বাংলাদেশ

বাংলাদেশে গত বছর ৩৮৪৫ শিশু সহিংসতার শিকার, যৌন নির্যাতনের শিকার ৮৯৪

বাংলাদেশে গত বছর গড়ে প্রতিমাসে ২৮টি শিশু হত্যা এবং ৪৯টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনাতনে গত বছরে সার্বিক শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান হয়।

এতে দেখা গিয়েছে মোট তিন হাজার ৮৪৫টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে যাদের মধ্যে এক হাজার ৭১০টি শিশু বিভিন্ন ধরনের অপমৃত্যুর শিকার এবং ৮৯৪টি শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এসবের মূলে বিচারহীনতা ও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা কারণ বলে ফোরামের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

গত বছরে সার্বিক শিশু অধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ছিল বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এতে রিপোর্ট তুলে ধরেন ফোরামের পরিচালক আবদুস সহিদ। তিনি বলেন, গত বছরে ১২ মাসের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সংবাদ পর্যালোচনা করে এসব তথ্য তৈরি করা হয়।

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম জাতীয় পর্যায়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন ২৬৯টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) একটি জাতীয় নেটওয়ার্ক। ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নের লক্ষে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশে শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম। ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে ‘স্টেট অফ চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে।

এসব তথ্যে দেখানো হয় ২০১৬ সালে তিন হাজার ৫৮৯টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল যাদের মধ্যে এক হাজার ৪৪১ শিশু অপমৃত্যুর এবং ৬৮৬ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। অর্থাৎ ২০১৭ সালে সামগ্রিকভাবে শিশু নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা বেড়েছে ৭.১৩%, যার মধ্যে শিশু অপমৃত্যু এবং যৌন নির্যাতন বেড়েছে যথাক্রমে ১৮.৬৭% এবং ৩০.৩২%।

২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে শিশু হত্যা এবং ধর্ষণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ২০১৭ সালে ৩৩৯টি শিশু হত্যা এবং ৫৯৩টি শিশু ধর্ষিত হয়েছে যা ২০১৬ সালের চেয়ে যথাক্রমে ২৮% এবং ৩৩% বেশি। সেই সাথে বেড়েছে গণধর্ষণ, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ, বখাটেদের মারধর-কুপিয়ে জখম করা এবং গোপনে অশ্লীল ভিডিও ধারন করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার প্রবণতা।

তবে ২০১৭ সালে ২০১৬ সালের তুলনায় কিছুটা কমেছে বাবা-মায়ের হাতে শিশু হত্যা (-২২%), শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের শারীরিক নির্যাতন (-৫৫%) এবং কথিত চুরির অপরাধে দরিদ্র শিশুদের পিটিয়ে নির্যাতন (-৩৮%)।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি