আমেরিকা

ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে চায় পাকিস্তান

পাকিস্তান ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে। ইসলামাবাদ বলছে, গত মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ থামানোর ক্ষেত্রে ট্রাম্পের কূটনৈতিক ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সরকারি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পাকিস্তান বলেছে, “সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সঙ্কটকালে তার দৃঢ় কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ ও নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ট্রাম্প এই পুরস্কারের যোগ্য।” ভারত অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো মধ্যস্থতাকারী হিসেবে স্বীকার করেনি এবং স্পষ্টভাবে বলেছে যে, তারা কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না। গত মে মাসে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, চার দিনের সংঘর্ষের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই উদ্যোগে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির রাশ টানা সম্ভব হয়েছে। পাকিস্তান সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কৌশলগত দূরদর্শিতা ও কূটনৈতিক দক্ষতার মাধ্যমে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যার ফলে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির অবসান ঘটে। এটি তাকে সত্যিকারের শান্তির দূত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।” ওয়াশিংটন বা নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। ট্রাম্প নিজেও একাধিকবার দাবি করেছেন, তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। গত মাসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ভারত ও পাকিস্তানকে বলেছিলাম, তোমরা আমাদের সঙ্গে অনেক বাণিজ্য করতে চাও—তাহলে যুদ্ধ থামাও।” পাকিস্তান ট্রাম্পের দাবির পক্ষে সায় দিলেও ভারত তা নাকচ করে দিয়েছে। পাকিস্তানের সিনেটের সাবেক প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মুশাহিদ হোসেন এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ট্রাম্প পাকিস্তানের জন্য ভালো। যদি এতে ট্রাম্পের আত্মমর্যাদায় খুশি হয়, তাহলে সমস্যা নেই। ইউরোপের নেতারাও তো তার মন জয়ের চেষ্টা করেছে।” তবে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মলীহা লোধী এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “একজন এমন মানুষ, যিনি গাজার ওপর ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনকে সমর্থন করেছেন এবং ইরানের ওপর হামলাকে বলেছেন ‘চমৎকার’—তার জন্য মনোনয়ন দুর্ভাগ্যজনক।” তিনি বলেন, “এটি আমাদের জাতীয় মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে।” এর একদিন আগে, ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লিখেছিলেন, “আমি বহু দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা চালিয়েছি, তবুও আমাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেবে না।” উল্লেখ্য, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-গাজার যুদ্ধ দ্রুত শেষ করবেন, যদিও এখনো কোনো শান্তি চুক্তি হয়নি। তিনি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ২০০৯ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়কেও বারবার সমালোচনা করেছেন এবং ২০১৩ সালে বলেছিলেন, নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির উচিত ওবামার পুরস্কার বাতিল করা।   এলএবাংলাটাইমস/ওএম