লস এঞ্জেলেস

তাহলে কি ট্রাম্পকে ডুবাচ্ছে করোনা আর বর্ণবাদ


নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করা, নির্বাচনী পরিবেশ, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রভাব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। করোনা পরবর্তী ২০২০ সালের এই মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল সারা বিশ্বের ওপর প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। অবশ্য করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে কিনা সেটা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় তৈরি হয়েছে। এই সংশয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দিল নতুন করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ও আন্দোলন। কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। চলছে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও বিভিন্ন দেশে। আর এতে করে পরিবর্তিত হতে পারে সামনের নির্বাচনের সমীকরণ। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এসব নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে।  


তবে সংশয় যাই হোক। এখনো পর্যন্ত দেশটিতে ১ লক্ষের বেশি মার্কিন নাগরিক মারা গেছেন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে। আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লক্ষের বেশি। আর আর্থনীতিক মন্দা তো রয়েছেই। করোনা শেষে মার্কিন অর্থনীতি ভেঙে পড়বে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। বিশ্লেষকদের ধারণা এর প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আর এসব নিয়ে নতুন সব সমীকরণ তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলো বলছে এতে করে ট্রাম্পের ভোট কম করে ২০ শতাংশ কমে গেছে। যে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা করোনার আগে ট্রাম্প আসন্ন নির্বাচনে ৫৫ শতাংশ ভোট পাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। এখন তারাই বলছে এখন তা ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে।  

নির্বাচনের পূর্বাভাস দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক চার্লি কুক বলেন, আপনি এই ভবিষ্যদ্বাণীটি সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন যে এটি হবে আমাদের জীবনের সময়কালের সবচেয়ে কৃপণতম, নির্লিপ্ত এবং সবচেয়ে আকাঙ্খিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার বহুল পঠিত নির্বাচন নিউজলেটারে 'কুক পলিটিকাল রিপোর্টে' লিখেন, এখন ভোটারদের কাছে কেবল দুটি জিনিসই গুরুত্বপূর্ণ। করোনভাইরাস এবং অর্থনীতি। এই দুটি জিনিসই এখন আরো ভাল হওয়ার চেয়ে আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। নির্বাচনের আগে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে অর্থনীতিকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করা এখন ট্রাম্প সরকারের জন্য বেশ কঠিন।'

তার মতে, এই বছর পর্যন্ত ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা দ্বিগুণ ছিল। কিন্তু প্রাণঘাতী  করোনাভাইরাস এসে সব এলোমেলো করে দিয়েছে। প্রথমে ট্রাম্পের একটি শক্ত ঘাঁটি বা ভোট ব্যাংক ছিল যেটা এখনো আমার কাছে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে মনে হয়। দ্বিতীয়ত, তাকে শক্তিশালী অর্থনীতি চালিয়ে যাওয়ার দরকার ছিল। তাকে সঠিকভাবে ভোটারদের উপর প্রভাব ধরে রাখার দরকার ছিল। এগুলো তাকে পুনরায় নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতো। তবে কুক বলেছিলেন যে, এখন নির্বাচন কাছাকাছি চলে এসেছে। এখন অর্থনৈতিক ধাক্কা বাতাস কোন দিকে নেয় বলা মুশকিল। তবে এটি সম্ভবত তাঁর পিছনে নয় বরং সামনে ঝাপটা দেবে। অর্থনীতিকে ঠিক করেতে না পারলে ট্রাম্পকে আবারো পপুলার ভোটে হারতে হতে পারে। প্রেসেডিন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য তাঁকে সম্ভবত এবারো ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ওপর নির্ভর করতে হবে।

এলএ বাংলা টাইমস/এমবি