বাংলাদেশ

জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় ২০০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। আগামী তিন বছরে এ অর্থ দেওয়া হবে বাংলাদেশকে।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। দুই দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে ঢাকা ত্যাগের আগে এ ঘোষণা দেন তিনি।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। এই ক্রমবর্ধমান হুমকির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে বাংলাদেশ সরকারকে সর্বোচ্চ সমর্থন দেব আমরা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ২ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক।’

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। বাংলাদেশ অনেকগুলো লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বেশকিছু পদক্ষেপ তারা হাতে নিয়েছে, যা ইতিবাচক।’

তবে উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে সংস্থাটি আগামীতেও কোনো ছাড় দেবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জিম ইয়ং কিম। তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতির প্রশ্নে আমাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিশ্বের যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ঋণের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে নেয় বিশ্বব্যাংক। ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের প্রকল্পগুলোতে কোনো দুর্নীতি হলে বা বিশ্বব্যাংক নিজে দুর্নীতির অভিযোগ তুললে সেক্ষেত্রে কী করা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে জিম ইয়ং বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক মনে করে, যেকোনো প্রকল্প দুর্নীতিমুক্ত হওয়া উচিত। প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে বিশ্বব্যাংক বিষয়টি আমলে নেবে।’

একই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের অনেকগুলো প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি যেন না হয়, সে বিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’

বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘বাংলাদেশে চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে। বর্তমানে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি বাংলাদেশে আমার প্রথম সফর। একই সঙ্গে চলতি দশকে কোনো বিশ্বব্যাংক গ্রুপ প্রেসিডেন্টের প্রথম বাংলাদেশ সফর।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যতো কম সময়ে বেশি এগিয়ে যাচ্ছে, অন্য কোনো দেশ এতো কম সময়ে, এতো এগিয়ে যেতে পারেনি। বাংলাদেশের ভবিষ্যত সুন্দর।’

সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিকসন, ঢাকায় নিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর পিন ইয়াং খান ও ঢাকা অফিসের যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহাবুব সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, রোববার বিকেলে ঢাকায় আসেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য ও বিমোচনের কৌশল সরেজমিনে দেখতেই বাংলাদেশে আসেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন শেষে বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেন তিনি।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি