ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে
বসতবাড়ি। সেই ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে দেখছেন এক
আফগান নাগরিক, যদি কিছু প্রয়োজনীয়
জিনিসপত্র অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
আফগানিস্তানের পানশির উপত্যকার
রামানখেল গ্রাম থেকে গতকাল তোলা ছবি।
ছবি : এএফপি
আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল
দক্ষিণ এশিয়া। গতকাল সোমবার দুপুরে ৭
দশমিক ৫ মাত্রার এই ভূমিকম্পে
পাকিস্তানে অন্তত ২০০ এবং
আফগানিস্তানে প্রায় ৩৩ জন নিহত হয়েছে
বলে খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে
হাজারেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে
আফগানিস্তানে আতঙ্কে স্কুল থেকে বের
হতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২
ছাত্রীর। তীব্র কম্পনে
টেলিযোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে
পড়ায় হতাহতদের সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য
পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। মৃতের সংখ্যা
আরো বাড়তে পারে। ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে
বাংলাদেশ ও ভারতেও।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তরের
(ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময়
বিকেল ৩টা ৯ মিনিটে অনুভূত এই ভূমিকম্পের
উৎপত্তিস্থল ছিল আফগানিস্তানের জারম
থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-
পশ্চিমে হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে, ভূপৃষ্ঠের
২১২ কিলোমিটার গভীরে। ওই এলাকার
কাছেই পাকিস্তান ও তাজিকিস্তানের
সীমান্ত।
প্রায় পুরো পাকিস্তানে গতকাল ভূমিকম্প
অনুভূত হয়। তবে উত্তরাঞ্চলে এর তীব্রতা
ছিল মারাত্মক। মাত্র ৪০ সেকেন্ডের এই
ভূমিকম্পে পার্বত্য এলাকায় ভবনধস, ভূমিধস
ও পদদলিত হয়ে ২০০ জনের মৃত্যুর খবর জানা
গেছে। তবে কর্মকর্তাদের আশঙ্কা মৃতের
সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। প্রত্যন্ত
পার্বত্য এলাকায় মাত্র এক মিনিটের
ভূমিকম্পই যে তাণ্ডব ঘটিয়ে গেছে, তার
পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতে কয়েক দিন লেগে
যাবে। ভূমিকম্পের ৪০ মিনিট পর একই
এলাকায় ৪ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি
ভূকম্পন অনুভূত হয়।
ইতিমধ্যে ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনার জন্য
সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চিত্রল প্রদেশের পুলিশপ্রধান শাহজাহান
জানান, সেখানে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু
হয়েছে। তিনি বলেন, ‘টেলিফোন যোগাযোগ
বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় আমরা যোগাযোগ
করতে পারছি না। নিহতের সংখ্যা আরো
বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।’ উত্তর-
পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারেও একজন
নিহত হয়েছে। সেখানে অন্তত দেড় শ মানুষ
আহত অবস্থায় লেডি রিডিং হাসপাতালে
ভর্তি হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা
জানিয়েছেন। জেলার মেয়র আরবাব মুহাম্মদ
আসিম বলেন, শহরের বহু বাড়ি ও ভবন ধসে
পড়েছে। এখনো বহু লোক চাপা পড়ে আছে।
বাদাখশন প্রদেশের গভর্নর সালাহ
উবাইদুল্লাহ আবিদ জানান, তাঁর এলাকায়
অন্তত ৪০০ ঘরবাড়ি ধসে গেছে।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ
ব্যবস্থাপনা দপ্তরের প্রাদেশিক প্রধান
আবদুল রাজ্জাক জিনদার বলেন, ভূমিকম্পের
সময় দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় তালোকান
শহরের একটি স্কুল থেকে হুড়োহুড়ি করে বের
হতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ১২ ছাত্রী প্রাণ
হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৪০ জন। আর
পূর্বাঞ্চলীয় নানগরহার প্রদেশে নিহত
হয়েছে আরো পাঁচজন; আহত হয়েছে বহু মানুষ।
ভূমিকম্পে আফগানিস্তানের রাজধানী
কাবুল ভয়ানকভাবে কেঁপে উঠলেও সেখানে
তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর
পাওয়া যায়নি। তবে আতঙ্কে বহু মানুষ
বাড়িঘর ও অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায়
নেমে আসে। ভূমিকম্প-পরবর্তী করণীয়
নির্ধারণে দেশটির প্রধান নির্বাহী
আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ বিকেলে জরুরি
বৈঠকে বসেন। ভূমিকম্প-পরবর্তী ভূকম্পন
অনুভূত হতে পারে বলে সতর্ক করে তিনি
জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে
আফগানিস্তানে অনুভূত সবচেয়ে তীব্র
ভূমিকম্প এটি।
ভারতেও গতকাল তীব্র কম্পন অনুভূত হয়।
রাজধানী দিল্লিতে কম্পন অনুভূত হতেই
আতঙ্কে ঘরবাড়ি, অফিস ছেড়ে রাস্তায়
বেরিয়ে আসে লোকজন। সাময়িকভাবে বন্ধ
করে দেওয়া হয় ভূগর্ভস্থ ট্রেন চলাচল।
কাশ্মীরে টেলিসেবা বিপর্যস্ত হয়ে
পড়েছে। ভূমিকম্পের পর প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি এক টুইট বার্তায় বলেন,
‘আফগানিস্তান-পাকিস্তানে বড়সড়
ভূমিকম্পের কথা শুনেছি। ভারতেও এর
প্রভাব পড়েছে। প্রার্থনা করি সবাই
সুরক্ষিত আছেন। আফগানিস্তান ও
পাকিস্তানসহ যেখানে যেখানে সাহায্যের
প্রয়োজন তার জন্যও প্রস্তুত আমরা।’
একইভাবে কম্পন অনুভূত হয়েছে
বাংলাদেশেও। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে
পাঠানো এক বিবৃতি জানানো হয়,
বাংলাদেশ সময় ৩টা ৯ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে
ভূমিকম্প অনুভূত হয়। নেপালে ভয়াবহ
ভূমিকম্পের প্রায় ছয় মাস পর আফগানিস্তান-
পাকিস্তানে এ ভূমিকম্প হলো। গত এপ্রিল
মাসে নেপালে ওই ভূমিকম্পে অন্তত ৯
হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার
ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট ও ইউরেশীয়
টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে
এবারের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। নেপালের
ওই ভূমিকম্পসহ এই অঞ্চলের বহু ভূমিকম্পের
কারণ এই সংঘাত। সূত্র : বিবিসি, এএফপি, দ্য
নিউ ইয়র্ক টাইমস।
বসতবাড়ি। সেই ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে দেখছেন এক
আফগান নাগরিক, যদি কিছু প্রয়োজনীয়
জিনিসপত্র অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
আফগানিস্তানের পানশির উপত্যকার
রামানখেল গ্রাম থেকে গতকাল তোলা ছবি।
ছবি : এএফপি
আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল
দক্ষিণ এশিয়া। গতকাল সোমবার দুপুরে ৭
দশমিক ৫ মাত্রার এই ভূমিকম্পে
পাকিস্তানে অন্তত ২০০ এবং
আফগানিস্তানে প্রায় ৩৩ জন নিহত হয়েছে
বলে খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে
হাজারেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে
আফগানিস্তানে আতঙ্কে স্কুল থেকে বের
হতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২
ছাত্রীর। তীব্র কম্পনে
টেলিযোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে
পড়ায় হতাহতদের সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য
পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। মৃতের সংখ্যা
আরো বাড়তে পারে। ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে
বাংলাদেশ ও ভারতেও।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তরের
(ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময়
বিকেল ৩টা ৯ মিনিটে অনুভূত এই ভূমিকম্পের
উৎপত্তিস্থল ছিল আফগানিস্তানের জারম
থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-
পশ্চিমে হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে, ভূপৃষ্ঠের
২১২ কিলোমিটার গভীরে। ওই এলাকার
কাছেই পাকিস্তান ও তাজিকিস্তানের
সীমান্ত।
প্রায় পুরো পাকিস্তানে গতকাল ভূমিকম্প
অনুভূত হয়। তবে উত্তরাঞ্চলে এর তীব্রতা
ছিল মারাত্মক। মাত্র ৪০ সেকেন্ডের এই
ভূমিকম্পে পার্বত্য এলাকায় ভবনধস, ভূমিধস
ও পদদলিত হয়ে ২০০ জনের মৃত্যুর খবর জানা
গেছে। তবে কর্মকর্তাদের আশঙ্কা মৃতের
সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। প্রত্যন্ত
পার্বত্য এলাকায় মাত্র এক মিনিটের
ভূমিকম্পই যে তাণ্ডব ঘটিয়ে গেছে, তার
পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতে কয়েক দিন লেগে
যাবে। ভূমিকম্পের ৪০ মিনিট পর একই
এলাকায় ৪ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি
ভূকম্পন অনুভূত হয়।
ইতিমধ্যে ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনার জন্য
সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চিত্রল প্রদেশের পুলিশপ্রধান শাহজাহান
জানান, সেখানে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু
হয়েছে। তিনি বলেন, ‘টেলিফোন যোগাযোগ
বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় আমরা যোগাযোগ
করতে পারছি না। নিহতের সংখ্যা আরো
বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।’ উত্তর-
পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারেও একজন
নিহত হয়েছে। সেখানে অন্তত দেড় শ মানুষ
আহত অবস্থায় লেডি রিডিং হাসপাতালে
ভর্তি হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা
জানিয়েছেন। জেলার মেয়র আরবাব মুহাম্মদ
আসিম বলেন, শহরের বহু বাড়ি ও ভবন ধসে
পড়েছে। এখনো বহু লোক চাপা পড়ে আছে।
বাদাখশন প্রদেশের গভর্নর সালাহ
উবাইদুল্লাহ আবিদ জানান, তাঁর এলাকায়
অন্তত ৪০০ ঘরবাড়ি ধসে গেছে।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ
ব্যবস্থাপনা দপ্তরের প্রাদেশিক প্রধান
আবদুল রাজ্জাক জিনদার বলেন, ভূমিকম্পের
সময় দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় তালোকান
শহরের একটি স্কুল থেকে হুড়োহুড়ি করে বের
হতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ১২ ছাত্রী প্রাণ
হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৪০ জন। আর
পূর্বাঞ্চলীয় নানগরহার প্রদেশে নিহত
হয়েছে আরো পাঁচজন; আহত হয়েছে বহু মানুষ।
ভূমিকম্পে আফগানিস্তানের রাজধানী
কাবুল ভয়ানকভাবে কেঁপে উঠলেও সেখানে
তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর
পাওয়া যায়নি। তবে আতঙ্কে বহু মানুষ
বাড়িঘর ও অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায়
নেমে আসে। ভূমিকম্প-পরবর্তী করণীয়
নির্ধারণে দেশটির প্রধান নির্বাহী
আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ বিকেলে জরুরি
বৈঠকে বসেন। ভূমিকম্প-পরবর্তী ভূকম্পন
অনুভূত হতে পারে বলে সতর্ক করে তিনি
জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে
আফগানিস্তানে অনুভূত সবচেয়ে তীব্র
ভূমিকম্প এটি।
ভারতেও গতকাল তীব্র কম্পন অনুভূত হয়।
রাজধানী দিল্লিতে কম্পন অনুভূত হতেই
আতঙ্কে ঘরবাড়ি, অফিস ছেড়ে রাস্তায়
বেরিয়ে আসে লোকজন। সাময়িকভাবে বন্ধ
করে দেওয়া হয় ভূগর্ভস্থ ট্রেন চলাচল।
কাশ্মীরে টেলিসেবা বিপর্যস্ত হয়ে
পড়েছে। ভূমিকম্পের পর প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি এক টুইট বার্তায় বলেন,
‘আফগানিস্তান-পাকিস্তানে বড়সড়
ভূমিকম্পের কথা শুনেছি। ভারতেও এর
প্রভাব পড়েছে। প্রার্থনা করি সবাই
সুরক্ষিত আছেন। আফগানিস্তান ও
পাকিস্তানসহ যেখানে যেখানে সাহায্যের
প্রয়োজন তার জন্যও প্রস্তুত আমরা।’
একইভাবে কম্পন অনুভূত হয়েছে
বাংলাদেশেও। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে
পাঠানো এক বিবৃতি জানানো হয়,
বাংলাদেশ সময় ৩টা ৯ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে
ভূমিকম্প অনুভূত হয়। নেপালে ভয়াবহ
ভূমিকম্পের প্রায় ছয় মাস পর আফগানিস্তান-
পাকিস্তানে এ ভূমিকম্প হলো। গত এপ্রিল
মাসে নেপালে ওই ভূমিকম্পে অন্তত ৯
হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার
ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট ও ইউরেশীয়
টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে
এবারের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। নেপালের
ওই ভূমিকম্পসহ এই অঞ্চলের বহু ভূমিকম্পের
কারণ এই সংঘাত। সূত্র : বিবিসি, এএফপি, দ্য
নিউ ইয়র্ক টাইমস।