনা সংকটে ওয়াশিংটনে মানবসেবায় দুই ভাই
সারা বিশ্ব যখন করোনার ছোবলে টালমাটাল। গৃহবন্দী হাজার মানুষের কাজ নেই, খাদ্য নেই, নেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপাদান! ইতোমধ্যে অনেকে ব্যক্তি পর্যায়ে কিংবা সাংগঠনিক ভাবে গৃহবন্দী, অসহায় মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের, বেস্টভিল এলাকার দুই ভাই করোনা ক্রান্তিকালে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। পিটার যে গমেজ ও ম্যাথিও যে গমেজ এই দুই সহোদরের কার্যক্রমে উপকার পাচ্ছে মেট্রো ওয়াশিংটন এলাকার মানুষ। দুভাই নিজেদের উদ্যোগে মানুষের প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে মাস্ক।
কিভাবে তারা এই কাজের চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে? পিটার ও ম্যাথিও জানায়, দীর্ঘদিন ঘরে বসে থাকতে থাকতে তারা ক্লান্ত। সময় কাটে পড়াশোনা ও টিভি দেখে। তারা দেখেছে দীর্ঘ এক মাস গৃহবন্দী মানুষের অসহায়ত্ব। অনেকের কাজ নেই, ঘরে খাবার নেই, নেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী। দুজনে মিলে চিন্তা করে কি করা যায়? কিভাবে তারা মানুষের সেবা দিতে পারে। যেই ভাবা সেই কাজ। দুভাই তাদের বাবা যোসেফ বাবলু গমেজ'কে বিষয়টি অবহিত করে। যোসেফ বাবলু তাদের আসস্থ করেন তিনি ছেলেদের মাস্ক সংগ্রহ করে দিবেন এবং তিনি একটি বাজেটও তাদের জন্য বরাদ্দ করেন।
শুরু হয় দুভাইয়ের মানুষের অসহায়ত্বের বিরুদ্ধে লড়াই। ভিবিন্ন দোকানে ছুটে যায় মাস্ক কিনতে। কিন্তু দোকানে মাস্ক না থাকতে তারা অনলাইনে অর্ডার করে। এবং ফেসবুকে, ইমেইলে ও ব্যক্তিগত ভাবে মানুষের সাথে যোগাযোগ করে। বিষয়টি প্রচার হওয়ার পর অনেকে তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে দুভাই বাসায় গিয়ে মাস্ক পৌঁছে দিয়ে আসে। ইতোমধ্যে তারা অনেকে পরিবারকে মাস্ক দিয়ে সহায়তা করেছে।
পিটার জানায়, তাদের টার্গেট দুইশত পরিবারকে তারা মাস্ক দিয়ে সাহায্য করবে। একজন ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি মাস্ক নিয়ে তাদের কিছু অনুদান দিয়ে কাজটি চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছেন।
এমন একটি কঠিন কাজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেন ছেলেদের অনুমতি দিলেন? জবাবে মেট্রো ওয়াশিংটন ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন 'বাংলাদেশ খ্রিষ্টানএসোসিয়েশনে'র বর্তমান প্রেসিডেন্ট যোসেফ বাবলু গমেজ বলেন, আমরা একাত্তর সালে দেখেছি বাবা মা তাদের একমাত্র ছেলেকে যুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করেছে। অনেকে জীবন দিয়েছে। যার বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। এখন আমরা যুদ্ধ করছি অদৃশ্য এক শত্রুর সাথে। তিনি বলেন, আমি কাজ করি ওয়াশিংটন হাসপাতালে। এখানে করোনার সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। আমাদের সকলের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব করোনা যুদ্ধে সামিল হওয়া।
পিটার-ম্যাথিউ তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামাজিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত। এবং সেখান থেকেই শিখেছে কিভাবে কঠিন বাস্তবতার মোকাবেলা করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়।
মেরিল্যান্ডের কলম্বিয়া এলাকার কবি, লেখিকা শুক্লা গাঙ্গুলি বলেন, আমি শুধু ফোন করে বলেছি আমার মাস্ক লাগবে এবং কিছুক্ষন বাদেই তারা ফোন করে তার বাসায় মাস্ক পৌঁছে দিয়ে আসে। শুক্লা গাঙ্গুলি তাদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে সবাইকে এই কাজে সামিল হতে আহ্বান জানান।
মেট্রো ওয়াশিংটন এলাকার কারো মাস্ক এর প্রয়োজনে পিটার-ম্যাথিও এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
Email: peter.jay.gomes@gmail.com
Email: jmgmed@gmail.com
Phone: 240-354-5453
এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/ওয়াই
শেয়ার করুন