বাংলাদেশ

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে চার ধাপ অবনমনের মধ্য দিয়ে সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। প্যারিসভিত্তিক রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) প্রকাশিত বৈশ্বিক মুক্ত গণমাধ্যম সূচক-২০১৯ এ বাংলাদেশের এই অবনতির কথা বলা হয়েছে। এই বার্ষিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৮০ দেশের মধ্যে ১৫০তম।প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দুই দেশ, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড।

২০১৯ সালের ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স’ বলছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকারের প্রশ্নে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। সাতটি মাপকাঠিতে বিচার করে একটি দেশের সংবাদমাধ্যম কতটা স্বাধীনতা ভোগ করছে তা বোঝার চেষ্টা করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস। এই সাতটি মাপকাঠি হল- সংবাদমাধ্যমে বহু মতের প্রকাশ, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ, স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপ, আইনি কাঠামো, সংবাদমাধ্যমের কাজে স্বচ্ছতা, অবকাঠামো, সংবাদকর্মীদের ওপর নিপীড়ন। সবগুলো মাপকাঠির স্কোরের গড় করে তৈরি করা হয়েছে একটি দেশের গ্লোবাল স্কোর। ১০০ পয়েন্টের এই সূচকে যে দেশের স্কোর যত কম, সে দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা তত বেশি।

এ বছরের সূচকে ১৫০তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের স্কোর দেখানো হয়েছে ১০০ এর মধ্যে ৫০ দশমিক ৭৪। গতবছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪৮.৬২, আর বিশ্বে অবস্থান ছিল ১৪৬ নম্বরে। গত ছয় বছরের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪ থেকে ১৪৬ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। এবার তা এক ধাক্কায় চার ধাপ নেমে এসেছে।

গত মঙ্গলবার আরএসএফ এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দিক থেকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫০তম। তাদের সূচকে এ বছর বাংলাদেশের স্কোর ৫০ দশমিক ৭৪। অথচ গত বছর ৪৮ দশমিক ৩৬ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৬তম। ইউরোপের দেশ নরওয়ে এবারও টানা তৃতীয় বারের মতো শীর্ষে রয়েছে। দেশটির স্কোর ৭ দশমিক ৮২। অলাভজনক সংস্থা আরএসএফ মুক্ত গণমাধ্যমের পক্ষে বিশ্বজুড়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ২০০২ সাল থেকে তারা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচক প্রকাশ করছে যার মাধ্যমে দেশগুলোর মধ্যে গণমাধ্যম কতটা মুক্তভাবে কাজ করতে পারে তার একটি তুলনামূলক অবস্থার কথা জানা যায়। এবার প্রথম পাঁচটি স্থান পেয়েছে ইউরোপের পাঁচ দেশ। নরওয়ের পরের এই চারটি দেশ হলো যথাক্রমে ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ক।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থানও পড়তির দিকে থাকলেও দুটি দেশই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে ভারত ৪৫ দশমিক ৬৭ স্কোর নিয়ে রয়েছে ১৪০তম স্থানে। এর দুই ধাপ নিচেই পাকিস্তানের স্কোর ৪৫ দশমিক ৮৩। এক বছরে ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থান নেমেছে দুই ও তিন ধাপ। অন্যদিকে ১০৬তম হয়ে অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে নেপালের। তালিকার সবার শেষে রয়েছে তুর্কমেনিস্তান। আর তলার পাঁচে আরও রয়েছে উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, চীন ও ভিয়েতনাম।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি