বাংলাদেশ

এখন মরে গেলেও আফসোস থাকবে না; করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসকের স্ট্যাটাস

কোভিড-১৯ ভাইরাস পজেটিভ হওয়ায় ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া নয়াপাড়া এলাকা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে চিকিৎসক ডা. হামিদা আক্তার সেঁওতিকে। সঙ্গে তার স্বামীকেও। বিষয়টি গণমাধ্যমে এলে তা নিয়ে শুধু হয় নানা সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ডা. হামিদা আক্তারের একটি স্ট্যাটাস তুলে ধরে অনেকে এই চিকিৎসক দম্পতির সুস্থতা কামনা করছেন। ধিক্কার জানাচ্ছেন এলাকাবাসীর আচরণে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে বসে বিভিন্ন জেলার মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টিতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক সময় অমানুষে পরিণত হয়। কীভাবে একজন মানুষকে বের করে দিবেন। বা একজন ডাক্তার সে যদি অসুস্থ হলো তাকেও এলাকা থেকে বের করে দিতে হবে? এই ধরনের ঘটনা কেন বাংলাদেশে ঘটবে। বাংলাদেশের মানুষকে তো এত অমানবিক হওয়ার কথা না।’

ডা. হামিদা আক্তার সেঁওতি'-র ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করা স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘সবাই বলছে কাউকে বলো না। কেন বলব না? আমি তো কোনো দোষ করি নাই। আমি আপনাদের সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি। লকডাউনে যখন আপনারা বাড়িতে বসে সময় কিভাবে কাটাবেন তা নিয়ে দুশ্চিতাগ্রস্ত ছিলেন তখন আমি হয়তো কোনো কোভিড-১৯ পজিটিভ ব্যাক্তির পাশে দাঁড়িয়ে ।

হ্যাঁ আমি কোভিড-১৯ পজিটিভ। এতে আমার কোনো লজ্জা বা ভয় বা আফসোস নাই। বরং আমি খুব গর্বিত। কারণ আমি শেষদিন পর্যন্ত কাজ করে এসেছি। এখন যদি মরেও যাই আমার আফসোস থাকবে না। কারণ আমি ডাক্তার হিসেবে যে শপথ নিয়েছিলাম তা পালন করে এসেছি।

আমি যতদিন পেরেছি আপনাদের জন্যে হাসপাতালে এবং মাঠে কাজ করেছি। যেদিন আমার মনে হল আমার নিজেরই স্যাম্পল পাঠানো দরকার, আমি সাথে সাথে স্যাম্পল পাঠিয়ে নিজেকে কোয়ারান্টাইনড করেছি। আমার পক্ষে যতদূর সম্ভব মানুষ এড়িয়ে চলেছি। নিজের বাড়িতেও ফিরিনি। যেহেতু আমারো পরিবার আছে, বাড়িতে বৃদ্ধ শ্বশুর শ্বাশুড়ি আছেন। তারপরও আজ আমার এলাকার মানুষের কাছে (যে এলাকায় ভাড়া থাকি) যে ব্যবহার পেয়েছি আমি ও আমার স্বামী তা আমি কোনোদিন ভুলব না।

একটা কথা বলে যাই...নগর পুড়লে কি দেবালয় এড়ায়?’