আন্তর্জাতিক

পা-বিহীন সিরিয়ান শিশুটির হাঁটার ব্যবস্থা করল তুরস্ক

সিরিয়ার মায়া মেরহি। বয়স মাত্র আট বছর। জন্মগত কারণে দুই পা ছাড়াই পৃথিবীতে এসেছে মেরহি। সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধের সময় আশ্রয় নিয়েছিল আলেপ্পোর একটি শরণার্থী শিবিরে। মায়া মেরহি, তার বাবার সাথে আলেপ্পোর একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাস করতো। সেখান থেকে ইদলিবে পালিয়ে যাওয়ার পর তার কিছু ছবি প্রকাশ পায়।

এসব ছবিতে দেখা যায় সে পা দিয়ে হাটার জন্য টিউব ও টিনের কৌটা দিয়ে কৃত্তিম উপায়ে তৈরি করা পা দিয়ে হাটছে। তার বাবা কৃত্তিম এসব পা তাকে বানিয়ে দিয়েছে যাতে করে তাকে বালির গরম ও ময়লা আবর্জনায় গড়াগড়ি না খেতে হয়।

মায়ার বাবার পরিস্থিতিও তার মতো। জন্ম থেকেই তারও দুই পা নেই। কৃত্রিম পায়ের ওপর ভর করে চলতে হয় তাকেও। শরণার্থী জীবনে মেয়েকে নিয়ে ব্যাপক কষ্ট হচ্ছিল তার। সে কারণে নিজেই মেয়ের জন্য কৃত্রিম পায়ের ডিজাইন করেন। সেই কৃত্রিম পা থাকার ফলে উষ্ণ বালি, নোংরা জিনিসপত্র থেকে কিছুটা বাঁচতে পারে মায়া।

অবিশাস্য হলেও সত্যিও যে, এই কৃত্তিম পা নিয়ে সে দিব্যি তাবুর বাইরে আসতো। সে হেটে শরণার্থী শিবিরের স্কুলেও যেত এই কৃত্তিম পা নিয়েই।

বিশ্ববাসী তার করুণ অবস্থা দেখার পর তুরস্কের রেড ক্রিসেন্ট মেরেহি ও তার বাবাকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে।

চিকিৎসক ডা. মেহমেট জেকি বলেন, বর্তমানে মায়া খুব খুশ। তার স্বাস্থ্যও ভালো। এমনকি সে কারো সাহয্য ছাড়াই ভালোভাবে হাঁটতেও পারছে। মাস তিনেকের মধ্যে মায়া স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, তার বাবা তার জন্য কৃত্তিম পা তৈরি করে দেয়ার ফলে সে আগে থেকেই হাঁটতে অভ্যস্ত ছিল। তাই সে খুব দ্রুত তা শিখতে পারছে।

মায়া মেরহি ও তার বাবা দুজনেই স্বাভাবিকভাবে হাটতে পারবে বলে আশাবাদী মেহমেট জেকি। 

সিরিয়ায় গত ৭ বছরের যুদ্ধে কতজন নিহত হয়েছেন তার কোন সঠিক তথ্য নেই। তবে ধারণা করা হয় ৪ লাখ ৬৫ হাজারের অধিক মানুষ নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন এক মিলিয়নের অধিক।

দেশটির যুদ্ধপূর্বাবস্থার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষ তাদের দেশ ত্যাগ করেছে।

এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি