আন্তর্জাতিক

মানহানির মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেলেন না রাহুল গান্ধী।

‘মোদি’ পদবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেলেন না ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মামলায় গুজরাটের সুরাটের নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা স্থগিতে যে আবেদন রাহুল করেছিলেন, তা আজ বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছেন দায়রা আদালত। সুরাটের দায়রা আদালত রাহুলের আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি লোকসভার সদস্যপদ ফেরত পেতে পারতেন। এখন তাঁকে গুজরাট হাইকোর্টে যেতে হবে। সেখানে বিফল হলে তাঁর জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দরজা খোলা থাকবে। ‘মোদি’ পদবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে চার বছর আগে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়। এই মামলায় গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রায় দেন। রায়ে রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরদিন (২৪ মার্চ) রাহুলের লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হয়। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুরাটের দায়রা আদালতে যান রাহুল। তিনি সাজা স্থগিতের আবেদন জানান। আবেদনে তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায় সংগতিপূর্ণ নয়। তিনি ন্যায়বিচার পাননি। তাঁকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়েছে। রাহুলের আইনজীবী বলেছিলেন, বাদী এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে মামলা করেছেন। রাহুল ভাষণ দিয়েছিলেন কর্ণাটকে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয় গুজরাটে। আজ দায়রা আদালতের রায়ের পর কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ একটি টুইট করেন। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী, এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের ক্ষেত্রে যেসব উপায় বাকি থাকছে, কংগ্রেস তা করবে। বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা রায়ের পর বলেন, সত্যের জয় হলো। ‘পরিবার’ (গান্ধী) এবার অনগ্রসর শ্রেণির কাছে ক্ষমা চাইবে কি না, তা জানতে চান তিনি। ‘মোদি’ পদবিধারীরা কোনো কোনো রাজ্যে অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত। রাহুলের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপি প্রচার করছে যে কংগ্রেস অনগ্রসরদের অসম্মান করেছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলার জেলায় নির্বাচনী জনসভায় রাহুল ‘মোদি’ পদবি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। পলাতক নীরব মোদি ও ললিত মোদিদের নাম করে রাহুল জানতে চেয়েছিলেন, চোরদের পদবি কেন ‘মোদি’ হয়? সে সময় রাফাল চুক্তিতে অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের স্লোগান ছিল, ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’। কোলারের জনসভার মন্তব্যের পর গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি সুরাটের নিম্ন আদালতে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। এই মামলাতেই রাহুল দোষী সাব্যস্ত হন। পরে তিনি লোকসভার সদস্যপদ হারান। আইন অনুযায়ী, লোকসভা, রাজ্যসভা, বিধানসভা ও বিধান পরিষদের কোনো সদস্য কোনো ফৌজদারি মামলায় দুই বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তাঁর পদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে। সুরাটের দায়রা আদালত রাহুলের সাজা স্থগিত না করায় এই কংগ্রেস নেতাকে এখন উচ্চতর আদালতে যেতে হবে।   এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস