শাহরুখ খান, বলিউডের ‘বাদশাহ’ তিনি। শুধু ভারত নয়, আজ সারা দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে আছে তার অসংখ্য ভক্ত। তার নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে প্রেমের প্রতীক এক রূপকথার নায়কের মুখ। তিন দশক ধরে ভারতীয় সিনেমা প্রেমীদের হৃদয় জয় করে তিনি হয়েছেন তারকাদেরও তারকা। আজ তার জন্মদিন।
৬০ বছর আগের আজকের এই দিনে জন্মেছিলেন সুপারস্টার শাহরুখ খান।
শাহরুখ খান ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব এবং কিশোর বয়সজুড়ে অভিনয় ও নৃত্যের প্রতি আগ্রহ ছিল প্রকট। দিল্লি ইউনিভার্সিটির হংসরাজ কলেজ থেকে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন শাহরুখ।
দিল্লির ‘ফৌজি’ এবং ‘সার্কাস’ নামের টেলিভিশন ধারাবাহিকের মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হয় শাহরুখের। ১৯৯২ সালে রাজ কাওয়ার পরিচালিত ‘দিওয়ানা’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পথ চলা। তারপর থেকে আর থেমে থাকতে হয়নি তাকে। প্রেম, অ্যাকশন, কমেডি, ট্র্যাজেডি- সব ধরনের চরিত্রে দর্শকদের মুগ্ধ করে নিজেকে পরিণত করেছেন কিং, তারপর বাদশাহ। বলিউডে গড়ে তুলেছেন তার বিশাল সাম্রাজ্য। শাহরুখের ক্যারিয়ারটি মূলত প্রেম এবং আবেগের প্রতীক হিসেবে গড়ে উঠেছে। ১৯৯৫ সালে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমার হাত ধরে বলিউডের ইতিহাসে প্রেমের এক নতুন উপাখ্যান লিখেছিলেন শাহরুখ। এটি ছাড়াও বাজিগর, কুছ কুছ হোতা হ্যায়, দিল তো পাগল হ্যায়, দেবদাস, ভীর-জারা সিনেমাগুলো তাকে প্রেমের রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ডর এর ‘অ্যান্টিহিরো’ থেকে রাতারাতি তিনি হয়ে ওঠেন ‘কিং অব রোমান্স’। তবে শুধু রোমান্স নয়, স্বদেশ, চাক দে! ইন্ডিয়া সিনেমাতেও তিনি সামাজিক ও দেশাত্মবোধক চরিত্রে দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছেন। একসময় শাহরুখ চেয়েছিলেন অ্যাকশন হিরোরূপে নিজেকে প্রমাণ করতে। সেক্ষেত্রেও তিনি সফল। ডন সিরিজ ও পাঠান, জওয়ান সিনেমায় দেখিয়েছেন অ্যাকশনের মুন্সিয়ানা। নায়িকা হিসেবে কাজল, মাধুরী দীক্ষিত, রানী মুখার্জি, জুহি চাওলারা ছিলেন শাহরুখের ক্যারিয়ার শুরুর দিকের সাফল্যের সঙ্গী। এছাড়াও তিনি জুটি বেঁধে সফল হয়েছেন শ্রীদেবী, রাভিনা ট্যান্ডন, মনীষা কৈরালা, মহিমা চৌধুরীদের সঙ্গে। পরবর্তী প্রজন্মে শাহরুখ বাজিমাত করেছেন দীপিকা পাডুকোন, ক্যাটরিনা কাইফ, আনুশকা শর্মাদের নায়ক হয়েও। পরিচালকদের মধ্যে তিনি কাজ করেছেন যশ চোপড়া, মনি রত্নম, সঞ্জয়লীলা বানসালি, ফারাহ খান, করণ জোহর, সিদ্ধার্থ আনন্দ, রোহিত শেঠি, রাজকুমার হিরানী, অ্যাটলিদের সঙ্গে। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন শাহরুখ। দিনে দিনে নিজেকে তিনি ভারতের গন্ডি পেরিয়ে গ্লোবাল স্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার স্টারডম আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ার নানা দেশে ছড়িয়েছে বিশাল ফ্যানবেসের মাধ্যমে। প্রতি বছর জন্মদিনে হাজারো ভক্ত কলকাতা, মুম্বাই এবং বিদেশ থেকে তাকে দেখতে আসেন। তার ফ্যান ক্লাব থেকে নানা সামাজিক দায়িত্ব পালনে ক্যান্সার রোগী, বৃদ্ধাশ্রম ও বিশেষ চাহিদাযুক্ত শিশুদের জন্য নিয়মিত চ্যারিটি ইভেন্ট আয়োজন করা হয় তার জন্মদিনকে ঘিরে। নারীর প্রতি শাহরুখ খানের শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতা অনন্য। এজন্য তার নারী ভক্তের সংখ্যা অগুনতি। কিশোরী থেকে আশি বছরের বৃদ্ধা সবাই ভালোবাসেন এই অভিনেতাকে। মানেন আদর্শও। ব্যক্তিজীবনে গৌরি খানকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন শাহরুখ। সেই সংসারে তিন সন্তান আরিয়ান, সুহানা ও আব্রামকে নিয়ে সুখেই কাটছে তার জীবন। শাহরুখের উত্থানের কাহিনিজুড়ে আছে তার পরিবার। শাহরুখ প্রায়ই বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় অর্জন আমার পরিবার।’ কাজের অবসরে নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন কিং খান। এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেছিলেন যে নিজের সন্তানদের রক্ষা করতে তিনি চলন্ত গাড়ির সামনেও ঝাঁপিয়ে পড়তে একটুও ভাবেন না। মানবিকতা, বিনয়, সততা এসব গুণ তাকে চলচ্চিত্রের বাইরেও মানুষের কাছে প্রিয় করেছে। তবে বিতর্কও এড়ায়নি। কখনো কখনো তার বক্তব্য বা কাজ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু তিনি সবসময় আত্মবিশ্বাস, শ্রম, মেধার বিকাশ ঘটিয়ে এগিয়ে গেছেন। ৬০ বছরে এসেও সেই যাত্রা চলমান। শাহরুখের আবাস ‘মান্নাত’ এখন মুম্বাইয়ের অন্যতম দ্রষ্টব্যস্থান হয়ে উঠেছে। আজকের বিশেষ দিনটিতে প্রিয় নায়ককে একমুহুর্ত দেখার অপেক্ষায় হাজার হাজার মানুষ ভিড় করবেন মান্নাতের সামনে। শুভ জন্মদিন, শাহরুখ খান।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শাহরুখ খান ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব এবং কিশোর বয়সজুড়ে অভিনয় ও নৃত্যের প্রতি আগ্রহ ছিল প্রকট। দিল্লি ইউনিভার্সিটির হংসরাজ কলেজ থেকে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন শাহরুখ।
দিল্লির ‘ফৌজি’ এবং ‘সার্কাস’ নামের টেলিভিশন ধারাবাহিকের মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হয় শাহরুখের। ১৯৯২ সালে রাজ কাওয়ার পরিচালিত ‘দিওয়ানা’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পথ চলা। তারপর থেকে আর থেমে থাকতে হয়নি তাকে। প্রেম, অ্যাকশন, কমেডি, ট্র্যাজেডি- সব ধরনের চরিত্রে দর্শকদের মুগ্ধ করে নিজেকে পরিণত করেছেন কিং, তারপর বাদশাহ। বলিউডে গড়ে তুলেছেন তার বিশাল সাম্রাজ্য। শাহরুখের ক্যারিয়ারটি মূলত প্রেম এবং আবেগের প্রতীক হিসেবে গড়ে উঠেছে। ১৯৯৫ সালে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমার হাত ধরে বলিউডের ইতিহাসে প্রেমের এক নতুন উপাখ্যান লিখেছিলেন শাহরুখ। এটি ছাড়াও বাজিগর, কুছ কুছ হোতা হ্যায়, দিল তো পাগল হ্যায়, দেবদাস, ভীর-জারা সিনেমাগুলো তাকে প্রেমের রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ডর এর ‘অ্যান্টিহিরো’ থেকে রাতারাতি তিনি হয়ে ওঠেন ‘কিং অব রোমান্স’। তবে শুধু রোমান্স নয়, স্বদেশ, চাক দে! ইন্ডিয়া সিনেমাতেও তিনি সামাজিক ও দেশাত্মবোধক চরিত্রে দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছেন। একসময় শাহরুখ চেয়েছিলেন অ্যাকশন হিরোরূপে নিজেকে প্রমাণ করতে। সেক্ষেত্রেও তিনি সফল। ডন সিরিজ ও পাঠান, জওয়ান সিনেমায় দেখিয়েছেন অ্যাকশনের মুন্সিয়ানা। নায়িকা হিসেবে কাজল, মাধুরী দীক্ষিত, রানী মুখার্জি, জুহি চাওলারা ছিলেন শাহরুখের ক্যারিয়ার শুরুর দিকের সাফল্যের সঙ্গী। এছাড়াও তিনি জুটি বেঁধে সফল হয়েছেন শ্রীদেবী, রাভিনা ট্যান্ডন, মনীষা কৈরালা, মহিমা চৌধুরীদের সঙ্গে। পরবর্তী প্রজন্মে শাহরুখ বাজিমাত করেছেন দীপিকা পাডুকোন, ক্যাটরিনা কাইফ, আনুশকা শর্মাদের নায়ক হয়েও। পরিচালকদের মধ্যে তিনি কাজ করেছেন যশ চোপড়া, মনি রত্নম, সঞ্জয়লীলা বানসালি, ফারাহ খান, করণ জোহর, সিদ্ধার্থ আনন্দ, রোহিত শেঠি, রাজকুমার হিরানী, অ্যাটলিদের সঙ্গে। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন শাহরুখ। দিনে দিনে নিজেকে তিনি ভারতের গন্ডি পেরিয়ে গ্লোবাল স্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার স্টারডম আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ার নানা দেশে ছড়িয়েছে বিশাল ফ্যানবেসের মাধ্যমে। প্রতি বছর জন্মদিনে হাজারো ভক্ত কলকাতা, মুম্বাই এবং বিদেশ থেকে তাকে দেখতে আসেন। তার ফ্যান ক্লাব থেকে নানা সামাজিক দায়িত্ব পালনে ক্যান্সার রোগী, বৃদ্ধাশ্রম ও বিশেষ চাহিদাযুক্ত শিশুদের জন্য নিয়মিত চ্যারিটি ইভেন্ট আয়োজন করা হয় তার জন্মদিনকে ঘিরে। নারীর প্রতি শাহরুখ খানের শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতা অনন্য। এজন্য তার নারী ভক্তের সংখ্যা অগুনতি। কিশোরী থেকে আশি বছরের বৃদ্ধা সবাই ভালোবাসেন এই অভিনেতাকে। মানেন আদর্শও। ব্যক্তিজীবনে গৌরি খানকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন শাহরুখ। সেই সংসারে তিন সন্তান আরিয়ান, সুহানা ও আব্রামকে নিয়ে সুখেই কাটছে তার জীবন। শাহরুখের উত্থানের কাহিনিজুড়ে আছে তার পরিবার। শাহরুখ প্রায়ই বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় অর্জন আমার পরিবার।’ কাজের অবসরে নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন কিং খান। এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেছিলেন যে নিজের সন্তানদের রক্ষা করতে তিনি চলন্ত গাড়ির সামনেও ঝাঁপিয়ে পড়তে একটুও ভাবেন না। মানবিকতা, বিনয়, সততা এসব গুণ তাকে চলচ্চিত্রের বাইরেও মানুষের কাছে প্রিয় করেছে। তবে বিতর্কও এড়ায়নি। কখনো কখনো তার বক্তব্য বা কাজ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু তিনি সবসময় আত্মবিশ্বাস, শ্রম, মেধার বিকাশ ঘটিয়ে এগিয়ে গেছেন। ৬০ বছরে এসেও সেই যাত্রা চলমান। শাহরুখের আবাস ‘মান্নাত’ এখন মুম্বাইয়ের অন্যতম দ্রষ্টব্যস্থান হয়ে উঠেছে। আজকের বিশেষ দিনটিতে প্রিয় নায়ককে একমুহুর্ত দেখার অপেক্ষায় হাজার হাজার মানুষ ভিড় করবেন মান্নাতের সামনে। শুভ জন্মদিন, শাহরুখ খান।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস