বাংলাদেশ

সৌদির জন্য আলাদা নিবন্ধন নেই: প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী

কাজের জন্য সৌদি আরবে যেতে আলাদা করে কোনো নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করা হয়নি। নিবন্ধন নিয়ে চাপ সামাল দিতে বিদেশ গমনেচ্ছুদের নিবন্ধন সাময়িকভাবে বন্ধ করা হতে পারে এবং তখন শুধু নারী কর্মীরাই নিবন্ধন করতে পারবেন।
মঙ্গলবার ইস্কাটনের প্রবাসীকল্যাণ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্ত জানান প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি কর্মী নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে সৌদি আরব। দীর্ঘ সাত বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বছরে ১ লাখ ২০ বাজার গৃহকর্মী নেবে দেশটি। সব খরচ সৌদির নিয়োগকারীরা দেবে। বাংলাদেশি কর্মীদের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। সরকারের এই ঘোষণায় সাধারণ মানুষ সৌদি আরব যেতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। নিবন্ধন করলেই বিনা খরচে সৌদি আরব যাওয়া যাবে- এই ধারণায় নিবন্ধন করতে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে (বিএমইটি) ভিড় করেন তারা। ভিড়ের কারণে 'ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায়ও' নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হয়। দেশজুড়েই বিএমইটি কার্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে- সৌদির জন্য আলাদা কোনো নিবন্ধন নেই। যেকোনো দেশে যেতে চাইলেই নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। গত কয়েক বছরে ২২ লাখ লোক বিদেশ যেতে নাম নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্য থেকেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সৌদি আরবে লোক পাঠানো হবে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়ে কয়েক দফা বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। সংবাদ সম্মেলনে একই তথ্য তুলে ধরে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'সৌদি আরবে যেতে আলাদা করে কোনো নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করা হয়নি। সৌদি আরব প্রাথমিকভাবে গৃহস্থালীর কাজের জন্য নারী কর্মী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এখনও তারা কোনো চাহিদাপত্র (ডিমান্ড) পাঠায়নি।' নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'সারা বছরই বিদেশ গমনেচ্ছুদের একটি নিবন্ধন আমরা চালিয়ে যাই। বর্তমানে আমাদের ডাটাবেজে ২২ লাখ লোক নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে নারী কর্মীরাও আছেন। সৌদি আরব থেকে  ডিমান্ড পেলে প্রথমে এই ডাটাবেজ থেকেই কর্মী বাছাই করা হবে। চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী যদি ডাটাবেজে পাওয়া না যায়, তখন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্রে আলাদা নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে।' চাপ সামাল দিতে আপাতত নিবন্ধন বন্ধ রাখা হবে- এ ঘোষণা দিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, 'আগামী ২/১ দিনের মধ্যে ডাটাবেজ পর্যবেক্ষণ করে শুধু নারী কর্মীদের জন্য নিবন্ধন চালু করা হতে পারে।' এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তবে পরিস্থিতির জন্য দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, 'মানুষ তো ঠেকে শেখে, আমরাও শিখলাম। আর এ কারণে অতি উৎসাহী হয়ে মানুষজন নিবন্ধন করতে শুরু করেছেন।' নিবন্ধনে বিভিন্ন সময়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। বিনামূল্যে বিতরণ করার ফরম বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। তাই সাধারণ মানুষকে 'আদম ব্যাপারিদের' থেকে সাবধান থাকারও পরামর্শ দেন প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'নিবন্ধনের বাইরে বাংলাদেশ থেকে কাজ নিয়ে কেউ বিদেশ যেতে পারবে না। কেউ যদি বলে আমাকে টাকা দেন, আমি পাঠাব- তা বিশ্বাস করবেন না। এখন কেউ যদি অতি উৎসাহী হয়ে দালালকে টাকা দেয় তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।'