আন্তর্জাতিক

মার্ক কার্নি: যুক্তরাজ্য ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ করায় 'প্রভাবিত হয়নি' কানাডীয়রা

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ জানানোয় কানাডীয়রা "প্রভাবিত হননি"। সম্প্রতি স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী কার্নি বলেন, ট্রাম্প যখন বারবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার মন্তব্য করছিলেন, সেই সময় যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে এমন আমন্ত্রণে কানাডীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কার্নি বলেন, "সোজা কথা, [কানাডীয়রা] এতে মোটেই প্রভাবিত হননি... পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা ছিল অনুপযুক্ত। আমরা তখন সার্বভৌমত্ব নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিচ্ছিলাম।" যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ট্রাম্পকে সফরের আমন্ত্রণ জানান। তবে এই আমন্ত্রণ উপযুক্ত ছিল কিনা—এ প্রশ্নে কার্নি বলেন, "এটা যুক্তরাজ্য সরকার ও বাকিংহাম প্যালেসের সিদ্ধান্ত। কূটনীতি তাদের কাজ।" বিবিসি এই বিষয়ে কার্নি ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কাছে মন্তব্য চাইলেও তারা এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বাকিংহাম প্যালেসও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এই ঘটনার মধ্যেই চলতি মাসের শেষ দিকে রাজা চার্লস তৃতীয় এবং রানি ক্যামিলার কানাডা সফরের প্রস্তুতি চলছে। এই সফরে রাজা চার্লস কানাডার পার্লামেন্ট উদ্বোধনে অংশ নেবেন এবং "থ্রোন স্পিচ" পাঠ করবেন—যা সাধারণত গভর্নর জেনারেলের দায়িত্ব। এই ঐতিহাসিক ঘটনা সর্বশেষ ঘটেছিল ১৯৭৭ সালে, যখন রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয় দ্বিতীয়বারের মতো থ্রোন স্পিচ পাঠ করেছিলেন। তার আগেরবার ছিল ১৯৫৭ সালে। কার্নি বলেন, "এই আমন্ত্রণ কাকতালীয় নয়। এটি আমাদের সার্বভৌমত্বের reaffirmation – পুনর্ব্যক্তি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যে এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে।" হোয়াইট হাউসে ফেরার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিকবার কানাডার সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তিনি কানাডা-মার্কিন সীমান্তকে "কৃত্রিমভাবে আঁকা রেখা" বলেও উল্লেখ করেছেন। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী কার্নি কড়া ভাষায় বলেছেন, "কানাডা বিক্রির জন্য নয়, কখনোই নয়।" গত সপ্তাহে তিনি ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে একটি নতুন বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে তিনি বলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে শুধুমাত্র "যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা প্রাপ্য সম্মান না পাই, ততক্ষণ পর্যন্ত" বৈঠক চালিয়ে যাবেন। সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, ট্রাম্প এখন ৫১তম অঙ্গরাজ্য বিষয়ক বক্তব্যে কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন। "আগে এটা ছিল তার প্রত্যাশা, এখন সেটা হয়েছে তার আকাঙ্ক্ষা। তবে তিনি বুঝেছেন যে এটা বাস্তবে ঘটবে না।"

এলএবাংলাটাইমস/ওএম