বাংলাদেশ

মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক ৭ জুন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সংসদের বিরোধী নেতা রওশন এরশাদ ছাড়া অন্য বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রীর সাক্ষাতের অ্যাপয়েনমেন্ট করছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন। সফরের দ্বিতীয় দিন (৭ই জুন) বিরোধী নেতাদের সঙ্গে তার সাক্ষাত হবে। এভাবেই সফরসূচি ঠিক করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেও ৭ জুন সাক্ষাত হবে। ওই দিনই সংসদের বাইরে থাকা ৩-৪ শীর্ষ নেতার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির দেখা হতে পারে। একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য মিলেছে। সফর-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সফরের প্রথম দিনে (৬ই জুন) সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি সরকারি কর্মসূচিতে ব্যস্ত সময় কাটাবেন মোদি। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবেন দিল্লি কিং। সেখান থেকে ফিরে যাবেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে। হোটেলে ফেরার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। দুপুরের পর যাবেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। সেখানে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক ছাড়াও মন্ত্রী-উপদেষ্টা ও পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠক, ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিসের উদ্বোধন এবং ঢাকা-দিল্লির মধ্যে নতুন ও নবায়ন মিলে অন্তত ২০টি চুক্তি সইয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। ওই দিনে তার সম্মানে প্রধানমন্ত্রী নৈশভোজের আয়োজন করছেন। হোটেল সোনারগাঁওয়ের ওই ভোজে সরকারের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি সংসদের বিরোধী বেঞ্চের নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। পররাষ্ট্র দপ্তরের একাধিক সূত্রের দাবি, রাষ্ট্রীয় এমন আয়োজনে সংসদের বিরোধী নেতাদের আমন্ত্রণের বিষয়টি নতুন সংযোজন। এমনকি বিরোধী সংসদ নেতার সঙ্গে কোন অতিথির অ্যাপয়েনমেন্টে পররাষ্ট্র দপ্তরের সম্পৃক্ততাও নতুন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে এমনটি হয়ে আসছে জানিয়ে এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বিরোধী সংসদ নেতা রওশন এরশাদের আগ্রহে সরকারিভাবে তার অ্যাপয়েনমেন্ট করা হয়। রাষ্ট্রীয় ভোজেও ওই নেতা এবং তার দলের প্রতিনিধিদের দাওয়াত দেয়া হয়। ওই কর্মকর্তার মতে, ঢাকা সফরে আসা যে কোন বিদেশী অতিথির সঙ্গে দেশের বিরোধী নেতাদের সাক্ষাতের আয়োজন করে স্বীয় দেশের দূতাবাস। বরাবরই এমনটি হয়ে আসছিল। কোন বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া বিরোধী দলের সঙ্গে দূতাবাসের যোগাযোগে উভয়ের সুবিধাজনক সময়ে সাক্ষাৎ হতো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কিংবা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যখন সংসদের বিরোধী নেতা ছিলেন তখনও এমনটি হয়েছে। কিন্তু গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর সেটিতে আংশিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বহুল আলোচিত ওই নির্বাচনের পর একই সঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলের জাতীয় পার্টির বেলায় এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংসদের বিরোধী নেতা রওশন এরশাদ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। দলীয়ভাবে নয়, সরকারি প্রটোকলের মধ্যেই তিনি বিদেশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চান। তার আগ্রহেই সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের আয়োজন চলছে বলে জানান ওই সরকারি কর্মকর্তা। খসড়া সফরসূচি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সফরের দ্বিতীয় দিন সকালে নরেন্দ্র মোদির ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যাবেন। সেখান থেকে ফিরে যাবেন বঙ্গভবনে। সেখানে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও বিজেপি নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর পক্ষে বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মাননা গ্রহণ করবেন তিনি। বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদির হাতে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী ওই সম্মাননা তুলে দেবেন। ওই দিনই বারিধারা কূটনৈতিক জোনের দূতাবাস সড়কে ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধন করবেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে জনবক্তৃতা দেবেন। ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাকা ছাড়ার আগে বিরোধী নেতাদেন সঙ্গে পৃথক সাক্ষাৎ হবে তার। সফরের প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, খসড়া ওই সূচিতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন, সংযোজন-বিয়োজন আনা হচ্ছে। শেষ সময় পর্যন্ত এটি পরিবর্তন হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন কর্মকর্তারা। অন-অ্যারাইভাল ভিসার ঘোষণা আসছে: আকাশপথে ভারত যাওয়া বাংলাদেশী পর্যটকদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেবে ভারত। ঢাকায় মোদি নিজেই এ ঘোষণা দেবেন। তবে সড়ক ও রেলপথে এ সুবিধা থাকবে না বলে জানা গেছে।