প্রবাস

করোনা পরিস্থিতিতে বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে বাফলা

করোনায় কর্মহীন অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ইউনিটি ফেডারেশন অব লস এঞ্জেলেস (বাফলা)। গত শনিবার সিলেট নগরীর গোটাটিকর ষাটঘর এলাকাসহ আশপাশের কয়েটি গ্রামে কর্মহীন ১৩০টি পরিবারের মাঝে বাফলা চ্যারিটির উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

বাফলা চ্যারিটির কো-অর্ডিনেটর জসীম আশরাফী জানান, কোভিড-১৯ বাফলা এসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামের আওতায় আগামী ৩ মাস বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য সহায়তা ও চিকিৎসকদের পিপিইসহ চিকিৎসা সামগ্রী দেওয়া হবে।

এছাড়াও, করোনা পরিস্থিতিতে লস এঞ্জেলসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝেও সেবাগুলোও পৌঁছে দিচ্ছে সংস্থাটি।

করোনা ভাইরাসের কারণে সর্বসাধারণকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছেন বাংলাদেশ সরকার। অনেক হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার লক ডাউনের কারনে কাজে যেতে পারছেন না। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাক্তিও খাদ্য সহায়তা প্রদান করছেন। মানবতার এই শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হলো মানবসেবা। এরই মধ্যে বাফলা’র পক্ষ থেকে হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী ঘরে নিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়।

সিলেটে এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ সমন্বয়ন করেন বাফলার পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি আব্দুস সামাদ।
খাদ্য সামগ্রী বিতরণের সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার পলাশ রঞ্জ দে, মোগলাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ আখতার হোসেন, সাংবাদিক শিপন আহমদ, মুরব্বি লাল মিয়া, হারুন মিয়া, মুহিবুর রমান রনি, শদিুল ইসলাম প্রমূখ।

প্রধাণ অতিথির বক্তব্যে পলাশ রঞ্জ দে বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, এই দূর্যোগ মুহুর্তে আমাদের প্রবাসীরা তাদের মাতৃভূমিকে ভুলেনি। তারা প্রবাসে খুব বেশি ঝুঁকির মধ্যে থেকেও বাংলার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করছেন। সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্র এরপরও বাংলাদেশ ইউনিটি ফেডারেশন অব লস এঞ্জেলেস (বাফলা ) নিজের দেশের গরীব হতদরিদ্র ১৩০টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করছেন। আমি বাফলাকে ধন্যবাদ জানাই। বাফলার মত আরো অনেক প্রবাসী সংগঠন এগিয়ে আসছেন আমি তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই। এখন আমরা যে যার অবস্থান থেকে মানুষকে সাহায্য করবো। তিনি সবাইকে এই দূর্যোগ মুহুর্তে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
আব্দুস সামাদ জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে দেশ-বিদেশে জনকল্যাণমূলক কাজ করে আসছে বাফলা। করোনাভাইরাসের এই সময়েও ‘কোভিড-১৯ বাফলা এসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম’ শিরোনামে সহযোগিতা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এজন্য ১০ হাজার ডলারের টার্গেট নিয়ে ফেসবুক ফান্ডরাইজিং চলছে।
এই ফান্ড থেকে ৪টি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে:

১. করোনার প্রভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ লস এঞ্জেলেসের স্থানীয় পরিবারগুলোর মধ্যে সহযোগিতার জন্য জরুরি খাদ্য পণ্য বা নগদ অর্থ প্রদান।

২. লস এঞ্জেলেস এবং আশপাশের সিটিতে মাস্ক বিতরণ।

৩. বাংলাদেশে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা।

৪. বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে পিপিই প্রদান।



বাফলার প্রেসিডেন্ট শিপার চৌধুরী জানিয়েছেন, কারও আশপাশের কেউ করোনার কারণে কোন বিপদে বা আর্থিক সঙ্কটে থাকলে আমাদের অবগত করুন। আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবো। যে কেউ চাইলে এই ফান্ডে অনুদান প্রাদান করতে পারেন। অনুদানের পাশাপাশি আপনার জাকাতের টাকাও দিতে পারেন বাফলা চ্যারিটির ফান্ডে। বাফলা IRS 501(c)(3) tax deductible status. আপনার টাকা সম্পূর্ণ ট্যাক্স মুক্ত।
সাহায্যের জন্য আমাদের কাছে অনেকে আবেদন করেছেন। যেহেতু বাফলা শুরু থেকেই চ্যারিটির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আপনারা জানেন আমরা সবাই আর্থিক সঙ্কটে‌। বাফলার নেতৃবৃন্দও এর বাইরে নয়। তারপরেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।


এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এএল