লস এঞ্জেলেস

লস এঞ্জেলেসে মহাধুমধামে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

পিঠা বাংলাদেশের এক ঐতিহ্যবাহী খাবার। ভোজনরসিক ছাড়াও আপামর জনসাধারণ নানা জাতের পিঠার নাম শোনলে নড়েচড়ে বসেন। বিশেষ করে শীতকালে গ্রামবাংলায় রকমারি পিঠাপুলির ধুম পড়ে। গ্রামের পাশাপাশি শহরেও থাকে পিঠার আমেজ। তেমনি বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরাও শীত মৌসুমে শামিল হন পিঠার স্বাদ নিতে। দেশীয় ঐতিহ্যের আলোকে বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা আয়োজন করেন পিঠা উৎসবের।

তেমনি একটি আয়োজন হয়ে গেল লস এঞ্জেলেসে। গত শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রর পশ্চিম উপকূল থেকে প্রচরিত জনপ্রিয় বাংলা নিউজপোর্টাল এলএ বাংলা টাইমসের পৃষ্ঠপোষকতায় ও লিটিল বাংলাদেশ অব আমেরিকা (ইউসএ)-এর উদ্যোগে স্থানীয় শ্যাটো রিক্রিয়েশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় এই পিঠা উৎসব। উৎসবকে ঘিরে সেখানে বসেছিল প্রবাসীদের মিলনমেলা।
লস এঞ্জেলেস শহরের প্রবাসী বাংলাদেশীদের মূল কেন্দ্রস্থল শ্যাটো রিক্রিয়েশন সেন্টার মিলনায়তনে প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবারগুলোর উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। লস এঞ্জেলেস ও আশেপাশের শহর ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকেও প্রচুর প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবার পরিজন নিয়ে পিঠা উৎসবে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বয়সী প্রবাসী বাংলাদেশীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল স্যাটো রিক্রিয়েশন সেন্টার মিলনায়তনে। দেশীয় নানা ধরনের  বাহারী পিঠাপুলির গন্ধ আর সুবাসে উৎসবস্থল পরিণত হয়েছিল আমেরিকার মাটিতে যেন একটুকরো বাংলাদেশে।

লস এঞ্জেলেস শহরের জনপ্রিয় উপস্থাপক মিঠুন চৌধুরী ও রৌশনী আলম পিঠা উৎসবের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সব পিঠার প্রদর্শনী ছিলো এ উৎসবে।

বিভিন্ন ধরণের বাহারি পিঠার মধ্যে ছিলো টাটকা চালের গুড়ি দিয়ে তৈরি করা ভাঁপা পিঠা, পাটিসাপটা, রসে ভেজানো চিতই পিঠা, পায়েশ-সহ নানা ধরনের মুখরোচক পিঠার সমহার। প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবারের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণে দেশীয় অপরূপ সাজে সজ্জিত পিঠা উৎসব হয়ে ওঠে বর্নাঢ্য মিলনমেলায়। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবার তাদের নিজের হাতে বাডীতে তৈরী করা নানা রকমের বাহারী পিঠা তৈরী করে নিয়ে আসেন।


পিঠা উৎসবে উল্লেখযোগ্য আকর্শন ছিলো বাংলাদেশের নানা স্বাদের নানা নামের বাহারী পিঠার এক বিশেষ পিঠা প্রতিযোগিতার। প্রতিযোগিতায় সংগৃহীত পিঠাগুলো বিচারকমন্ডলীর রায়ে সেরা পিঠার জন্য পুরস্কৃত করা হয় ।

পিঠা উৎসবে ছিলো নতুন প্রজন্ম প্রবাসী বাংলাদেশী শিশু কিশোরদের নিয়ে এক বিশেষ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের উল্ল্যেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিলো, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও  শিশুদের দ্বারা পরিচালিত বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বিজয়ী শিশু প্রতিযোগিদের বিশেষ সনদপত্র হাতে তুলে দেয়া হয়। আর এ পুরস্কারগুলো হাতে তুলে দেন লস এন্জেলেস বাংলাদেশ কনসুলেট অফিসের নবনিযুক্ত বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল তারেক মোহাম্মদের সহধর্মিনী মিসেস তারেক ।


পিঠা উৎসব অনুষ্ঠানে এক বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। লস এন্জেলেস শহরের বেশ কিছু জনপ্রিয় প্রবাসী কন্ঠশিল্পী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন। আগত প্রবাসী বাংলাদেশীরা পিঠা উৎসব আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।