যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ চালিয়েছে, যেটিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প “পূর্ণ বিজয়” হিসেবে অভিহিত করেছেন। শনিবার রাতে চালানো এই বিমান হামলায় ফুরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান নামের তিনটি স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানায় হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প বলেন, “এই হামলা ইরানকে একটি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে—শান্তির পথ না নিলে পরিণতি ভয়াবহ হবে।” যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটি কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে ছিল না, বরং ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতাকে নির্দিষ্টভাবে লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে।
হামলার বিস্তারিত বিবরণ অনুযায়ী, ফুরদো স্থাপনায় ছয়টি ‘বাঙ্কার-বাষ্টার’ বোমা ব্যবহার করা হয়, যেখানে নাতানজ ও ইসফাহানে সাবমেরিন থেকে ছোঁড়া হয় ৩০টি ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র। হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের B-2 স্টেলথ বোমারু বিমান অংশ নেয় বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এই আক্রমণের পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক চ্যানেলে ইরানকে একটি সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল। হামলার পর ইরানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পারমাণবিক বিকিরণ শনাক্ত হয়নি, তবে ব্যাপক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরান আরও দাবি করেছে, ইসরায়েলের হামলায় ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ৩,০০০ জন আহত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এই হামলাকে “সাহসী সিদ্ধান্ত” হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন। অপরদিকে, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় দেশগুলো এই ঘটনার সমালোচনা করে এটিকে “উদ্বেগজনক উত্তেজনা বৃদ্ধি” হিসেবে দেখছে এবং শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরান যদি শান্তির পথ না বেছে নেয়, তবে পরবর্তী ধাপ আরও কঠোর হবে এবং নির্ধারিত লক্ষ্যগুলো খুব দ্রুতই আঘাতপ্রাপ্ত হবে।
এই হামলা সরাসরি ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন মোড় নির্দেশ করে। মার্কিন কংগ্রেসে এ নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে—একদিকে রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের “শক্তির মাধ্যমে শান্তি” নীতিকে সমর্থন জানাচ্ছে, অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা এর কূটনৈতিক বিপর্যয় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই হামলার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী এবং গভীর হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম