আমেরিকা

ওয়াশিংটনে বিশ্ব প্রাইড শুরু হলেও বিদেশিদের অনুপস্থিতি চোখে পড়ছে

ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাপী LGBTQ+ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব World Pride 2025 শুরু হয়েছে, তবে উদ্বেগের বিষয় হলো—অনেক বিদেশি অংশগ্রহণকারী এই বছর আসছেন না। নিরাপত্তা শঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ, এবং LGBTQ+ অধিকার নিয়ে চলমান বিতর্ক এই অনুপস্থিতির প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে যেসব নীতিমালা প্রণীত হয়েছে, সেগুলো অনেক বিদেশিকে ভীত করে তুলেছে। যেমন—ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীতে নিষিদ্ধ করা, DEI (diversity, equity, inclusion) কার্যক্রম বাতিল করা, এবং LGBTQ+ ইস্যুতে প্রশাসনের নিরুৎসাহী মনোভাব—এসবের ফলে ডেনমার্ক, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। অনেক বিদেশি পর্যটক আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় তারা হয়রানির শিকার হতে পারেন বা আটকে যেতে পারেন। একজন অস্ট্রেলিয়ান LGBTQ+ অ্যাক্টিভিস্ট জানান, "ধরা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি—তাই এবার না যাওয়াই ভালো মনে হয়েছে।" শুধু তাই নয়, বেশ কিছু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান যেমন Deloitte এবং Booz Allen Hamilton, এবার স্পনসরশিপ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনার ভয়ে অনেকে ওয়াশিংটনে এসে প্রাইডে অংশ নিতে সাহস পাচ্ছেন না। তবুও, উৎসব ঘিরে স্থানীয় এবং কিছু আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারী রাস্তায় নেমে এসেছেন। প্রাইড প্যারেডে গে মেন’স কোরাস, LGBTQ+ অধিকার সংগঠন ও সমর্থকদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। যদিও একটি সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া গেছে—যেখানে দুজন ছুরিকাহত এবং একজন গুলিবিদ্ধ হন—তবে পুলিশ জানিয়েছে, পুরো শহরে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গভর্নর অফিস, ফেডারেল এজেন্সি এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহায়তায় শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, এবারের প্রাইড শুধুমাত্র উৎসব নয়, বরং এটা “একটি প্রতিরোধের আওয়াজ, দৃশ্যমানতা এবং অধিকার রক্ষার সংগ্রাম।” ওয়াশিংটন ডিসি প্রথমবারের মতো বিশ্ব প্রাইড আয়োজন করছে—তবে এই উৎসব একদিকে যেমন রঙিন, অন্যদিকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং বৈষম্যের ইঙ্গিতও বহন করছে। তা সত্ত্বেও, যারা অংশ নিচ্ছেন, তারা বলছেন—“আমরা হার মানি না, এই মিছিল চলবে।”   এলএবাংলাটাইমস/ওএম