কলাম

প্রশাসনের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ শীঘ্রই

এবার গণবিক্ষোভ আওয়ামীলীগের বিরূদ্ধে নয়; নীতিবিবর্জিত ও স্বার্থান্ধ প্রশাসনের বিরূদ্ধে। জনগণ যেকোন সময় প্রশাসনের বিরূদ্ধে গণবিক্ষোভে ফেটে পড়তে পারে। প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ আওয়ামীলীগ সরকারের কাছ থেকে বেপরোয়া সুযোগ-সুবিধা পেয়ে স্বার্থান্ধ ও তাবেদারে পরিণত হয়েছে। তারা ইতিহাসের নিকৃষ্টতম প্রশাসক বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরের স্বার্থান্ধ ও তাবেদারি চরিত্রকেও হার মানিয়েছে। মীরজাফর স্বার্থের মোহে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীনতা ইংরেজদের কাছে বিকিয়েছে। বর্তমান প্রশাসন স্বার্থের বশে একাদশ নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে অন্যায়ভাবে আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করেছে। অথচ তাদের স্বার্থ জনগণের করের পয়সা থেকেই আসে। তারা তাদের মেধা, মনন ও নৈতিকতার গৌরবোজ্জ্বল অবস্থান থেকে কলঙ্কের আস্তাকুড়েঁ পতিত হয়েছে। এর মূল নায়ক সাবেক প্রশাসক ও বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। পুলিশ, সেনা, বিজিবি ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাও নিকৃষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। নির্বাচনের পূর্বমুহুর্তে বিরোধী নেতাকর্মীদের বেআইনী আটক করে ইতিহাসে কালো অধ্যায় সূচণা করেছে। জনগণ তাদের করের পয়সায় এমন অন্ধ ও তাবেদার প্রশাসন পুষবেনা। দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে তাবেদার প্রশাসনকে সরিয়ে তদস্থলে যোগ্যদের নিযুক্ত করবে।
একাদশ নির্বাচনের পর জনগণ আওয়ামীলীগকে গ্রহণ করেছে ইংরেজ শাসক হিসেবে আর বর্তমান প্রশাসনকে গ্রহণ করেছে বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর হিসেবে। বাংলার জনগণ ইংরেজদের চেয়ে বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরকে অধিক ঘৃণা করে। একাদশ নির্বাচনের পর বর্তমান প্রশাসনও তেমনি ঘৃণিত হয়েছে। এখন গণআন্দোলনের পালা। জনগণ তাবেদার প্রশাসনের বিরূদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলবে।
১৯৭১ সালে এদেশের অসংখ্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা পাক হানাদার বাহিনীর তাবেদারি করেছে। তাদের মধ্যে বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জামাতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড, ওয়াজেদ মিয়া পরমাণু কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া ম, খা, আলমগীর ও আশিকুর রহমান গং মহকুমা প্রশাসক ছিলেন। তারা পাক হানাদারদের তাবেদারি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন বাধাগ্রস্থ করেছে। দেশের জনগণ তাদের ক্ষমা করেনি। অধিকাংশই করুণ পরিণতি ভোগ করেছে। বাঙ্গালি জাতির পিতা নিজের জামাতার প্রতি দয়াপরবশ হয়ে কতিপয়কে দায়মুক্ত করেছেন। নইলে তাদের পরিণতিও একই হতো। বর্তমান প্রশাসন তাদের চেয়েও নিকৃষ্ট। তারা জনগণের মৌলিক অধিকার ও ভোটাধিকার কেড়ে বেপরোয়া গুম, খুন ও অবিচারে মেতেছে। একটি অনুমিত সুত্র থেকে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ সরকার বেশ কয়েকজন জেলা প্রশাসককে দু’একটি করে আসন ঐক্যফ্রন্টকে ছাড়তে বলেছিল। কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা অতি উৎসাহী হয়ে নিজেদের পদোন্নতির আশায় একচেটিয়া আওয়ামীলীগকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। এতে নির্বাচন শতভাগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগও অতি উৎসাহী কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছে। তারাও প্রশাসনের বিরূদ্ধে গণবিক্ষোভে অংশ নিতে পারে। মূলত দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় বর্তমান মীরজাফর প্রশাসনকে হটানো জরুরী।