আমেরিকা

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসা চালু, তবে বাড়ছে সোশ্যাল মিডিয়া তদারকি

যুক্তরাষ্ট্র আবারও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার্থী ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তবে এবার থেকে আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট প্রকাশ্যে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, নিরাপত্তা তদারকি জোরদার করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া তদারকির ক্ষেত্র বাড়াতে হবে এবং তাঁদের মধ্যে এমন কোনো ইঙ্গিত আছে কি না, যা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান বা মৌলিক নীতির প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করে — তা খতিয়ে দেখতে হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মে মাসের শেষদিকে শিক্ষার্থী ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত করেছিল। এরপরই এই নতুন কড়া নির্দেশনা আসে, যার লক্ষ্য মূলত যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী মনোভাব পোষণকারী আবেদনকারীদের সীমিত করা। এই নির্দেশনা প্রভাব ফেলবে সব ধরনের F ভিসা আবেদনকারীর ওপর, যা মূলত একাডেমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া, কারিগরি শিক্ষার জন্য ব্যবহৃত M ভিসা এবং বিনিময় প্রোগ্রামের জন্য ব্যবহৃত J ভিসা আবেদনকারীদের ওপরও একইভাবে প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র। যেসব আবেদনকারী তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট প্রাইভেট রাখেন, তাঁদেরকে তাঁদের কার্যকলাপ গোপন করার চেষ্টা করছেন বলে সন্দেহ করা হতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “আমেরিকার নাগরিকরা আশা করে তাঁদের সরকার দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করবে, এবং ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিদিন সেটাই করছে।” সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন বিদেশি সন্ত্রাসীদের সমর্থনকারী, সহায়তাকারী অথবা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের শনাক্ত করেন। একইসঙ্গে ইহুদি-বিরোধী সহিংসতা বা হয়রানি চালানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও তদারকি বাড়াতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের একটি বড় পরিসরের অভিযানের অংশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ট্রাম্প এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে অত্যন্ত বামঘেঁষা বলে অভিযুক্ত করেছেন এবং ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে ইহুদি বিদ্বেষ প্রতিরোধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসন শত শত মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন বন্ধ করেছে, এবং কিছু শিক্ষার্থীকে দেশত্যাগে বাধ্য করার চেষ্টা করেছে কিংবা তাঁদের ভিসা বাতিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও এসবের অনেকটাই মার্কিন আদালত ঠেকিয়ে দিয়েছে। বিশেষভাবে নজরে এসেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যার ২৬৫ কোটি ডলার ফেডারেল অনুদান স্থগিত করা হয়েছে। ট্রাম্প হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি ক্ষমতাও প্রত্যাহার করতে চেয়েছিলেন, তবে আদালতের অস্থায়ী আদেশে সেই পদক্ষেপ আপাতত স্থগিত রয়েছে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১০টির বেশি দেশের ১১ লক্ষ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানায় Open Doors নামক এক জরিপ প্রতিষ্ঠান।

এলএবাংলাটাইমস/ওএম