বাংলাদেশ

ওমরার নামে সউদী আরবে মানব পাচার

ওমরার নামে সউদী আরবে মানব পাচারে হাব নেতারা জড়িয়ে পড়েছে। জনশক্তি রফতানির বৃহৎ শ্রমবাজার সউদী আরবে দীর্ঘ দিন যাবত অলিখিতভাবে কর্মী নিয়োগ বন্ধ থাকায় ওমরা যাত্রীর ছদ্মাবরণে মানব পাচারের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। চলতি বছর ওমরা যাত্রীর নামে সউদীতে মানব পাচারের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশের অসাধু ওমরা এজেন্সি’র মালিকরা। এসব অসাধু ওমরা এজেন্সি’র মালিকরা রাতারাতি কালো টাকার পাহাড় গড়েছে। প্রতি বছর ওমরার নামে মানব পাচারের সাথে জড়িত রাঘববোয়ালরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। ওমরা যাত্রীর ভিসা প্রাপ্তিতে সরকারী কোনো নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় অসাধু ওমরা এজেন্সির মালিকরা অবাধে মানব পাচারের সুযোগ পাচ্ছে।  সউদী হজ মন্ত্রণালয় ওমরার নামে বাংলাদেশ থেকে মানব পাচারের ঘটনা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ভ্রাতৃ-প্রতীম সউদী আরব ও বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের অবনতি হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে গড়িয়েছে যে ওমরার নামে মানব পাচার এখন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশী ওমরা যাত্রীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মোফা ইস্যুর অন-লাইন বন্ধ (কান্ট্রি লগ) করে দিয়েছে সউদী হজ মন্ত্রণালয়। এতে আসন্ন মাহে রমজানে বাংলাদেশী প্রকৃত ওমরা যাত্রীদের ওমরা পালনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এবাদতের মাস মাহে রমজানে প্রকৃত ওমরা যাত্রীরা মক্কা-মদিনায় দিয়ে রোজা রাখতে ও এতেকাফে অংশ নিতে পারবে কিনা সে ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারছে না। সউদীতে মানব পাচারের ঘটনায় বর্তমানে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে ইমেজ সংকটে ভুগছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক চিঠিতে সউদী হজ মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ থেকে কত ওমরা যাত্রী ওমরা পালনে সউদী গিয়েছে এবং কোন কোন এজেন্সির কতজন যথাসময়ে দেশে ফিরে আসেনি। ধর্ম মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান সউদীতে ওমরার নামে মানব পাচারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকাল শুক্রবার রাতে ইনকিলাবকে বলেন, যারা সউদীতে ওমরার নামে মানব পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে ওমরার নামে যাতে আর মানব পাচারের সুযোগ না থাকে সে ব্যাপারে সরকার সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গত ২৫ মে জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সেলর (হজ) মোঃ আসাদুজ্জামান ১৩৯ নং স্মারকের এক চিঠিতে ধর্ম সচিব চৌধুরী মোঃ বাবুল হাসানকে জানিয়ে ওমরার নানে মানব পাচারকারী ওমরা এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ঐ চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন এ যাবত বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪ হাজার ওমরা যাত্রী ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেনি। এতে সউদী সরকার ঐ দেশের ওমরা কার্য পরিচালানকারী ৫টি এজেন্সির কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারণ উল্লেখিত ৫টি এজেন্সি অন্য কোন দেশের ওমরা যাত্রীদের সউদীতে আনতে পারছে না। ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ওমরার নামে মানব পাচারকারী এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আগামী ওমরা মৌসুমেও বাংলাদেশ থেকে ওমরা পালনে আগ্রহী কোন ব্যক্তিও ভিসা পাবে না। পাচারকারী যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে দেখতে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে একই চিঠির সংযুক্ত দুই ফর্দে সউদীর ৭টি এজেন্সি’র অধীনে ৫০টি বাংলাদেশী ওমরা এজেন্সি’র মাধ্যমে সউদীতে ১১ হাজার ৪শ’৮৩জন ওমরা যাত্রীর দেশে ফেরত না আসার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।  হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর শীর্ষ পর্যায়ের কতিপয় নেতাও সউদীতে মানব পাচারের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। হাবের একজন সাবেক নেতা গতকাল বলেন, চলতি বছর এ যাবত ওমরার নামে প্রায় ১৭ হাজার মানব পাচারের ঘটনা ঘটেছে। এসব নো-ব্যাক-এর তালিকা শিগগিরই দেশে পৌঁছবে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন। ইতিমধ্যে ১১ হাজার ৪শ’ ৮৩ জন নো-ব্যাকের তালিকা সউদী আরব থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। ওমরা পালন করতে গিয়ে এসব নো-ব্যাকের চাকরি সন্ধানকারীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সউদী আরব থেকে দেশে ফিরেনি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। সউদী আরবে ওমরা যাত্রী প্রসেসিংয়ের নামে চাকরি সন্ধানকারী (নো-ব্যাক) পাঠিয়ে এসব এজেন্সি’র মালিকরা রাজধানীর অভিজাত এলাকায় একাধিক অট্টালিকা, নামী-দামি গাড়ী, ফ্লাট ও ঢাকার অদূরে প্লটের মালিক বনে গেছেন। ওমরা এজেন্সি’র কেউ কেউ সুন্দরী ষোড়শীকে দ্বিতীয় বিয়ে করে গোপন ফ্লাটে রেখে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল হাবের একজন সাবেক শীর্ষ নেতা এ চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন।   একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সউদি আরবের যেসব হজ এজেন্সির অধীনে বাংলাদেশি ওমরা যাত্রীরা ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেনি তা’ হচ্ছে , ডাল্লা জেনারেল সার্ভিসেস কোম্পানি, আল-মুসালি ফর ওমরা ইস্ট, মোটদাক আল-হারবী জয়েন্ট লাইবিলিটি কোম্পানি, ফয়েজ ট্রেডিং এন্ড সার্ভিসেস কোম্পানি, শাই’র ট্যুর ডেভেলপমেন্ট ইনকোং, নাজড গ্রুপ কোম্পানি ও শাগাদীফ ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি। এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে না আসা যাত্রীদের সংখ্যা হচ্ছে, জেমিনি ট্রাভেলস লিমিটেডের ৯৩৯ জন যাত্রী দেশে ফিরেনি, এলাইট ট্রাভেলসের ৯৯২জন দেশে ফিরেনি, কে এস পি ট্রাভেলসের ১৮২জন দেশে ফিরেনি, থ্রি স্টার ট্রাভেলসের ২৪১ জন দেশে ফেরেনি, ফ্লাই হোম-এর ২১৫ জন দেশে ফেরেনি, রওশন ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনালের ২৫৩ জন দেশে ফেরেনি, কুমিল্লা ট্রাভেলসের ৬৮ জন দেশে ফেরেনি, গাল্ফ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের ১৪১ জন দেশে ফেরেনি, মাসুদ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের ৬৮৯ জন দেশে ফেরেনি, মারুফ ট্রাভেলসের ৫৮১ জন দেশে ফেরেনি, সবুজ বাংলা ইন্টারন্যাশনালের ৬২২ জন দেশে ফেরেনি, গোল্ডেন বেঙ্গল ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসে ৪২০জন দেশে ফেরেনি, মল্লিক ট্রাভেলসের ৩১৮ জন দেশে ফেরেনি, ইজি ওয়ে ট্রাভেলসের ৩৩৮ জন দেশে ফেরেনি, টপকন ওভারসীজ লিমিটেডের ৩৭১ জন দেশে ফেরেনি, এভারগ্রিণ ট্রাভেলসের ২৮৭ জন দেশে ফেরেনি, টাইমস এভিয়েশনের ৩৬৮ জন দেশে ফেরেনি, এয়ার এক্সপ্রেস ইন্টারন্যাশনালের ১৯৮ জন দেশে ফেরেনি, আল-নূর ইন্টারন্যাশনালের ২১৯ জন দেশে ফেরেনি, আভিয়া ওভারসিজ লিমিটেডের ১৮৬ জন দেশে ফেরেনি, বাংলাদেশ ওভারসিজ সার্ভিসের ১১৮ জন দেশে ফেরেনি, কনকর্ড ইন্টারন্যাশনালের ২০৮ জন দেশে ফেরেনি, গোল্ডেন বেঙ্গল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ৬৭ জন দেশে ফেরেনি, লাব্বাইক ওভারসিজ লিমিটেডের ১৯৭ জন দেশে ফেরেনি, এম এম আর এভিয়েশনের ২১২ জন দেশে ফেরেনি, এমপি ট্রাভেলস লিমিটেডের ১৭৯ জন দেশে ফেরেনি, মেগাটফ ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশ (প্রা.) লিমিটেডের ১০৪ জন দেশে ফেরেনি, মুনা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের ২১৪ জন দেশে ফেরেনি, পারাবত ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের ২১৫ জন দেশে ফেরেনি, রব্বানী ওভারসীজের ৩১১ জন দেশে ফেরেনি, ইউনাইটেড স্টারস ট্রাভেলসের ২১৩ জন দেশে ফেরেনি, উইংস ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের ১০৩ জন দেশে ফেরেনি, সিটি নিওন ট্রাভেলসের ২১৩ জন দেশে ফেরেনি, এডমেয়ার এয়ার ট্রাভেলসের ২১৯ জন দেশে ফেরেনি, পারপাল এভিয়েশন সিস্টেমের ১৯৯ জন দেশে ফেরেনি, কানিজ ট্রাভেলসের ১৬ জন দেশে ফেরেনি, শরিফ এয়ার সার্ভিস লিমিটেডের ৩৬ জন দেশে ফেরেনি, হাসিম ওভারসিজের ৯৪ জন দেশে ফেরেনি, আনজান এয়ার ট্রাভেলসের ১৮২ জন দেশে ফেরেনি, ইস্টার্ন ট্রাভেলসের ৫৯ জন দেশে ফেরেনি, ফারহান এভিয়েশন সার্ভিসের ৬০ জন দেশে ফেরেনি, হাসেম এয়ার ইন্টারন্যাশনালের ১৮ জন দেশে ফেরেনি, লর্ড ট্রাভেলসের ৭৭ জন দেশে ফেরেনি, মদিনা এয়ার ট্রাভেলস লিমিটেডের ৬৩ জন দেশে ফেরেনি, রাজশাহী ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের ৩৭ জন দেশে  ফেরেনি, খাদেম এয়ার সার্ভিসের ৮৬ জন দেশে ফেরেনি, আল-হাজ্জ ট্রাভেলস ট্রেডের ৯ জন দেশে  ফেরেনি এবং রয়েল এয়ার সার্ভিসেস সিস্টেমের ১৬৫ জন দেশে ফেরেনি এবং মিমস ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের ৩ জন দেশে ফেরেনি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (হজ ) ফয়জুর রহমান ফারুকী রাতে ইনকিলাবকে বলেন, ৩১টি অসাধু ওমরা এজেন্সির প্রায় ৪ হাজার ওমরা যাত্রী ওমরা পালন করে দেশে ফিরেনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওমরা যাত্রীর নামে সউদিতে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নিদের্শ দেয়া হয়েছে। উপ-সচিব (হজ) বলেন, শোনা যাচ্ছে ওমরার নামে মানব পাচারের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, আসলে ওমরা যাত্রী প্রেরণে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। হজযাত্রীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয় কিন্ত ওমরা যাত্রীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয় না। এ সুযোগে ওমরার নামে অবাধে মানবপাচার হচ্ছে বলেও উপ-সচিব উল্লেখ করেন। হাবের অনেক নেতাই ওমরার নামে মানবপাচারে জড়িয়ে পড়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি হতবাক হন। ওমরার নামে দেদারসে মানবপাচার চলছে এবং রাঘব বোয়ালরা ধরা- ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাসান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ব্যাপারে ধর্মমন্ত্রীর মন্তব্য নিলেই ভালো হবে। গত ২৫ মে জেদ্দাস্থ কাউন্সেলর হজ আসাদুজ্জামানের চিঠিতে ৫০টি ওমরা এজেন্সির মাধ্যমে ১১ হাজার ৪শ’ ৮৩জন ওমরা পালন শেষে দেশে ফেরেনি সর্ম্পকিত তালিকা যুগ্ম সচিব দেখেনি বলে উল্লেখ করেন। এদিকে, ওমরা শেষে দেশে ফেরত না আসা প্রসঙ্গে জানার জন্য রাতে হাবের সভাপতি মো. ইব্রাহিম বাহার ও মহাসচিব শেখ আব্দুল্লার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাদের পাওয়া যায়নি। হাবের সহ-সভাপতি ফরিদ আহমদ মজুমদার বলেন, আমার গোল্ডেন বেঙ্গল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ১০৯ জন ওমরা যাত্রীর মধ্যে মাত্র ৪ জন ফিরে আসেনি; ৬৭ জন ফিরে না আসার প্রশ্নই আসে না। আমার কাছে সব ডকুমেন্ট রয়েছে। এসব অভিযোগ সঠিক নয়।রাতে চট্টগ্রাম থেকে টেলিফোন করে হাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ জামাল উদ্দিন আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, যে সব দুস্কৃতকারী ওমরার নামে সউদিতে মানব পাচার করে দেশের ভাব-মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে তাদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এসব রাষ্ট্রদ্রোহী মানব পাচারকারী ওমরা এজেন্সির মালিকরা পবিত্র ওমরা ও হজ ব্যবস্থাপনাকে কুলষিত করেছে। আলহাজ জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসব মানব পাচারকারী ওমরা এজেন্সির মালিকদের কারণে প্রকৃত ওমরা এজেন্সির মালিকরা বছরের পর বছর বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, ওমরার নামে মানব পাচারকারী চক্রের (দুস্কৃতকারী) কারণে ওমরা ও হজযাত্রীরা আজ ভয়াবহ সংকটে পতিত হয়েছে। ওমরার নামে এসব মানব পাচারকারী চক্রের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ ঢাকায় হাবে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জড়িত রয়েছে বলে আলহাজ জামাল উদ্দিন আহমেদ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন।  ইতিমধ্যে প্রায় ৬০টি এজেন্সির ১১ হাজারের বেশি ওমরা যাত্রী দেশে না ফেরার তালিকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। হাবের সাবেক সভাপতি বলেন, মানব পাচারকারী চক্ররা দু’দিন আগে এক গোপন মিটিংয়ে বসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলে সউদিতে মানব পাচারের ঘটনা ধামা-চাপা দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, রিয়াদস্থ বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ ও জেদ্দাস্থ কাউন্সেলর হজ আসাদুজ্জামানের সাথে কথা বলেছি, ওমরা শেষে দেশে না ফিরে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে বাংলাদেশে আনা না হলে সউদি হজ মন্ত্রণালয় আমাদের ওমরা যাত্রীদের ভিসা আর খুলবে না। তিনি বলেন, ওমরার নামে মানব পাচারের ঘটনার সাথে জড়িত সউদির ইমিগ্রেশনের অসাধু কর্মকর্তারা এখন জেলে। যেসব দুস্কৃতকারী ওমরা এজেন্সির মালিক মানব পাচারে জড়িত তাদের ওমরা এজেন্সি, হজ এজেন্সির কার্যক্রম এবং জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত লাইসেন্সও সউদি কর্তৃপক্ষ বাতিল করে দিবে। আলহাজ জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, একজন ওমরা যাত্রী ওমরা শেষে দেশে ফেরত না এলে ৫০ হাজার টাকা জরিমান, একাধিক ব্যক্তি ফেরত না এলে জেল, জরিমানা এবং ওমরা লাইসেন্স বাতিল করা হবে এই অঙ্গীকারনামা দিয়ে ওমরা লাইসেন্স পেয়েছি। অথচ ধর্ম মন্ত্রণালয় ওমরার নামে মানব পাচারের বিষয়ে নির্বিকার। তিনি বলেন, আসন্ন রমজানে প্রকৃত ওমরা যাত্রীরা ওমরা পালনে সউদি যেতে পারবেন না। এমন দুঃখজনক ঘটনা কোনো মুসলমান মেনে নিতে পারে না। -