ফিচার

পৃথিবীকে বদলে দেওয়া ভাষণ!

একেকটা অক্ষর, একেকটা শব্দ আর সেই শব্দ দিয়ে সাজানো বাক্যের ভেতরে থাকা জমাট আবেগ- এই উপাদানগুলোর পরিপূর্ণ মিশেল যখন ধ্বনিত হয় কোন এক বীরের কন্ঠে, খুব বেশি সময় লাগেনা পুরো পৃথিবীর পাল্টে যেতে। সাধারণ কিছু শব্দ যেন ভিন্নমাত্রার অর্থ খুঁজে পায় দেশপ্রেমীর দীপ্ত চোখের প্রত্যয়ে। বেঁচে থাকে মানুষের জীবনে, পৃথিবীর ইতিহাসে ধ্বংসের আগ মুহূর্ত অব্দি। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত এমন অনেক মঞ্চ তৈরি হয়েছে, তাতে অনেকেই বক্তৃতা দিয়েছেন। তবে সেসব বক্তৃতার মধ্যে থেকে কিছু রয়ে গিয়েছে একেবারেই আলাদা। আর এই আলাদা, অনন্য আর পৃথিবীকে বদলে দেওয়া শক্তিশালী ভাষণগুলোর ভেতর থেকে চলুন দেখে নেই কয়েকটিকে।

১. নারীদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ভাষণ

ভাষণদাতা- সুজান বি. অ্যান্থনি

সময়কাল- ১৮৭৩

চুম্বকাংশ- “ এটা আমরা, সাধারন জনগণ ছিলাম, সাদা পুরুষ কিংবা পুরুষ নাগরিক নয়, কিন্তু আমরা, সংঘকে তৈরিকারী প্রতিটি জনগন ছিলাম। আর আমরা এটা স্বাধীনতার আশীর্বাদ অর্পণ করতে তৈরি করিনি, তাদের নিরাপদ করতে তৈরি করেছি। আমাদের অর্ধেককেই নয়, বরং পুরোটাকে- নারী এবং পুরুষকে! “

যেভাবে পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছিল- বর্তমানে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও রাষ্ট্রের প্রদানকৃত অন্যতম অধিকার ভোটাধিকার উপভোগ করে। তবে এমনটা সবসময় ছিলনা। এমন একটা সময় ছিল যখন নারীদের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিলনা। ঠিক সেসময়েই প্রথম নারী হিসেবে ভোট প্রদান করেন সুজন আর জরিমানা হয় তার। না! সেই জরিমানা কখনোই দেননি সুজান। বরং, উল্টো ক্ষেপে গিয়ে প্রতিবাদ করেন, সবাইকে নিয়ে সোচ্চার হন। প্রতিষ্ঠিত হয় নারীদের ভোটাধিকার!

২. ১৪ দফা ভাষণ

ভাষণদাতা- রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন

সময়কাল- ৮ জানুয়ারি, ১৯১৮

চুম্বকাংশ- “ পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষই লাভের খাতিরে একে অন্যের অংশীদার, এবং আমাদের দিক দিয়ে এটা বলা যায় যে সেই পর্যন্ত আমাদের সাথে ন্যায়বিচার হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা অন্যদের সাথে ন্যায়বিচার করব। “

যেভাবে পৃথিবীকে বদলে দিয়েছিল- পৃথিবীতে এখন অব্দি মোট দুটি বিশ্বযুদ্ধ ঘটে গিয়েছে। আর সেগুলোর প্রথমটি, অর্থ্যাত্ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশ বড় ধরনের একটি প্রভাব রাখে আমেরিকার তত্কালীন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসনের এই ভাষণটি। যতটা না বিশ্বযুদ্ধকে থামিয়ে আমেরিকার অবস্থান পরিষ্কার করতে, তারচাইতেও বেশি তত্কালীন জাতিপুঞ্জ, বর্তমান জাতিসংঘের পূর্বরূপ, গঠনে সাহায্য করে এটি ( হিস্টোরি নিউজ নেটওয়ার্ক )।

৩. আমি স্বপ্ন দেখি

ভাষণদাতা- মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র

সময়কাল- ২৮ আগস্ট, ১৯৬৩

চুম্বকাংশ- “ আমি স্বপ্ন দেখি যে একদিন প্রতিটি উপত্যকা সমুচ্চ হবে, এবং প্রতিটি পাহাড় এবং পর্বত নীচু করে বানানো হবে, এবরো-খেবড়ো স্থানগুলো সমতল বানানো হবে, এবং কুঞ্চিত স্থানগুলো সোজা তৈরি হবে: এবং লর্ডের গুনগাণ প্রকাশ পাবে এবং সবাই সেটা দেখবে। “

যেভাবে পৃথিবীকে বদলে দিয়েছিল- বিশ্বের জন্যে আমেরিকার স্বাধীনতা খুব বড় একটা ব্যাপার। আর এই স্বাধীনতার পেছনে বেশ ভালোরকম হাত ছিল মার্টিন লুথার কিংএর এই ভাষণটির। আমেরিকার জনগনকে স্বাধীনতার মানে আর গনতন্ত্রের মূল কথা বুঝিয়ে বলেন তিনি এই ভাষণের মাধ্যমে।

(নিউজটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)