লস এঞ্জেলেস

কৃষ্ণাঙ্গরা কি মানুষ না!


রাজনীতিতে অনেক সময় ভালো মন্দ বিবেচনা করা হয় না। মানুষের জন্য মানুষের কল্যাণের জন্য তৈরি হওয়া এই রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনেক সময় মানুষের অকল্যাণ বয়ে আনে। ভোটের রাজনীতি অনেক সময় মানুষের মধ্যে বিবেধ তৈরি করে দেয়। অবশ্য এই রাজনীতিকে, গণতন্ত্রকে কিভাবে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানো যায়, মানুষের এই প্রচেষ্টাও নিরন্তর। কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র যা করছে তার দেশের কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের সাথে তাতে করে অনেক বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক বিশ্লেসক শঙ্কিত। করোনা সংকটের শুরু থেকেই কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুসিত এলাকাগুলোতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল গণমাধ্যমে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল অনেক জায়গায় শুধু কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয়ের কারণেই ঠিকমতো স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছিল না। এখন অনেক জায়গায় কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যা ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। সবকিছু দেখে শুধু এইটুকুই মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে কি কৃষ্ণাঙ্গরা মানুষ হিসেবে স্বীকৃত না? তারা কি মানুষ না? তাদের কি মৌলিক মানবাধিকার নেই? তাদের কি বিক্ষোভ জানানোর মতো রাজনৈতিক অধিকার নেই?


এসব প্রশ্ন উঠেছে কৃষ্ণাঙ্গদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও থেকে দেখা যাচ্ছে অনেক জায়গায় পুলিশ আন্দোলন কারীদের উপর চড়াও হচ্ছেন। তাদেরকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করছেন। পুলিশের নির্যাতনে বেশ কয়েকজন মারা গেছে। গ্রেফতার হয়েছে হাজারের বেশি লোক। এমন হবে কেন? রাজনীতিতে সকল কিছুরই একটা রাজনৈতিক সমাধান আছে। ট্রাম্প কেন আন্দোলনকারীদের সাথে কোন রাজনৈতিক সমাধানে যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র যদি তার নাগরিকদের সাথে এই রকম আচরণ করে তাহলে, সারা বিশ্বে তার ভাবমূর্তি কোথায় দাঁড়ায়। এমন গণতান্ত্রিক মডেলই কি যুক্তরাষ্ট্র তাইলে সকল দেশকে বিলিয়ে দিবে? আজ বা কাল থেকে বিশ্বের অনেক দেশ তার সংখ্যালঘুদের দমনের জন্য ট্রাম্পের এমন মডেল অনুসরণ করবে। তখন সারা বিশ্ব জুড়ে বিরল হয়ে যাবে সংখ্যালঘুরা। বিলীন হয়ে যাবে বিশ্বমানবতা। থমকে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচার করা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার।

কিন্তু এই যুক্তরাষ্ট্রেরই এক প্রেসিডেন্ট বলেছিল, গণতন্ত্র হল জনগণের, জনগণের দ্বারা ও জনগণের জন্য পরিচালিত সরকার ব্যবস্থা। অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস যুক্তরাষ্ট্রেই আজ গণতন্ত্র বিপন্ন। বিপন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। বিপন্ন মানবাধিকার। বিপন্ন তাদের সংখ্যালঘু কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের অধিকার। যুক্তরাষ্ট্রকে সবসময়ই মাল্টি কালচারাল বলা চলে। কারণ দেশটিতে বহু সাংস্কৃতিক মানুষের বাস। কিন্তু নাগরিক বৈচিত্র্য থাকার পরও কেন কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে অনেকেই চুপ? কেন সবাই কৃষ্ণাঙ্গদের মানুষ ভেবে তাদের পাশে সহমর্মিতা দেখাচ্ছে না? তবে কি সত্যিই কৃষ্ণাঙ্গরা মানুষ না!  

এলএ বাংলা টাইমস/এমবি