লস এঞ্জেলেস

লস এঞ্জেলেসের করোনা সংক্রমণ যে কারণে চীন থেকে ভিন্ন


প্রাণঘাতী কভিড-১৯ (করোনাভাইরাসের) প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে। বিশ্বের ২০৯টি দেশ এখন ভুগছে করোনাভাইরাস আতঙ্কে। ৮ই ডিসেম্বর, ২০১৯ চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে বসবাসকারী লোকদের মধ্যে হঠাৎ করে ছড়িয়ে পড়ে ব্যতিক্রমী এক ধরনের নিউমোনিয়া। 


এরপরের ঘটনা সবার জানা। সাধারণ উপসর্গের মাধ্যমে দেখা দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে কেড়ে নিচ্ছে একের পর এক প্রাণ। কোন বিরতি নেই, থামছে না এক পলকের জন্য। এ যেন এক সর্বনাশা।  বিশ্ব মানবতার শত্রু।  

কিন্তু অবাক করার বিষয় হল পৃথিবীর সকল দেশে এর আক্রমণ কিন্তু একই রকমের নয়। একেক দেশে একেক রকম বয়সের মানুষের উপর তা শনাক্ত করা হচ্ছে। নতুন আবিষ্কৃত এই ভাইরাসটি নিয়ে করা বিভিন্ন দেশ, বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের করা গবেষণা বা সমীক্ষা তাই বলে। আমাদের এলএবাংলা টাইমসের আজকের আয়োজন করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীন ও লস এঞ্জেলেসে ভাইরাসটির সংক্রমণের পার্থক্য বিচার নিয়ে।    

চীন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি নিয়ে এ পর্যন্ত মোট দুটি গবেষণা করে। একটি গবেষণা করা হয় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও চীনের সম্মিলিত উদ্যোগে। ৫৫ হাজার ৯২৪ জন সনাক্তকারী করোনা রোগীর বিশাল ডাটা নিয়ে করা এই গবেষণাটি। 

অন্য গবেষণাটি করে চীন নিজেদের উদ্যোগে। এই গবেষণাটি করেন দেশটির রোগতত্ত্ব ও রোগনিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইন্সটিটিউট। দ্বিতীয় এই গবেষণাটি করা হয় ৭২ হাজার ৩১৪ জন রোগী নিয়ে। 

এই বিশাল নমুনায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী যেমন ছিল। তেমনি ছিল আক্রান্ত সন্দেহে আনা রোগীও। চলতি বৎসরের ১১ই ফেব্রুয়ারি ‘চাইনিজ জার্নাল অব এপিডেমিওলজি’ এই গবেষণা কাজটি প্রকাশ করা হয়। নিচে গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল তুলেধরা হলঃ

৮০ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার ২১.৯ শতাংশ বলে প্রকাশ করা হয়। একমাত্র এই বয়সের লোকদের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার বলা হয় ১৪.৮ শতাংশ। ৭০ থেকে ৭৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ হার বলা হয় ৮ শতাংশ। 


আর ৬০ থেকে ৬৯ পর্যন্ত এই সংক্রমণ হার ৩.৬ শতাংশ। ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে তা ১.৩ শতাংশ। ৪০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের সংক্রমণ হার বলা হয় ০.৪ শতাংশ। ৩০ থেকে ৩৯ পর্যন্ত এই সংক্রমণের কথা বলা হয় ০.২ শতাংশ। ২৯ থেকে ১০ পর্যন্ত সংক্রমণ হার ছিল ০.২ শতাংশ। 

ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের নিয়ে বয়সের ৪টি ক্যাটাগরি করেন লস এঞ্জেলেস স্বাস্থ্য বিভাগ। নিচে এই বয়সের শ্রেণিবিভাগ ও সংক্রমণের সংখ্যা তুলে ধরা হয়। 

০-১৭ বৎসর বয়সঃ এই বয়সটা শিশু হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। কাউন্টিতে এখনো পর্যন্ত আক্রান্ত হন ৮০ জন শিশু। 

১৮-৪০ পর্যন্ত বয়সঃ কাউন্টি স্বাস্থ্য বিভাগের বয়সের এই সীমাকে আমরা তরুণ বলতে পারি। এখনো পর্যন্ত এই বয়স সীমায় আক্রান্ত হয় ২ হাজার ৪০৯ জন। 

৪১-৬৫ পর্যন্ত বয়সঃ এই বয়স সীমা নিয়ে একটু বিতর্ক হতে পারে। কেউ বলতে পারেন বৃদ্ধ। আবার কেউ বলতে পারেন মধ্যবয়স্ক। কেউ কেউ এই দুইটার মাঝামাঝি বলতে পারেন। কিন্তু যেহেতু ৬৫টির উপরে আরেকটি বয়সসীমা রয়েছে তাই এই বিবেচনায় প্রতিবেদক এটাকে মধ্যবয়স্কই হিসেবেই ধরে। যাইহোক, এই বয়সের এই সীমায় আক্রান্ত হন সবচেয়ে বেশি লোক। তাদের আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ১৭০ জন। 

৬৫ বৎসরের উপরেঃ ৬৫ বৎসরের উপরে আক্রান্ত বৃদ্ধের সংখ্যা ১ হাজার ৪৯৯ জন। এবার আপনি নিজেই মিলাতে পারবেন পার্থক্যগুলো। 

/এলএ বাংলা টাইমস/