বাংলাদেশ

হামলা আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার খরচ দেবে সরকার

হেলমেটধারীদের হামলায় আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তিনিও ব্যবস্থা নিতে আন্তরিক।

আগামী শনিবারের মধ্যেই হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশাও করছেন তথ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের সাথে বৈঠকে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

গত ৬ আগস্ট সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বেশ কয়েকজন ফটোসাংবাদিককে পেটায় হেলমেটধারী কিছু যুবক। অভিযোগ উঠেছে, এই হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত। তবে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সাংবাদিকরা এই হামলার প্রতিবাদে নিয়মিত নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হলে শনিবার থেকে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণাও আছে।

এরই মধ্যে হামলাকারীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে তথ্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ মিটিং চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি বিষয়গুলো অবহিত আছেন। তিনি ব্যবস্থা নিতে আন্তরিক। শনিবার সারাদেশে সাংবাদিকরা যে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে আমরা আশা করছি, সাংবাদিকদের এ আন্দোলনের আগেই দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।’

ইনু বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনে যারা সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছে তারা সরকারকে বিব্রত করতে চেয়েছে। এ হামলার মধ্য দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের উস্কে দেওয়ার পাঁয়তারা করেছে।’

‘তারা চায় সরকার ও সাংবাদিকরা মুখোমুখি অবস্থানে থাকুক। এর মধ্য দিয়ে এসব দুর্বৃত্তকারীরা ফায়দা হাসিল করতে চায়।’

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেত্রী হিসেবে যেমন সাংবাদিক বান্ধব, তেমনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও। সাগর-রুনির হত্যার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ নেই, তাই হয়তো তাদের হত্যার বিচার দেরি হচ্ছে। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনের মাঝে যারা সাংবাদিকদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেছে তাদের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সবার কাছে পরিষ্কার। ফলে তাদের গ্রেপ্তার করতে কোন দেরি হওয়ার কথা নয়।’

চিকিৎসার খরচ দেয়ার পাশাপাশি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যাদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়েছে তারও সমাধানে উদ্যোগ নিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

বৈঠকে বিএইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, ‘আমরা আগামী শনিবার সারাদেশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছি। যদি আপনারা সরকারের পক্ষ থেকে আহত সাংবাদিদের চিকিৎসার ভার ও দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার না করেন তাহলে দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে। আর এর ফায়দা নেবে সরকারের বিরদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করতে তারা।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজের সভাপতি আবু জাফর সুর্য্য বলেন, ‘সাংবাদিকরা জানে তাদের অধিকার আদায়ে কীভাবে আন্দোলন করতে হয়। তথ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিক আহত সাংবাদিকদের দেখতে হাসপাতালে গেছেন এবং সার্বিক খোজখবর নিয়েছেন। আমরা আশা করি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।’

বৈঠকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘আমাদের সরকার সংবাদ মাধ্যম বান্ধব। আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে তথ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দাপ্তরিক চিঠি লিখেছি। আপনারা আস্থা রাখতে পারে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’

তথ্য সচিব আবদুল মালেক, সদ্য নির্বাচিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন্নাহার প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি