বাংলাদেশ

নেতার প্রাণনাশের হুমকি, জিডি করেও নেই অগ্রগতি

মায়ের জমি বুঝে নিতে চাওয়ায় হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে যাত্রাবাড়ী থানার অন্তর্গত রায়েরবাগ ইউনিট আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। গেল ২১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ব্যক্তিগত প্রয়োজনে দৈনিক ইত্তেফাকের সহ-সম্পাদক এম. এ. এম. ইব্রাহীম শরীয়তপুরের জাজিরায় গেলে এ হুমকি দেওয়া হয়। এসময় অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও তার পরিবারের সদস্যদেরও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় একইদিন জাজিরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এরই সূত্র ধরে চলতি মাসের ২০ এপ্রিল শাহবাগ মোড় হইতে বিআরটিসি দোতলা বাস যোগে কাওরান বাজার কর্মস্থলে  যাওয়ার পথে অজ্ঞাত ৩ জন গাড়িতে উঠে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। উক্ত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা বিবাদী মোকছেদ হোসেন বেন্টিং খানের নামে শরীয়তপুরের জাজিরায় করা জিডি তোলার জন্য বলে। না তুলে নিলে ওই সাংবাদিক ও তার পরিবারের ক্ষতি করবে বলে জানায়। এ মর্মে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করা হয়।   জানা যায়, অভিযুক্ত এই আওয়ামী লীগ নেতা যাত্রাবাড়ী থানার অন্তর্গত রায়েরবাগ ইউনিটের সহ-সভাপতি মোকশেদ হোসেন বেনটিং খান। তার পৈত্রিক বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কবিরাজকান্দি গ্রামে। অভিযুক্ত বেনটিং খান ও বিবাদি সম্পর্কে মামা- ভাগ্নে। দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্ত বেনটিং ভুক্তভোগীর মায়ের জমি জবরদখল ভোগ করে আসছে এবং জমি বুঝে নিতে চাওয়ায় ঘটে বিপত্তি পরবর্তীতে ২১ মার্চ ভুক্তভোগীকে প্রাণনাশের হুমকির দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত এই আওয়ামী লীগ নেতা তার ভাইবোনদের ওয়ারিশনের জমি জবরদখল করে ভোগ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। পৈত্রিক সম্পত্তি বুঝে পেতে অভিযুক্ত বেনটিং খানের বিরুদ্ধে একটি বাটোয়ারা মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।
এলাকা সূত্রে আরও জানা যায়, তার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্যজনের জমি দখল ও বিভিন্ন সময় মানুষকে হয়রানিসহ জাতীয় পরিচয় পত্র জালিয়াতি করে জমি দখল করার অভিযোগ রয়েছে। এমন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় অভিযুক্ত ব্যবহার করেন নিজস্ব বাহিনী। তাই ভয়ে তার বিপক্ষে কথা বলতে সাহস করে না এলাকার মানুষ। এছাড়া যাত্রাবাড়ীতে জমি জবর দখল ও হুমকির অভিযোগে ঢাকায়ও তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা চলামান রয়েছে।    এদিকে জাজিরা থানার সাধারণ ডায়েরির এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিবাদী ভিকটিম সাংবাদিকের মামা হয়। বিবাদীর সাথে তাদের পারিবারিক ভাবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ থাকিলে এর এই জের ধরিয়া গেল ২১/০৩/২০২৪ ইং তারিখ দুপুর বিবাদী তার ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন প্রকার অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয় মেরে লাশ গুম করে ফেলার কথা জানায়।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ইব্রাহীম জানান, এখন আমি গ্রামে যেতে পারছি না, জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কারণে। কিন্তু বিবাদি ঠিকই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে স্বাধীনভাবে। এই যদি হয় আইন ব্যবস্থা, তাহলে কোথায় যাবো। জীবিত থেকেই যদি জীবনের নিরাপত্তা না পাই, তাহলে কি আমাকে মেরে ফেললে জীবনের নিরাপত্তা দেবে। সাধারণ ডায়েরির পর থেকে বেন্টিং খান প্রতিনিয়ত আমার মাকে এবং আমাকে সাধারণ ডায়েরি উত্তোলন করার জন্য হুমকি প্রদান করতেছেন। এ ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত মোকশেদ হোসেন বেনটিং খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। জাজিরা থানার ওসি হাফিজুর রহমান ইত্তেফাককে বলেন, সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে এ মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি পেয়েছি। আমরা উক্ত সাধারণ ডায়েরি কোর্টে প্রেরণ করেছি পরবর্তীতে কোর্ট আমাদেরকে উক্ত ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। এখন আমরা যথাযথ তদন্ত করে কোর্টে প্রতিবেদন জমা দিবো। এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস