আন্তর্জাতিক

পুতিনের জন্য বড় ধাক্কা মস্কো হামলা

ভ্লাদিমির পুতিন তার পঞ্চম মেয়াদে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ না যেতেই গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক প্রাণঘাতী হামলার শিকার হয়েছে মস্কো। শুক্রবার শহরের সুবিশাল ক্রোকাস সিটি কনসার্ট হল ও শপিং কমপ্লেক্সে ভয়াবহ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। হামলায় প্রায় দেড়শ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে হামলার জন্য সন্দেহভাজন চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুতিনের দাবি, গ্রেপ্তার চারজন ইউক্রেনে পালানোর পরিকল্পনা করছিল। তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের যোগাযোগ রয়েছে। তবে শুক্রবারের হামলায় জড়িত থাকার দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে কিয়েভ। মস্কো এই অভিযোগকে আক্রমণ বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলেও সতর্ক করেছে কিয়েভ। তবে আরও হামলার আশঙ্কা থাকায় রাশিয়াজুড়ে প্রধান পরিবহন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাবলিক কনসার্ট ও ক্রীড়া ইভেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতির পর স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা, যে উদ্দেশ্যে পুতিনকে রাশিয়ানরা ভোট দিয়েছিলেন তা ব্যর্থ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাশিয়ার মতো দেশের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার নিশ্চয়তা দিতে বছরের পর বছর ধরে ক্রেমলিনের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিকেই যোগ্য নেতা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু রাশিয়া আজ পুতিনের ২৪ বছরের ক্ষমতার সবচেয়ে অনিরাপদ ও অস্থির সময় পার করছে বলে মনে হচ্ছে।  ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বছর চলছে। এতে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে রাশিয়ানদের। সামরিক বাহিনী হতাহতের পরিসংখ্যান প্রকাশ না করলেও মার্কিন তথ্য বলেছে, আনুমানিক ৩ লাখের বেশি রুশ হতাহত হয়েছেন। গত বছর নিযুক্ত অনেক সৈন্যকে এখনো ফ্রন্টলাইন থেকেই সরানো হয়নি। যুদ্ধ যতই এগিয়ে যাচ্ছে, রাশিয়ানদের মধ্যে ভয় বাড়ছে যে নৃশংসতা আরও বাড়তে থাকবে। আরও অনেককে বলি হতে হবে।

ক্রেমলিনবিরোধী ইউক্রেন ভিত্তিক রুশ জঙ্গিগোষ্ঠী ইউক্রেনীয় ড্রোন ও সীমান্ত ক্রস হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইউক্রেনীয় ফ্রন্টে রুশ কমান্ডারদের দুর্বল কর্মক্ষমতা ও অস্ত্র সম্পূর্ণরূপে অপ্রত্যাশিত পরিবেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে সামরিক ব্লগার ও সামরিক কট্টরপন্থীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ভিন্নমত দেখা দিচ্ছে। গত বছর ভাড়াটে গোষ্ঠী ভাগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের বিদ্রোহ ছিল তারই প্রমাণ। ভাগনারের বিদ্রোহ রাশিয়ার ইতিহাসে অন্যতম মর্মান্তিক ও অপমানজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। তবে ঘটনার বেশ কিছুদিন পর নানা নাটকীয়তা শেষে রহস্যময় বিমান দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এতে করে প্রিগোশিন নামক হুমকি পুতিনের পথ থেকে চিরস্থায়ীভাবে সরে গেলেও অন্যান্য অসন্তুষ্ট কট্টরপন্থীদের আবির্ভাব ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।


 এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস