বাংলাদেশের শ্রমশক্তির স্বল্প দক্ষতা উচ্চতর হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রধান অন্তরায় বলে মনে করছে সরকার। বাংলাদেশ শিল্পায়ন ও কাঠামোগত পরিবর্তনের দিকে অগ্রসর হলেও প্রবৃদ্ধি অনুয়ায়ী শ্রমশক্তির দক্ষতার মান সঙ্গতিপূর্ণ নয়। উচ্চতর পর্যায়ে দক্ষতার ঘাটতির কারণে প্রতিবছর দেশের মোট প্রবাসী আয়ের এক তৃতীয়াংশ নিয়ে যাচ্ছে বিদেশী শ্রমিকরা। অন্যদিকে দক্ষতার ঘাটতি থাকায় প্রবাসে বাংলাদেশী শ্রমিকরাও অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের তুলনায় স্বল্প আয় করছে। এমতাবস্থায় সার্বিকভাবে দক্ষতার উন্নয়ন ও ক্রমশ: বিদেশী কর্মীদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ, উচ্চতর ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইনকিউবেটর’ তথা ‘উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও উন্নয়ন কেন্দ্র’ স্থাপন এবং ‘বিশেষায়িত স্কিলস বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘দক্ষতা উন্নয়ন : উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের অগ্রাধিকার’ শীর্ষক এক বাজেট পুস্তিকায় এ সুপারিশ করা হয়েছে।
পুস্তিকার মুখবন্ধে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধিতে দেশজ শিল্পের অবদান প্রায় ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ। যা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় কম। দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে শিল্প খাতের অগ্রগতি দক্ষ জনশক্তির অভাবে ব্যহত হচ্ছে। বর্তমানে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা শিল্প কল-কারখানার চাহিদার উপযোগী নয়। প্রকৃত দক্ষতা চাহিদার সঙ্গে দক্ষতা সরবরাহ ব্যবস্থায় অসামঞ্জস্যতা থাকায় বিদ্যমান ঘাটতি পূরণ হচ্ছে না।’
‘শিল্প কারখানাসমূহ বিচ্ছিন্নভাবে দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান করলেও এতে সমন্বয়হীনতা থাকায় তা শিল্প খাতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে না’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে দেশের ৫ কোটি ৮৭ লাখ শ্রমশক্তি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। খাতওয়ারি হিসেবে কৃষি খাতে ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশ, সেবা খাতে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও শিল্প খাতে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ জনগোষ্ঠী কর্মরত রয়েছে। ২০১০ সালের তথ্য অনুযায়ী, এদের ৪০ শতাংশ নিরক্ষর ও ২৩ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষাপ্রাপ্ত।
বর্তমানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শ্রমিকের সংখ্যা আনুমানিক মাত্র ৪৫ লাখ। এসব কর্মজীবীর মধ্যে ব্যবস্থাপক, টেকনিশিয়ান, সহায়ক কর্মী, সেবা ও বিপনন কর্মী, কৃষি-বন ও মৎস খাতে দক্ষ কর্মী, কারু শিল্পে নিয়োজিত কর্মী, প্ল্যান্ট ও মেশিন অপারেটর, যন্ত্রাংশ সংযোজনকারীসহ অন্যান্য প্রাথমিক স্তরের নিয়োজিত কর্মী রয়েছে।
বর্তমানে দেশে যে বিশাল আকারের যুব জনগোষ্ঠী রয়েছে এদের গড় মধ্যম বয়স মাত্র ২৬ বছর। প্রতিবছর গড়ে ২০ লাখ নতুন কর্মী দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে।
উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, শিল্পের প্রবৃদ্ধি, রফতানি বহুমুখীকরণ ও উচ্চ মানসম্পন্ন পণ্য তৈরিতে দক্ষতার উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে পুস্তিকায় বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ৫ শতাংশ বাড়লে উৎপাদনশীলতা ৪ শতাংশ বাড়ে এবং মজুরি ১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ কারণে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দক্ষতার অসামঞ্জস্যতা ও প্রবাসী শ্রমিকদের দক্ষতা ঘাটতি দূরীকরণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
পুস্তিকায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ৭০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছে এবং এরা প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১ হাজার ৫শ’ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠায়। এর বিপরীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২ লাখ বিদেশী কাজ করে। বেতন-ভাতা বাবদ এরা প্রতিবছর প্রায় ৫০০ কোটি ডলার নিয়ে যায়।
দক্ষতার ঘাটতির কারণে প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের আয় অন্যান্য দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের তুলনায় কম। প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের মধ্যে স্বল্প দক্ষ ৫২ শতাংশ, ৩১ শতাংশ দক্ষ, ১৪ শতাংশ আধা-দক্ষ ও মাত্র ২ শতাংশ পেশাজীবী।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে একজন প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৮ দশমিক ৯৫ ডলার। অন্যদিকে একজন ভারতীয় অভিবাসীর মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ১৯৪ দশমিক ২৪ ডলার, ফিলিপাইনের ৪ হাজার ৯৫০ ডলার, নেপালের ৩ হাজার ৩শ’ ডলার ও পাকিস্তানের একজন অভিবাসীর মাথাপিছু আয় হচ্ছে ৩ হাজার ২৪১ দশমিক ৯৪ ডলার।
বাংলাদেশী শ্রমিকদের উচ্চতর পর্যায়ে দক্ষতার ঘাটতির কথা উল্লেখ করে পুস্তিকায় বলা হয়, এর প্রধান কারণগুলো হচ্ছে- শিল্প খাত ভিত্তিক বিশেষজ্ঞের অভাব, কল-কারখানাগুলোতে দক্ষ শ্রমিক ও ব্যবস্থাপকের অভাব, নতুন নতুন যন্ত্রপাতি ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা না থাকা, দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানে কারখানাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও উদ্যোগের অভাব, কর্মরত বিদেশী বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জ্ঞান আহরণে আগ্রহের অভাব। এছাড়া শিল্প কারখানার মালিকরাও বিদেশী বিশেষজ্ঞ নিয়োগে নতুন প্রযুক্তি সরবরাহকারীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকেন।
দেশের শিল্প কারখানায় বিদেশী শ্রমিক নির্ভরতা কমিয়ে আনতে মধ্যম ও উচ্চ পর্যায়ের সুপারভাইজার ও ব্যবস্থাপকদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে পুস্তিকায় আরও বলা হয়, কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে দক্ষতার ঘাটতির কারণে দেশের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় বিশেষত টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক শিল্পে প্রচুর সংখ্যক বিদেশী ব্যবস্থাপক ও কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘দক্ষতা উন্নয়ন : উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের অগ্রাধিকার’ শীর্ষক এক বাজেট পুস্তিকায় এ সুপারিশ করা হয়েছে।
পুস্তিকার মুখবন্ধে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধিতে দেশজ শিল্পের অবদান প্রায় ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ। যা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় কম। দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে শিল্প খাতের অগ্রগতি দক্ষ জনশক্তির অভাবে ব্যহত হচ্ছে। বর্তমানে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা শিল্প কল-কারখানার চাহিদার উপযোগী নয়। প্রকৃত দক্ষতা চাহিদার সঙ্গে দক্ষতা সরবরাহ ব্যবস্থায় অসামঞ্জস্যতা থাকায় বিদ্যমান ঘাটতি পূরণ হচ্ছে না।’
‘শিল্প কারখানাসমূহ বিচ্ছিন্নভাবে দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান করলেও এতে সমন্বয়হীনতা থাকায় তা শিল্প খাতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে না’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে দেশের ৫ কোটি ৮৭ লাখ শ্রমশক্তি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। খাতওয়ারি হিসেবে কৃষি খাতে ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশ, সেবা খাতে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও শিল্প খাতে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ জনগোষ্ঠী কর্মরত রয়েছে। ২০১০ সালের তথ্য অনুযায়ী, এদের ৪০ শতাংশ নিরক্ষর ও ২৩ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষাপ্রাপ্ত।
বর্তমানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শ্রমিকের সংখ্যা আনুমানিক মাত্র ৪৫ লাখ। এসব কর্মজীবীর মধ্যে ব্যবস্থাপক, টেকনিশিয়ান, সহায়ক কর্মী, সেবা ও বিপনন কর্মী, কৃষি-বন ও মৎস খাতে দক্ষ কর্মী, কারু শিল্পে নিয়োজিত কর্মী, প্ল্যান্ট ও মেশিন অপারেটর, যন্ত্রাংশ সংযোজনকারীসহ অন্যান্য প্রাথমিক স্তরের নিয়োজিত কর্মী রয়েছে।
বর্তমানে দেশে যে বিশাল আকারের যুব জনগোষ্ঠী রয়েছে এদের গড় মধ্যম বয়স মাত্র ২৬ বছর। প্রতিবছর গড়ে ২০ লাখ নতুন কর্মী দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে।
উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, শিল্পের প্রবৃদ্ধি, রফতানি বহুমুখীকরণ ও উচ্চ মানসম্পন্ন পণ্য তৈরিতে দক্ষতার উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে পুস্তিকায় বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ৫ শতাংশ বাড়লে উৎপাদনশীলতা ৪ শতাংশ বাড়ে এবং মজুরি ১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ কারণে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দক্ষতার অসামঞ্জস্যতা ও প্রবাসী শ্রমিকদের দক্ষতা ঘাটতি দূরীকরণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
পুস্তিকায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ৭০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছে এবং এরা প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১ হাজার ৫শ’ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠায়। এর বিপরীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২ লাখ বিদেশী কাজ করে। বেতন-ভাতা বাবদ এরা প্রতিবছর প্রায় ৫০০ কোটি ডলার নিয়ে যায়।
দক্ষতার ঘাটতির কারণে প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের আয় অন্যান্য দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের তুলনায় কম। প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের মধ্যে স্বল্প দক্ষ ৫২ শতাংশ, ৩১ শতাংশ দক্ষ, ১৪ শতাংশ আধা-দক্ষ ও মাত্র ২ শতাংশ পেশাজীবী।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে একজন প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৮ দশমিক ৯৫ ডলার। অন্যদিকে একজন ভারতীয় অভিবাসীর মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ১৯৪ দশমিক ২৪ ডলার, ফিলিপাইনের ৪ হাজার ৯৫০ ডলার, নেপালের ৩ হাজার ৩শ’ ডলার ও পাকিস্তানের একজন অভিবাসীর মাথাপিছু আয় হচ্ছে ৩ হাজার ২৪১ দশমিক ৯৪ ডলার।
বাংলাদেশী শ্রমিকদের উচ্চতর পর্যায়ে দক্ষতার ঘাটতির কথা উল্লেখ করে পুস্তিকায় বলা হয়, এর প্রধান কারণগুলো হচ্ছে- শিল্প খাত ভিত্তিক বিশেষজ্ঞের অভাব, কল-কারখানাগুলোতে দক্ষ শ্রমিক ও ব্যবস্থাপকের অভাব, নতুন নতুন যন্ত্রপাতি ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা না থাকা, দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানে কারখানাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও উদ্যোগের অভাব, কর্মরত বিদেশী বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জ্ঞান আহরণে আগ্রহের অভাব। এছাড়া শিল্প কারখানার মালিকরাও বিদেশী বিশেষজ্ঞ নিয়োগে নতুন প্রযুক্তি সরবরাহকারীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকেন।
দেশের শিল্প কারখানায় বিদেশী শ্রমিক নির্ভরতা কমিয়ে আনতে মধ্যম ও উচ্চ পর্যায়ের সুপারভাইজার ও ব্যবস্থাপকদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে পুস্তিকায় আরও বলা হয়, কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে দক্ষতার ঘাটতির কারণে দেশের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় বিশেষত টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক শিল্পে প্রচুর সংখ্যক বিদেশী ব্যবস্থাপক ও কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।